৪ কোটি টাকার স্বর্ণ নিয়ে ব্যবসায়ী উধাও
চান্দিনা (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৯ অক্টোবর ২০২৫, ১২:৪৬ পিএম
উধাও হয়ে যাওয়া ব্যবসায়ী পর্শীয়া জুয়েলার্সের মালিক নারায়ণ কর্মকার প্রদীপ। ছবি: যুগান্তর
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
কুমিল্লার চান্দিনায় ক্রেতা ও বন্ধক দাতাদের কোটি টাকার স্বর্ণ এবং গচ্ছিত টাকা নিয়ে উধাও হয়ে গেছেন একজন জুয়েলার্সের মালিক। গত ১০ দিন ধরে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে চান্দিনা উপজেলার জোয়াগ ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর নতুন বাজারে।
উধাও হয়ে যাওয়া ব্যবসায়ী ওই বাজারের পর্শীয়া জুয়েলার্সের মালিক নারায়ণ কর্মকার (প্রদীপ)। তিনি ভারতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।
সম্প্রতি কয়েক মাসে স্বর্ণের দাম বৃদ্ধি পেয়ে প্রতি ভরি ২ লাখ টাকার বেশি হওয়ায় তিনি লোভ সামলাতে পারেননি বলেও অভিযোগ উঠেছে। ওই ব্যবসায়ী সব মিলিয়ে ৪ কোটিরও বেশি টাকা এবং স্বর্ণ নিয়ে পালিয়ে গেছেন বলে ভুক্তভোগীরা দাবি করেন।
ভুক্তভোগী কৈলাইন গ্রামের ছফিউল্লাহর ছেলে শরীফ জানান, নারায়ণ কর্মকার (প্রদীপ) এই এলাকারই বাসিন্দা। তিনি লক্ষ্মীপুর নতুন বাজার সংলগ্ন লক্ষ্মীপুর গ্রামের মনোরঞ্জন কর্মকারের (মনা খলিফা) ছেলে। প্রায় ২০ বছর ধরে এই বাজারে জুয়েলারি ব্যবসা করে আসছে। তিনি জিম্মাদার হয়ে ওই ব্যবসায়ীকে ৪ লাখ টাকা ঋণ তুলে দেন। এছাড়া তার স্ত্রীর ২ ভরি স্বর্ণও ওই ব্যবসায়ীর নিকট গচ্ছিত ছিলো। দৈনিক ৬০০ টাকা করে সমিতি করেছিলেন। গত ২ বছরের টাকা তিনি নেননি। তার মোট ১২ লাখ টাকা নিয়ে পালিয়েছেন ওই ব্যবসায়ী।
সরেজমিনে জোয়াগ ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর নতুন বাজারে গিয়ে দেখা যায় পর্শীয়া জুয়েলার্সটি বন্ধ, শাটার ও কলাপসিবল গেইট তালাবদ্ধ। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ১০ দিন ধরে ব্যবসায়ী গা ঢাকা দিয়েছেন। তার গ্রামের বাড়ি লক্ষ্মীপুর নতুন বাজার সংলগ্ন লক্ষ্মীপুর গ্রামে। কিন্তু বাড়িতে গিয়ে কাউকেই পাওয়া যায়নি। তবে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন- ওই ব্যবসায়ীর স্ত্রী, ১ ছেলে ও ১ মেয়ে এখনো তার শ্বশুরবাড়ি পার্শ্ববর্তী ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলার গোকর্ণঘাট এলাকায় আশ্রয় নিয়েছে। তাদের মাধ্যমে ওই ব্যবসায়ীকে খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
ভোক্তভোগী পার্শ্ববর্তী কচুয়া উপজেলার তুলপাই গ্রামের বাসিন্দা এবং ওই বাজারের ব্যবসায়ী বরুণ সাহা জানান, তিনিও দৈনিক সমিতির সদস্য। প্রতিদিন ৭৫০ টাকা করে জমা দিতেন। তার ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা ওই ব্যবসায়ী আত্মসাৎ করেছেন। তিনি আরও জানান, আমরা ৫১ জন সদস্য দৈনিক সমিতি করেছিলাম। প্রতি বৈশাখ মাসে শুরু হতো, চৈত্র মাসের শেষ দিন সমিতির টাকা জমাকারীদের প্রদান করা হতো। এসব সমিতির টাকা তার নিকট গচ্ছিত থাকতো। সবার টাকা নিয়ে সে পালিয়ে গেছে।
একইভাবে ব্যবসায়ী বিল্লাল হোসেনের ৩ লাখ ৩০ হাজার, আবুল হোসেন এর ৩ লাখ ৫০ হাজার, এরশাদ আলীর ৫ লাখ, বেলাল গাজীর ১ লাখ ৪২ হাজারসহ অর্ধশতাধিক ব্যবসায়ী এবং ক্রেতা ও বন্ধকদাতার স্বর্ণ নিয়ে পালিয়ে গেছে ওই ব্যবসায়ী।
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত ব্যবসায়ী নারায়ণ কর্মকারকে ফোন করলে বন্ধ পাওয়া যায়।
এ ব্যাপারে চান্দিনা থানার ওসি জাবেদ উল ইসলাম বলেন- ‘এ বিষয়ে কেউ এখনো আমাদেরকে জানায়নি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’

-6901b5d38ca59.jpg)