Logo
Logo
×

সারাদেশ

সাবেক সচিবের গাড়িচালকের পুকুরে যেতে ৩১ লাখ টাকার সরকারি সেতু

Icon

কে এম রায়হান কবীর, শরীয়তপুর

প্রকাশ: ৩০ অক্টোবর ২০২৫, ০৩:১৬ পিএম

সাবেক সচিবের গাড়িচালকের পুকুরে যেতে ৩১ লাখ টাকার সরকারি সেতু

সাবেক সচিবের গাড়িচালকের পুকুরে প্রবেশের জন্য সরকারি ৩১ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতু। ছবি: সংগৃহীত

আশপাশে ঘনবসতি না থাকা সত্ত্বেও খালের ওপর একটি কালভার্ট নির্মাণ করা হয়েছে। জানা গেছে, এটি মূলত তৎকালীন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিবের গাড়িচালকের পুকুরে প্রবেশের জন্য সরকারি ৩১ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়। প্রভাব খাটিয়ে সেতুটি নির্মাণ করা হলেও পরে ডামুড্যা উপজেলা এলজিইডি এটিকে আইডি নাম্বার দিয়েছে।

প্রকল্পের তথ্য

ডামুড্যা উপজেলা এলজিইডি ও স্থানীয় সূত্র জানায়, জেলার অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের (এমএসআরডিপি) আওতায় ২০২৩-২৪ অর্থবছরে চরধানকাটি আদাসন দরবার শরীফ সড়কের মধ্যবর্তী স্থানে একটি বক্স কালভার্ট নির্মাণ করা হয়। ৩১ লাখ ১২ হাজার টাকা চুক্তিমূল্যে কাজটি সম্পন্ন করে ‘মিনহাজ ট্রেডার্স’ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। তখন কালভার্টটির কোনো আইডি নাম্বার ছিলো না। 

স্থানীয়দের বক্তব্য

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ব্রিজটি যে স্থানে নির্মাণ করা হয়েছে সেখানে কোনো বসতবাড়ি নেই। খালের ওপারে রয়েছে একটি পুকুর। পুকুরটির পাশ দিয়ে কোনো সড়কও নেই। স্থানীয়রা আশঙ্কা করছেন, ভবিষ্যতে ওই পুকুরপাড়ে বাড়ি নির্মাণ করবেন সচিবের গাড়িচালক, তাই ব্রিজটি বিশেষ সুপারিশে নির্মাণ করা হয়েছে।

স্থানীয় স্বপন দেওয়ান, আতিক মিয়া ও রমজান আলী বলেন, জনগুরুত্বপূর্ণ স্থানে সেতু নির্মাণ না করে ব্যক্তিস্বার্থে এমন সেতু নির্মাণ করা সরকারের অর্থের অপচয় এবং ক্ষমতার অপব্যবহার।

মো. নাজির মাঝি বলেন, সরকারি টাকা নষ্ট হয়েছে। ব্রিজটি ব্যবহার করছে কেউ না। এটি করা হয়েছে প্রভাবশালী এক ব্যক্তির জন্য।

ইয়ামিন মোড়ল আরও বলেন, সরকার যেখানে ব্রিজটি বানিয়েছে সেখানে ঘরবাড়ি নেই, সামনে শুধু একটি পুকুর। অথচ একটু দূরে খালের ওপারে মানুষ সাঁকো ব্যবহার করছে। 

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মন্তব্য

ডামুড্যা উপজেলা প্রকৌশলী আবু নাঈম নাবিল বলেন, উপজেলা থেকে আমরা এমন কোনো প্রপোজাল মন্ত্রণালয়ে পাঠাইনি। গাড়িচালক সচিব তদবির করে এটি প্রণয়ন করেছেন। আমরা জানিয়েছিলাম, প্রকল্পের মধ্যে পড়ে না। পরে পিডি হেড অফিস থেকে নির্দেশ দেন, তাই বাধ্য হয়ে কাজটি করতে হয়। তখন আইডি ছাড়াই কাজটি সম্পন্ন করা হয়, বর্তমানে আইডি দেওয়া হয়েছে।

শরীয়তপুর এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী এস. এম. রাফেউল ইসলাম বলেন, ব্যক্তিস্বার্থে কোনো ব্রিজ দেওয়া হয়নি। তখন তারা বলেছিলেন, পাশ দিয়ে একটি রাস্তা নির্মাণ করা হবে, সেই ভিত্তিতে ব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছে।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম