উল্লাপাড়ায় পরীক্ষা নিচ্ছেন অভিভাবকরা
উল্লাপাড়া (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:৪১ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা সরকার ঘোষিত ১১তম গ্রেড নিশ্চিত করতে এখন পর্যন্ত প্রজ্ঞাপন জারি না করায় ধর্মঘটে রয়েছেন। আর এতে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা গ্রহণ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
বুধবার সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার বেশকিছু প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২০২৫ শিক্ষাবর্ষের বার্ষিক পরীক্ষার তৃতীয় দিনে বিভিন্ন শ্রেণির পরীক্ষায় শিক্ষা কর্মকর্তা ও প্রধান শিক্ষকদের অনুরোধে অভিভাবকরা পরীক্ষা কক্ষে দায়িত্ব পালন করেছেন।
বার্ষিক পরীক্ষাকে জিম্মি করে সহকারী শিক্ষকদের এ সময়ে ধর্মঘটে যাওয়ায় অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
উল্লাপাড়া পৌরসভার ঝিকিড়া বন্দর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, পরীক্ষা কক্ষগুলোতে দায়িত্ব পালন করছেন অভিভাবকরা। একটি কক্ষে প্রধান শিক্ষক এটিএম আব্দুর রাজ্জাক নিজেই দায়িত্ব পালন করছেন।
প্রধান শিক্ষক আব্দুল রাজ্জাক জানান, সহকারী শিক্ষকরা আন্দোলনে থাকায় বার্ষিক পরীক্ষা অব্যাহত রাখতে অভিভাবকদের অনুরোধ করে তাদের দিয়ে পরীক্ষা গ্রহণ করানো হচ্ছে। কক্ষ পর্যবেক্ষকের অভাবে তিনি নিজেও দায়িত্ব পালন করছেন। যেকোনো মূল্যে তিনি শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা চালিয়ে যাওয়ার দৃঢ়প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
কথা হয় পরীক্ষা গ্রহণের দায়িত্বে থাকা অভিভাবক প্রশান্ত কুমার পাল, নাসীর উদ্দিন, মো. ফজলুর হক, মারজিয়া সুলতানা ও মাহমুদা সুলতানার সঙ্গে। ক্ষোভ প্রকাশ করে তারা বলেন, সহকারী শিক্ষকরা বার্ষিক পরীক্ষা ও তাদের শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে দাবি আদায়ের চেষ্টা করছেন। এটা খুবই নিন্দনীয়। আমরা তাদের দাবির প্রতি সমর্থন থাকলেও বার্ষিক পরীক্ষাকে জিম্মি করে ধর্মঘট কখনই সমর্থন করি না।
শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান, ফাওজিয়া ভূঁইয়া, মুনতাহা ফারিন ও রহিম রহমান জানায়, শিক্ষকরা না থাকায় তাদের পরীক্ষা কার্যক্রম দারুণভাবে ব্যাহত হচ্ছে। অনেক সময় প্রশ্ন না বুঝলে সেটা বোঝানোরও কোনো লোক নেই। স্যার-ম্যাডামদের মতো অভিভাবকদের প্রশ্নপত্রের বিষয়বস্তু জানা নেই। আর এ কারণে তারা খুবই সমস্যায় পড়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষক জানান, সরকার তাদের ১১তম গ্রেডের দাবি মেনে নিলেও আজ পর্যন্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়নি। চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে নির্বাচনের তফশিল ঘোষণা হলে নির্বাচন কমিশনের ওপর সব কার্যক্রম ন্যস্ত হবে। ফলে তাদের প্রজ্ঞাপন আর হবে না। এ কারণে নিরুপায় হয়ে তারা বার্ষিক পরীক্ষার সময়েও ধর্মঘটে যেতে বাধ্য হয়েছেন। বস্তুত উপজেলার ২৭৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পরীক্ষা চলছে একইভাবে।
উল্লাপাড়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, সরকারি নির্দেশনার আলোকে যেকোনোভাবে তারা চলমান বার্ষিক পরীক্ষা গ্রহণ করবেন। শিক্ষা অফিস থেকে সব কর্মকর্তা উপজেলার বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরীক্ষা পরিচালনায় দায়িত্ব পালন করছেন। অভিভাবকরা এ কাজে সার্বিক সহযোগিতা দিচ্ছেন।
