|
ফলো করুন |
|
|---|---|
দেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় টানা চার দিন দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বিরাজ করছে। রাতভর ঝরছে ঘন কুয়াশা আর প্রচণ্ড ঠাণ্ডা থাকছে সকাল পর্যন্ত। দিনের বেলা রোদের দেখা মিললেও সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে জেঁকে বসছে শীত। সেখানে শৈত্যপ্রবাহের আভাস পাওয়া যাচ্ছে বলে তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
এদিকে দিন দিন শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ার দরুন চরম বিপাকে পড়েছে এলাকার অসংখ্য গরিব খেটে খাওয়া ও অসহায় ছিন্নমূল সাধারণ মানুষ।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, সোমবার সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়ায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। এ সময় বাতাসের আদ্রতা ছিল ৯৯ শতাংশ এবং বাতাসের গতিবেগ ছিল প্রতি ঘণ্টায় ১০ কিলোমিটার। সন্ধ্যার পর থেকে রাত যতই গভীর হয়, কুয়াশাও বাড়তে থাকে সমানতালে। অবশ্য সকাল ৯টার দিকে কুয়াশা ভেদ করে সূর্য উঠছে।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জীতেন্দ্র নাথ রায় জানান, টানা চার দিন ধরে তেঁতুলিয়ায় সারা দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হচ্ছে। বর্তমানে তেঁতুলিয়ায় দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে বিরাজ করায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহের আভাস লক্ষ্য করা যাচ্ছে। উত্তরের হিমেল হাওয়া প্রবেশ করায় এখন তেঁতুলিয়ায় দিন দিন তাপমাত্রা কমতে পারে বলে তিনি জানান।
অবস্থানগত কারণে তেঁতুলিয়া হিমালয়ের কাছাকাছি হওয়ায় কুয়াশার দাপটের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে উত্তরের হিমেল হাওয়া। এ কারণেই পঞ্চগড়ে শীতের তীব্রতা বাড়ছে। তবে দিনের বেলায় ঝলমলে রোদ থাকায় দিনের তাপমাত্রা কিছুটা বাড়ছে।
রোববার বিকালে তেঁতুলিয়ায় দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ২৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
সোমবার সকালে পঞ্চগড় সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ঘন কুয়াশায় চারদিক ঢেকে আছে। শীতের সকালে পথ-ঘাটে লোকজনের আনাগোনা একেবারেই কম। সুনসান নীরবতায় গরম কাপড় পড়ে কাজে বের হয়েছেন কিছু কর্মজীবী মানুষ। সন্ধ্যার পরপরই হাট-বাজারগুলোতে লোকজনের উপস্থিতি কমে যাচ্ছে।
আটোয়ারী উপজেলার বলরামপুর ইউনিয়নের মন্ডলপাড়া গ্রামে রিকশা-ভ্যানচালক হেলাল বলেন, আমাদের কাকডাকা ভোরে বিছানা ছেড়ে রিকশা-ভ্যান নিয়ে বেরুতে হয়; কিন্তু ঠাণ্ডার কারণে হাত অবশ হয়ে যাচ্ছে।
পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক কাজী মো. সায়েমুজ্জামান জানান, শীত মোকাবেলায় এ পর্যন্ত সরকারিভাবে ৩০ লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে; যা দিয়ে ৮ হাজার ৬৪০ পিস কম্বল কেনা হয়েছে এবং তা যথারীতি বিতরণ অব্যাহত রয়েছে। তবে পঞ্চগড় হিমালয়ের কাছাকাছি হওয়ায় দেশের সবচেয়ে বেশি শীত পঞ্চগড়ে দেখা যায়। এ সময় এখানকার গরিব ছিন্নমূল মানুষ সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েন। এজন্য শীতের তীব্রতা বিবেচনা করে ইতোমধ্যে অতিরিক্ত ৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ চেয়ে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরে জরুরিভাবে বরাদ্দের আবেদন জানানো হয়েছে। এ অর্থ বরাদ্দ পেলে আশা করছি শীতের কারণে শীতার্ত অসহায় মানুষরা দুর্ভোগে থাকবে না।
