গাছের সঙ্গে ধাক্কা, মিলল কাভার্ডভ্যানভর্তি ভারতীয় শাড়ি
নেত্রকোনা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৬ নভেম্বর ২০২৫, ০৬:৩৯ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
নেত্রকোনার বারহাট্টায় চোরাচালানের মাধ্যমে ভারত থেকে অবৈধপথে আসা কাভার্ডভ্যানভর্তি ভারতীয় শাড়ি-কাপড় জব্দ করেছে পুলিশ। গাছের সঙ্গে ধাক্কার পর স্থানীয়দের তল্লাশিতে এসব অবৈধ শাড়ি-কাপড়ের হদিস মেলে।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার কাঁকুড়াবাজারে এসব কাপড় জব্দ করা হয়। পাচারের সঙ্গে জড়িত দুইজনকে আটক করা হয়েছে।
এ সময় কাভার্ডভ্যানের চালক ইব্রাহিম (২৫) ও সহকারী সাব্বিরকে (২৭) আটক করা হয়। তাদের বাড়ি গাজীপুরের মাওনা চৌরাস্তা এলাকায়।
পুলিশ, এলাকাবাসী ও আটক চালকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সুনামগঞ্জের মধ্যনগর সীমান্ত এলাকায় নৌকা থেকে ভারতীয় শাড়ি ও থ্রিপিস ভর্তি করে একটি কাভার্ডভ্যান গাজীপুরের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। পথে বারহাট্টা উপজেলার কাঁকুড়া এলাকার একটি গাছের সঙ্গে কাভার্ডভ্যানটির ধাক্কা লাগে।
স্থানীয় লোকজন এটি আটকে ভেতরে কী আছে জানতে চান। তাৎক্ষণিক সঠিক জবাব দিতে না পারায় লোকজন কাভার্ডভ্যানটি খুলে ভেতরে চোরাচালানের পণ্য দেখতে পান। পরে খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে কাভার্ডভ্যানটি জব্দ করে থানায় নিয়ে যায়। এ সময় এর চালক ও সহকারীকেও আটক করে।
থানায় নিয়ে কাভার্ডভ্যানটি খুলে এতে বিপুল পরিমাণ ভারতীয় শাড়ি ও থ্রিপিস দেখতে পায় পুলিশ।
থানায় আটক চালক ইব্রাহিম বলেন, ভোরে সীমান্ত এলাকা থেকে পণ্যগুলো নিয়ে রওনা হই। সব জায়গায় আমাদের সহযোগী রয়েছে। তারা পথ দেখিয়ে দেয়। সহযোগীদের দেখানো পথে বারহাট্টার কাঁকড়া এলাকায় এসে কাভার্ডভ্যানটি একটি গাছে ধাক্কা লাগে। এতেই এলাকাবাসী সন্দেহ করে এটি আটক করে। চার-পাঁচ দিন ধরে ঘুম নেই। ফলে রাস্তায় গাড়ি চলন্ত অবস্থায় ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। সেই কারণে গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছে ধাক্কা লাগে।
বারহাট্টা উপজেলার সাংস্কৃতিক কর্মী আজিজুল হক ফারুক বলেন, এর আগেও বেশ কয়েকবার চোরাচালানের মালামাল ভর্তি গাড়ি আটক করে পুলিশে দিয়েছেন স্থানীয়রা। বারবার এলাকার লোকজনই চোরাচালানের পণ্য আটক করেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আরও নজরদারি বাড়ানো উচিত।
বারহাট্টার সিংধা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন তালুকদার বলেন, আমি গ্রামপুলিশের মাধ্যমে খবর পাই একটি ট্রাক সড়কের পাশের একটি বাড়িতে উঠিয়ে দিয়ে একটি ঘরের ক্ষতি করেছে। পরে তাড়াহুড়ো করে তারা জরিমানা দিয়ে চলে যেতে চাইলে স্থানীয়দের সন্দেহের সৃষ্টি হয়। পরে আমি বিষয়টি পুলিশকে জানালে পুলিশ ট্রাকটি জব্দ করে নিয়ে যায়।
বারহাট্টা থানার ওসি কামরুল হাসান বলেন, শাড়ি, কাপড় ও থান কাপড় জব্দ করার সময় সংশ্লিষ্ট থানা-পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিল। জব্দ করা শাড়ি, থ্রিপিস ও থান কাপড় জব্দের তালিকা প্রস্তুতি চলছে।
নেত্রকোনার পুলিশ সুপার মির্জা সায়েম মাহমুদ বলেন, জব্দকৃত ট্রাকের মালামাল স্থানীয় লোকজন এবং গণমাধ্যমের কর্মীদের সামনে খোলা হয়েছে। এখন জব্দকৃত মালামালের তালিকা চলছে। ভবিষ্যতেও অবৈধপথে আসা কাপড়সহ মাদক বন্ধে অভিযান পরিচালনা করা হবে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
