Logo
Logo
×

সারাদেশ

আধিপত্য নিয়ে সংঘর্ষ-গোলাগুলি, ৩ ব্যাংক ও শতাধিক দোকান ভাঙচুর

Icon

সোনাইমুড়ি (নোয়াখালী) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৭:৩৮ পিএম

আধিপত্য নিয়ে সংঘর্ষ-গোলাগুলি, ৩ ব্যাংক ও শতাধিক দোকান ভাঙচুর

নোয়াখালীর সোনাইমুড়ি উপজেলার নদনা বাজারে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় গোলাগুলি ও ৩টি ব্যাংক, গাড়িসহ শতাধিক দোকান ভাঙচুর লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। সংঘর্ষে ৫০-৬০ জন আহত হওয়ার ঘটনা হয়েছে।

মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) রাতব্যাপী এ হামলা ও সংঘর্ষের পর সেনাবাহিনী, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে এলাকার পরিস্থিতি এখনো থমথমে।

ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আব্দুল মামুন, বাবুল, সৌর, মনির হোসেন জানান, শনিবার থেকে বুধবার দুপুর পর্যন্ত আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে নদনা ইউনিয়নের নদনা বাজারে উত্তর শাকতলা ও দক্ষিণ শাকতলা গ্রামের লোকজনের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়। এ পর্যন্ত তিন দফা হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটলেও প্রশাসন তেমন কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেনি। দীর্ঘদিন থেকে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে উভয়পক্ষের লোকজনের মধ্যে বহু দিন ধরে মারামারি হতো।

শুক্রবার সন্ধ্যায় বিএনপির একটি প্রোগ্রামে শাকতলা আলিয়া মাদ্রাসার মাঠে পাঁচবাড়িয়া শ্যামলের সঙ্গে ফারুকের সংঘর্ষ হয়। মূলত ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এ সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। বুধবার রাত ছাড়াও রোববার সকালে, সোমবার সকালে, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পরপর তিনবার হামলা ও সংঘর্ষ হয়। প্রথমে তাদের মধ্যে ধাওয়া ও পালটা শুরু হয় এবং পরে তা সংঘর্ষে রূপ নেয়।

এ হামলার নেতৃত্ব দেন দক্ষিণ শাকতলা গ্রামের হারিচ আহমদের ছেলে মাহফুজ (৩০) কুদ্দুস, শাকতলা গ্রামের ভূঁইয়া বাড়ির আবুল কালাম (৫২) ও লাল মিয়া বেপারী বাড়ির সোলেমানের ছেলে ফারুক (৩২)। হামলায় ইসলামী ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক ও গ্লোবাল ব্যাংক, সিএনজি অটো গাড়ি ও মোটরসাইকেলে এবং দোকানে আগুন লাগিয়ে দেয় বিক্ষুব্ধ লোকজন। বর্তমানে ব্যাংকগুলোর লেনদেন বন্ধ রয়েছে।

ব্যবসায়ীরা জানান, জননী ওয়ার্কশপ, মাইন ইলেকট্রিক, রুবেল পোল্টি খামার, ইউসুফ ডেকোরেটার, মা ইলেকট্রনিক্স, মা টেলিকম, আলখিত মা স্টোর, বিসমিল্লাহ ফ্রিজ দোকান, রায়হান স্টোর, আংগো কম্পিউটার, সেবা মেডিকেল, ইব্রাহিম স্টোর, আবু জাহের স্টোর,জননী স্টোর, রয়েল কেয়ার ফার্মেসি, নয়ন ভ্যারাইটি স্টোর, আপন স্টোরসহ ওষুধের দোকান, মোবাইল দোকান ও বিভিন্ন মূল্যবান দোকানের লাখ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায় দুপক্ষ।

সংঘর্ষে আহতদের জেলা-উপজেলাসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। আহতরা হলেন- মোহাম্মদ ইমন, সিদ্দিক উল্যা, ইব্রাহিম, স্বপন,ওসমান, সাইমন, সাব্বির, মারুফ, রবিউল, মিলন,ফারুক, কালাম, জহির, সবুজ, মনু, মিলন,রনি, মির হোসেন, আজগর,সোহাগ, বাবুল,আহম্মদ আমিন, জোহান, আরমান, মাহফুজসহ ৫০-৬০ জন।

এদিকে নদনা বাজারের অগ্রণী ব্যাংক শাখার ব্যবস্থাপক তাজুল ইসলাম জানান, তিন দিনব্যাপী দুইপাড়ার সংঘর্ষে ব্যাংক লেনদেন না থাকায় হতাশা ও সংকটে আছি আমরা। ব্যাংকের নিরাপত্তার স্বার্থে অবিলম্বে প্রশাসনকে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করেছেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ ও সোনাইমুড়ি থানা বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছি।

সোনাইমুড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার নারগিছ আক্তার জানান, আধিপত্য বিস্তরকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনা নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। পুলিশ ও সেনাবাহিনী মাঠে রয়েছে। 

সোনাইমুড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. কবির হোসেন জানান, নদনা বাজারের সংঘর্ষ আপাতত নিয়ন্ত্রণে আছে। তবে এ ঘটনায় ৩১ জনের নাম ও অজ্ঞাত প্রায় দেড় শতাধিক লোকজনকে আসামি করে সোনাইমুড়ি থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে। তবে পুলিশ এখনো কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত আছে বলে জানান তিনি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ও সেনাবাহিনী রয়েছে ঘটনাস্থলে।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম