বিএনপির দুই গ্রুপে সংঘর্ষ, ককটেল বিস্ফোরণ
রাজশাহী ব্যুরো
প্রকাশ: ২৯ নভেম্বর ২০২৫, ০১:৪৪ পিএম
প্রতীকী ছবি
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
রাজশাহীতে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) রাত সাড়ে আটটায় মহানগরীর চার নম্বর ওয়ার্ডে সংঘর্ষের সময় ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে। একই সঙ্গে চার নম্বর ওয়ার্ডের দলীয় কার্যালয়ে ভাঙচুর চালানো হয়। সংঘর্ষের কেন্দ্রবিন্দু ছিলেন চার নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও কাউন্সিলর রুহুল আমিন টুনু। এ ঘটনায় এলাকায় বিএনপির দুইপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে।
দলীয় নেতাকর্মীরা জানান, রাত আটটায় ওয়ার্ড কার্যালয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় দোয়া মাহফিল ও নির্বাচনী প্রচারণার জন্য সভা আহবান করা হয়। সভায় টুনু, রাজপাড়া থানা বিএনপির সভাপতি মিজানুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলামসহ অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
তবে ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি রকিব উদ্দিন টুটুল এবং তার অনুসারীরা টুনুর উপস্থিতি মেনে নিতে পারেননি। তারা দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে টুনুকে জোরপূর্বক বের করার চেষ্টা করেন এবং তাকে গালাগালি করেন। এই ঘটনায় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। টুটুলের অনুসারীরা দলীয় কার্যালয়ের দরজা ভাঙচুর করে। একপর্যায়ে টুনু ও ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব রুবেলের সমর্থকদের প্রতিরোধে টুটুলের অনুসারীরা কার্যালয় থেকে বের হয়ে যান। এরপর সামনের রাস্তায় পরপর দুইটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটে। তবে দলের নেতাকর্মীরা জানায়, এতে কেউ গুরুতর আহত হননি।
টুটুল ও তার অনুসারীরা বলেন, আওয়ামী লীগের দীর্ঘ শাসনকালে টুনু কাউন্সিলর ছিলেন। তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছিলেন। দলের সকল সুবিধা নিয়ে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর আবার বিএনপিতে এসেছেন। দলের দুঃসময়ে নেতাকর্মীদের পাশে না থেকে নিজের আখের গুছিয়েছেন। টুনুর কাছ থেকে সুবিধা নিচ্ছেন এমন নেতাকর্মীরা এখন তার পক্ষ অবলম্বন করছেন।
রুহুল আমিন টুনু বলেন, সভা চলাকালে টুটুলের নেতৃত্বে আসা কয়েকজন আমাকে দলীয় কার্যালয় থেকে বের হয়ে যেতে বলেন। আমি আওয়ামী লীগে যোগ দিইনি। সাবেক সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন আমাকে জোর করে বিএনপি থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করেছিলেন। আমার নামে ১১টি মামলা ছিল। আমি সবসময় বিএনপিকে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেছি।
ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রুবেল জানিয়েছেন, রাজশাহী মহানগর বিএনপির কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। কোনো কারণে নয়, সভাপতি টুটুল এবং তার সমর্থকরা ওয়ার্ড কার্যালয়ে হামলা চালিয়েছেন। আমরা কোনো আইনগত ব্যবস্থা না নিয়ে মহানগর বিএনপির নেতৃত্বকে বিষয়টি লিখিতভাবে জানিয়েছি।
রাজপাড়া থানার ওসি হাবিবুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। তবে পুলিশের একটি সূত্র জানায়, বিস্ফোরিত ককটেলের আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে।
দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে আওয়ামী লীগ শাসনামলে রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় বিএনপি সমর্থিত ১৭ কাউন্সিলরকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। সম্প্রতি রাজশাহী-২ (সদর) আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মিজানুর রহমান মিনু তাদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের সুপারিশ করেন। এর পর গত ২৪ নভেম্বর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এক চিঠিতে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করেন।

