রেলক্রসিংয়ে শিক পুঁতে চলাচল বন্ধ, দুর্ভোগে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ
সিদ্দিকুর রহমান মাসুম, বাহুবল থেকে
প্রকাশ: ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৩:৪৪ পিএম
ফাইল ছবি
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগপথ মিরপুর–রাউদগাঁও–ফদ্রখলা হয়ে লস্করপুর সড়কসহ কয়েকটি সংযোগ সড়কের রেলক্রসিং হঠাৎ করেই বন্ধ করে দিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। কোনো পূর্বঘোষণা ছাড়াই গত শুক্রবার এসব রেলক্রসিংয়ে ৮–১০টি করে লোহার শিক সিসি ঢালাই দিয়ে স্থাপন করেন রেলকর্মীরা। এতে বন্ধ হয়ে যায় যানবাহন চলাচল, বিপাকে পড়েন ১০–১২ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বহু বছর ধরে এসব রেলক্রসিং দিয়ে স্বাভাবিক যাতায়াত চললেও হঠাৎ করে ব্যারিকেড দিয়ে রেললাইন পারাপার বন্ধ করায় তাদের নিত্যদিনের জীবনে সৃষ্টি হয়েছে চরম ভোগান্তি। স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী, জরুরি রোগী, চাকরিজীবীসহ সাধারণ যাত্রীদের এখন কয়েক কিলোমিটার ঘুরে বিকল্প পথ ব্যবহার করতে হচ্ছে। এতে সময়, শ্রম, খরচ এবং ঝুঁকি সবই বেড়েছে কয়েকগুণ।
কালুটুলা গ্রামের বাসিন্দা সাইদুজ্জামান নিজাম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, শুধু রেলের নিরাপত্তার যুক্তিতে আমাদের একমাত্র চলাচলের পথ বন্ধ করা অমানবিক সিদ্ধান্ত। শত শত মানুষ প্রতিদিন এই সড়ক ব্যবহার করে। আমরা দ্রুত সমাধান চাই।
করাঙ্গী ইসলামি একাডেমি এন্ড হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মুছাব্বির বলেন, “শত শত শিক্ষার্থীরা এই সরকারি সড়ক দিয়ে বিভিন্ন পরিবহন নিয়ে আসা-যাওয়া করে। এই বেরিকেড দেওয়ার কারণে শিক্ষার্থীদের পরিবহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে, হেটে আসা-যাওয়া করতে কষ্ট হচ্ছে। এতে অনেক শিক্ষার্থী ঝড়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
গিয়াস উদ্দিন নামের আরেক বাসিন্দা বলেন, এটি এলজিডি আওতাভুক্ত সড়ক। ব্যারিকেড দেওয়ার আগে এলজিডি ও এলাকাবাসীর সঙ্গে আলোচনা করা উচিত ছিল। এখনই ব্যারিকেড তুলে জরুরি চলাচল স্বাভাবিক করতে হবে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য ছায়েদ মিয়া জানান, ঢাকা–সিলেট মহাসড়কের মিরপুর থেকে শায়েস্তাগঞ্জ পর্যন্ত বিকল্প রুট হিসেবে ব্যবহৃত হয় এই সড়কটি। রেল কর্তৃপক্ষের উচিত ছিল ব্যারিকেড না দিয়ে নিরাপত্তা নিশ্চিত করে একটি রেলগেট স্থাপন করা।
মিরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শামীম আহমেদ বলেন, এই সড়কটি দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এখানে ব্যারিকেড দেওয়া জনস্বার্থের পরিপন্থী। অবিলম্বে ব্যারিকেড তুলে স্বাভাবিক চলাচলের ব্যবস্থা করতে হবে। পাশাপাশি রেল ও জনগণের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে স্থায়ী রেলগেট স্থাপন জরুরি।
স্থানীয়দের দাবি, রেলওয়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থার আগে জনস্বার্থ বিবেচনা করে যৌক্তিক সমাধান নিশ্চিত করা প্রয়োজন। তা না হলে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের ভোগান্তি আরও বাড়বে।

-69369cfb41eb5.jpg)