Logo
Logo
×

সারাদেশ

কর্মস্থলে অনুপস্থিত ১০ বছর, তবুও বেতন নিচ্ছেন মাদ্রাসা শিক্ষক!

Icon

বগুড়া ব্যুরো

প্রকাশ: ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ০৯:২৫ পিএম

কর্মস্থলে অনুপস্থিত ১০ বছর, তবুও বেতন নিচ্ছেন মাদ্রাসা শিক্ষক!

ধুনটের ইসলামপুর (ঈশ্বরঘাট) দাখিল মাদ্রাসা। ছবি: সংগৃহীত

বগুড়ার ধুনটের ইসলামপুর (ঈশ্বরঘাট) দাখিল মাদ্রাসার শরীর চর্চা শিক্ষক সাইদুর রহমান প্রায় ১০ বছর কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন। তিনি মাসে একদিন মাদ্রাসায় এসে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেন। এরপর ব্যাংক থেকে বেতন-ভাতা উত্তোলন করে থাকেন। এ ঘটনায় উপজেলায় ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চলছে।

অভিযোগ ও মাদ্রাসা সূত্র জানায়, সাইদুর রহমান বগুড়ার ধুনট উপজেলার এলাঙ্গী ইউনিয়নের রাঙামাটি গ্রামের আবু বক্কারের ছেলে। তিনি গত ২০১৪ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি ইসলামপুর (ঈশ্বরঘাট) দাখিল মাদ্রাসায় শরীর চর্চা শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। সাইদুর রহমান স্থানীয় এক প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতার আত্মীয় হওয়ার সুবাদে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকেন। মাসে একদিন প্রতিষ্ঠানে এসে হাজিরা খাতায় পুরো মাসের স্বাক্ষর করেন। মাস শেষে ব্যাংক থেকে বেতন-ভাতা উত্তোলন করেন। মাদ্রাসার সুপার ছদরুল আনাম বিষয়টি জানলেও তিনি ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেন না। তবে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর শিক্ষক সাইদুর রহমান বিপাকে পড়েছেন। মাদ্রাসার সুপার বার বার তাকে সতর্ক করে নোটিশ দিচ্ছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শরীর চর্চা শিক্ষক সাইদুর রহমান অনুপস্থিত রয়েছেন। হাজিরা খাতা দেখলে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের সত্যতা মেলে। হাজিরা খাতায় দেখা যায়, তিনি অক্টোবর মাসে ১০ দিন অনুপস্থিত ছিলেন। ৪ নভেম্বর পর্যন্ত একদিনও প্রতিষ্ঠানে আসেননি। এ ব্যাপারে মাদ্রাসার সুপার ছদরুল আনাম লিখিতভাবে তাকে বার বার সতর্ক করলেও তিনি কর্ণপাত করছেন না। সর্বশেষ গত ৩০ অক্টোবর তাকে সতর্ক নোটিশ করা হয়েছে।

অভিযোগ প্রসঙ্গে ইসলামপুর (ঈশ্বরঘাট) দাখিল মাদ্রাসার শরীর চর্চা শিক্ষক সাইদুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, তিনি পারিবারিকসহ নানা সমস্যার কারণে কর্মস্থলে উপস্থিত হতে পারছেন না। তবে শিগগিরই তার সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে। তখন নিয়মিত তার দায়িত্ব পালন করবেন।

মাদ্রাসার সুপার ছদরুল আনাম বলেন, মানবিক দিক বিবেচনা করে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আগে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বর্তমানে মাদ্রাসায় উপস্থিত হওয়ার জন্য তাকে বারবার সতর্ক নোটিশ করা হলেও কোনো লাভ হচ্ছে না।  তিনি আরও জানান, এখন বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করবেন।

বুধবার (৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রীতিলতা বর্মণ বলেন, তিনি মাদ্রাসার একজন শিক্ষকের অনুপস্থিতির কথা শুনেছেন। এ ব্যাপারে বৃহস্পতিবার তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। এরপর কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম