|
ফলো করুন |
|
|---|---|
ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মামলার আসামি হবার খবরে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। উপজেলার রাখালতলী গ্রামের বাসিন্দা মো. রুহুল ফকির (৬৫) গত ৮ নভেম্বর রাতে ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগীর পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসের অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে বোয়ালমারীতে ওই দিন উপজেলা বিএনপির দুই গ্রুপের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় শামসুদ্দিন মিয়া ঝুনু গ্রুপের এবং কৃষক দল নেতা খন্দকার নাসিরুল ইসলাম গ্রুপের ৮৭৬ নেতাকর্মী ও সমর্থকের বিরুদ্ধে থানায় গত ৮ নভেম্বর রাতে পৃথক মামলা দায়ের করা হয়। এ মামলায় ২৯ নম্বর আসামি করা হয় রুহুল ফকিরকে। ঘটনার সময় বৃদ্ধ রুহুল ফকির হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকলেও পূর্ববিরোধের জেরে স্থানীয় এক নেতার প্ররোচনায় তাকে আসামি করা হয় বলে অভিযোগ করেছে তার পরিবার।
ভিকটিমের পরিবারিক সূত্র জানায়, রুহুল ফকির কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। তবে জমি-জমা নিয়ে এলাকার সাবেক এক ইউপি চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতার সঙ্গে তার বিরোধ ছিল। রুহুল ফকির শারীরিক নানা সমস্যা নিয়ে মাসাধিকাল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। মামলা দাখিলের রাতে তিনি আসামি হওয়ার খবর জানতে পারেন তখন তিনি আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং একপর্যায়ে মারা যান।
মরহুমের স্ত্রী সালেহা বেগম বলেন, আমার স্বামী রুহুল ফকির কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না। তবে জমি-জমা নিয়ে শেখর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা রইসুল ইসলাম পলাশের সঙ্গে তার দ্বন্দ্ব ছিল। আমার স্বামীর মৃত্যুর মাসখানেক আগে পলাশ আমাদের দুই পাখি (৬৬ শতাংশ) জমি দখল করে নেয়। এ সময় আমার স্বামীকে বেধড়ক মারধর করে পলাশ ও তার লোকজন। এ নিয়ে উভয়পক্ষে একাধিক মামলা মোকদ্দমা চলছিল। পলাশের অব্যাহত হুমকি-ধমকিতে নিরাপত্তাহীনতা বোধ করে আমার স্বামী ঠিকমতো বাড়িতে ঘুমাতে পারতেন না। খাওয়া-দাওয়ায় অনিয়ম করতেন। ফলে পলাশের শারীরিক ও মানসিক আঘাতে আমার স্বামী গুরুতর অসুস্থ হয়ে ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। এমতাবস্থায় আমার স্বামীকে আবার নতুন করে রাজনৈতিক সংঘর্ষের মামলায় আসামি করা হয়। এ খবর শুনে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় আমার স্বামীর শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হয় এবং একপর্যায়ে ৯ নভেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
রুহুল ফকিরের মৃত্যুর জন্য পলাশ চেয়ারম্যানকে দায়ী করে তার বিচার দাবি করেন বৃদ্ধা সালেহা বেগম।
