যশোরের ৫ আসন
একক প্রার্থীতে ঐক্যের সুর বিএনপির তৃণমূলে, হাল ছাড়েননি বঞ্চিতরা
প্রকাশ: ১১ নভেম্বর ২০২৫, ০৮:১৪ এএম
ফাইল ছবি
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে যশোরের ৬টি আসনের পাঁচটিতে একক প্রার্থী ঘোষণা করেছে বিএনপি। এ ঘোষণায় ঐক্যের সুর দেখা গেছে বিএনপির তৃণমূলে। চাঙা হয়েছে রাজনীতির মাঠ। দলীয় প্রার্থীর পাশাপাশি প্রাথমিক মনোনয়ন বঞ্চিত নেতারাও মাঠে রয়েছেন। চূড়ান্ত মনোনয়নের আশায় তারাও ভোটের মাঠে সরব থাকছেন। তবে ফাঁকা আসন নিয়ে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা।
জানা গেছে, যশোর-১ (শার্শা) আসনে বিএনপি মনোনয়ন পেয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য মফিকুল হাসান তৃপ্তি। তিনি ভোটের মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। মনোনয়ন না পাওয়ায় হতাশ শার্শা উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবুল হাসান জহির, সাবেক সভাপতি খায়রুজ্জামান মধু, সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান লিটনের অনুসারীরা। চূড়ান্ত মনোনয়নের অপেক্ষায় দলের একাংশের নেতাকর্মীরা এখনো মাঠে নামেননি। তবে তারা শেষ পর্যন্ত ধানের শীষের পক্ষেই মাঠে থাকবেন। আবুল হাসান জহির বলেন, মফিকুল হাসান তৃপ্তিকে দল প্রাথমিক মনোনয়ন দিয়েছেন। তার মনোনয়নের দলের তৃণমূলের নেতাকর্মীরা খুশি নয়। এজন্য তৃণমূলের নেতাকর্মীদের এখনো স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোটের মাঠে নামানো সম্ভব হয়নি।
যশোর-২ (ঝিকরগাছা-চৌগাছা) আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য, উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সাবিরা সুলতানা মুন্নী। মনোনয়ন পাওয়ার পর পুরোদমে নির্বাচনি প্রচারণায় নেমে পড়েছেন তিনি। তার সঙ্গে একই মঞ্চে দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন মনোনয়ন বঞ্চিত অন্য নেতারাও। এ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী যশোর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি ও জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মিজানুর রহমান খান, চৌগাছা উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি জহুরুল ইসলাম ও সাবিরা সুলতানা মুন্নীকে একই মঞ্চে কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করতে দেখা গেছে। জহুরুল ইসলাম বলেন, দল একজনকে প্রাথমিক মনোনয়ন দিয়েছে। আমরা সবাই ধানের শীষের পক্ষে ভোটের মাঠে কাজ করছি। কেন্দ্রীয় কর্মসূচিতে সবাই একসঙ্গে সফল করছি। পাশাপাশি যার যার মত গণসংযোগ করছি। প্রাথমিক মনোনয়ন না পেলেও মাঠে ছেড়ে যাইনি।
যশোর-৩ (সদর) আসনের মনোনয়ন পেয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সাবেক সদস্য ও সাবেকমন্ত্রী তরিকুল ইসলামের ছেলে বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত। তিনি একমাত্র মনোনয়নপ্রত্যাশী থাকায় এই আসনে কোন্দল নেই। অমিতকে ঘিরে দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করছেন।
যশোর-৪ (বাঘারপাড়া-অভয়নগর ও বসুন্দিয়া ইউনিয়ন) আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন কৃষকদলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার টিএস আইয়ুব। তিনি জোরেশোরে নির্বাচনি প্রচারণায় মাঠে নেমে পড়েছেন। এই আসনে আরও দুইজন মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। তাদের একজন ঢাকা মহানগরের (দক্ষিণ) যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক নূরে আলম সিদ্দিকী সোহাগ মনোনয়ন না পেলেও টিএস আইয়ুবের পক্ষে নির্বাচনি প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন। তারা একই সঙ্গে একাধিক কর্মসূচিও পালন করেছেন। তবে আরেক মনোনয়ন প্রত্যাশী জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদলের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি ও অভয়নগর উপজেলা বিএনপির সভাপতি ফারাজী মতিয়ার রহমানকে দল মনোনীত প্রার্থীর সঙ্গে কর্মসূচিতে দেখা যায়নি। যশোর-৫ (মণিরামপুর) আসনে বিএনপি প্রার্থী ঘোষণা করেনি। এই আসন জোটের শরিক দলের জন্য ছেড়ে দেওয়া হবে, নাকি শেষ মুহূর্তে দলের কোনো চমক থাকছে, সেটি পরিষ্কার নয়। গুঞ্জন রয়েছে জোটের শরিক জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সহকারী মহাসচিব ও এই আসনের সাবেক এমপি, সাবেক ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মুফতি ওয়াক্কাস’র ছেলে মাওলানা রশিদ আহমাদকে আসনটি ছেড়ে দেওয়া হবে।
যশোর-৬ (কেশবপুর) আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণ। প্রায় একযুগ পরে এলাকায় ফিরে তিনি গণসংযোগ শুরু করেছেন। এই আসনের দুজন শক্তিশালী প্রার্থী বিএনপির কেন্দ্রীয় সহধর্মবিষয়ক সম্পাদক অমলেন্দু দাস অপু ও কেশবপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য আবুল হোসেন আজাদ মনোনয়ন না পাওয়ায় অনুসারীরা হতাশ। তাদের মনে কষ্ট থাকলেও দল মনোনীত প্রার্থীর সঙ্গেই দলীয় ও জাতীয় কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন অমলেন্দু দাস অপু ও আবুল হোসেন আজাদ।


