|
ফলো করুন |
|
|---|---|
সদ্যজাত ছেলে শিশু রেখে সটকে পড়েছেন মা। নবজাতকের আশ্রয় হয়েছে প্রবাসী ফজলুর করিমের স্ত্রী অনোয়ারা খাতুনের কাছে। পরম যত্নে আগলে রেখেছেন তিনি। এখনো শিশুটির নাম রাখা হয়নি। ডাক্তারি পরীক্ষা করানো হয়েছে। সুস্থ আছে সে; কিন্তু ২৪ ঘণ্টা পরেও মায়ের পরিচয় মেলেনি।
চাঞ্চল্যকর এ ঘটনটি ঘটেছে মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) দুপুরে ঝিনাইদহের শৈলকূপা উপজেলার গাড়াগঞ্জ পুরাতন বাজারসংলগ্ন মধুপুর গ্রামে।
প্রত্যক্ষদর্শী গ্রামবাসী জানান, প্রসব বেদনা নিয়ে দুপুর ১২টার দিকে বাজারে এক হোমিও চিকিৎসকের কাছে আসেন ওই মা। বয়স অনুমান ৩০ বছর; কিন্তু সময় শেষ- ডাক্তারের দোকানের কাছেই সন্তান ভূমিষ্ঠ হয় তার। কী করবে বুঝে উঠতে পারেন না হোমিও ডাক্তার সোহরাব হোসেন। পাশের বাড়িটি প্রবাসী ফজলুর করিমের। মাসহ ফুটফুটে শিশুটি নিয়ে ফজলুর করিমের স্ত্রীসহ অন্যরা ব্যস্ত হয়ে পড়েন। সুস্থ হয়ে উঠেন মা ও ছেলে; কিন্তু বড্ড দেরি হয়ে গেছে। সুযোগ বুঝে সন্তান রেখেই পালিয়ে গেছেন ওই মা।
শৈলকূপা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের ডা. ফারিয়া তন্নি গণমাধ্যমকে জানান, রাত ৮টার দিকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। শিশুটির ওজন দুই কেজি ৮০০ গ্রাম। শিশুটি সুস্থ থাকায় প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে হাসপাতালে ভর্তি করার প্রয়োজন হয়নি।
হোমিও চিকিৎসক সোহরাব হোসেন জানান, দোকানের পাশেই শিশুটি জন্ম নেয়। আমি ওই নারীকে চিনি না। বর্তমানে প্রবাসী ফজলুর করিমের স্ত্রী অনোয়ারা খাতুনের কাছে আছে শিশুটি।
আনোয়ারা খাতুন (শিশুর পালক মা) বলেন, নবজাতকের মা ডাক্তার দেখাতে এসেছিল। এ সময় বাজার এলাকার সড়কের পাশেই জন্ম নেয় শিশুটি। খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে তাদের আমার বাড়িতে নিয়ে এসে সেবাযত্ন করি। খবর ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। মানুষ বাড়িতে ভিড় করতে শুরু করেন। শিশুটির ওই মায়ের কাছে বাবার নাম ও ঠিকানা জানতে চাইলে দেশের বাইরে থাকেন বলে জানায়। তার নাম ও বাড়ির ঠিকানা সঠিকভাবে বলে না। এমনকি তার পরিবারের মানুষের মোবাইল নাম্বার চাইলেও দেয়নি।
আনোয়ারা খাতুন বলেন, একপর্যায়ে সন্তানকে আমার কোলে তুলে দিয়ে যাওয়ার সময় বলেন- ‘আপনি আমার খুব উপকার করলেন আমি মাঝে-মধ্যে দেখতে আসব।’
এদিকে জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. আব্দুল কাদের বুধবার (১৯ নভেম্বর) বিকালে যুগান্তরকে জানান, আইনগত বাধা রয়েছে। কমিটির মিটিং শেষে রেজুলেশনের মাধ্যমে হস্তান্তর করা হবে। আপাতত শিশুটি যেখানে আছে সেখানেই থাকবে। স্থানীয় সূত্রগুলো জানাচ্ছে ঘটনার পেছনে রহস্য লুকিয়ে আছে।
