|
ফলো করুন |
|
|---|---|
রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) আবারও র্যাগিংয়ের অভিযোগ উঠেছে। বিজয় ২৪ ছাত্র হলের ছাদে সিনিয়রদের একটি অংশ জুনিয়র শিক্ষার্থীদের মারধর করেছে।
এ সময় বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী দীন ইসলামকে মারধর করলে তিনি গুরুতর আহত হন। তাকে সেখান থেকে সাংবাদিকদের সহযোগিতায় সহপাঠীরা উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করেন।
বিশ্ববিদ্যালয় হল প্রশাসন কর্তৃপক্ষ ঘটনার পরপরই তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বলে জানা গেছে।
অভিযোগে জানা গেছে, রোববার রাত ১২টার দিকে বাংলা বিভাগের ২৩-২৪ সেশনের (১৬ ব্যাচ) কয়েকজন শিক্ষার্থী একই বিভাগের ২৪-২৫ সেশনের (১৭ ব্যাচ) শিক্ষার্থীদের হলের ছাদে ডাকেন। একপর্যায়ে ১৬ ব্যাচের শিক্ষার্থী মামুন ১৭ ব্যাচের দীন ইসলামকে মারধর করেন। এতে তার কানের পর্দা ফেটে গেলে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। ঘটনাটি জানতে পেরে সেখানে সাংবাদিকরা উপস্থিত হলে র্যাগিংয়ের সঙ্গে শিক্ষার্থীরা নিজেদের পক্ষে সাফাই গাওয়ার চেষ্টা করেন।
এ সময় অসুস্থ শিক্ষার্থী আহত দীন ইসলামকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিতে সাংবাদিকদের কাছে আকুতি জানাতে শোনা গেছে। তিনি জানান, ‘আমি এখনো কানে ঠিকমতো শুনতে পারছি না। মামুন ভাই সরাসরি কানে থাপ্পড় মারছে। গতকালও ডাকছিল, না যাওয়ায় আজ মারধর করেছে।
অভিযোগ অস্বীকার করে মামুন বলেন, আমি ওভাবে হাত তুলিনি; ও একটু বাড়িয়ে বলছে।
অপর নির্যাতনের শিকার শিক্ষার্থীরা জানান, সিনিয়র সহপাঠী আজিজ, মামুন, রাফি, মেঘনাদ ভাইয়েরা মুখের ভাষা খারাপ করে জুনিয়র শিক্ষার্থীদের গালাগালি করে। এর আগে ডিপার্টমেন্ট প্রধানকে জানানো হয়। কোনো উদ্যোগ নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষ।
রোববার রাতে হলের ছাদে ডেকে নিয়ে র্যাগিংয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে জুনিয়র শিক্ষার্থীরা বলেন, তাদের ছাদে ডেকে নিয়ে খারাপ ভাষায় বকাবকি করে, অকথ্য ভাষা ব্যবহার করেন।
মামুন ও মেঘনাদ ভাই ছাদে কিছুক্ষণ বকাবকি করে দূরে চলে যান, আমাদের লাইনে দাঁড় করায় মামুন ভাই আবার এসে দ্বীনকে দাঁড় করান এবং বকাবকি করেন। মামুন ভাই দ্বীনকে বলে তোকে মারলে কী হবে এই বলে থাপ্পড় মেরে দেন।
থাপ্পড় মারার বিষয়ে উদ্ধারকারীরা মামুনকে জিজ্ঞেস করেন কেন তাকে মারা হলো? তিনি বলেন- তাকে ওভাবে কিছু করা হয়নি। তাকে ওভাবে হাত তুলি নাই, যেভাবে বলতেছে সেটা বেশি বলতেছে। আমি জাস্ট গায়ে একটু হাত দিছি।
র্যাগিংয়ের বিষয়টি নিয়ে বিজয় ২৪ হলের প্রভোস্টের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এ ঘটনায় ৩ সদস্যদের তদন্ত কমিটি করে দিয়েছি। এ বিষয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আমি কিছু বলতে পারব না। আমার বলা যাবে না।
তদন্ত কমিটিতে ৩ সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন- বিজয় ২৪ হলের সহকারী প্রভোস্ট তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ড. এটিএম জিন্নাতুল বাসার, সদস্য সাইফুদ্দীন খালেদ এবং আরেকজন সদস্য আছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর মো. ফায়সাল-ই-আলম।
র্যাগিংয়ের বিষয়ে বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. শফিকুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এ ঘটনাটি যেহেতু হলে ঘটেছে এটি তারা দেখবে। শৃঙ্খলাভঙ্গের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর ও প্রভোস্ট ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবেন।
