মুক্তিপণের এক লাখ ৮০ হাজার টাকা পরিশোধ করে লোকালয়ে ফিরেছেন সুন্দরবন থেকে অপহৃত সাত জেলে। সোমবার দুপুর ও বিকালে বিকাশে দাবিকৃত টাকা পরিশোধের পর জিম্মিদশা থেকে মুক্তি পেয়ে বুধবার (১০ ডিসেম্বর) ভোর ৪টার দিকে তারা লোকালয়ে পৌঁছেন। এর আগে গত রোববার সকালে সাতক্ষীরা রেঞ্জের মালঞ্চ নদীর হাঁসখালী, চেলাকাটা ও হেতালবুনি খাল থেকে সুন্দরবনে কাঁকড়া শিকারে গেলে জলদস্যুরা তাদের অপহরণ করে।

ফিরে আসা জেলেরা হলেন- সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার দক্ষিণ কদমতলা গ্রামের আব্দুল আজিজ (৫০), ইব্রাহিম হোসেন (৪৫), আনারুল ইসলাম (২২), নাজমুল হক (৩৪), শামিম হোসেন (৩৮), আনোয়ার হোসেন (৩০) ও মুজিবুল হোসেন (৩৫)।

মুক্তিপণ দিয়ে ফিরে আসা জেলেরা জানান, শুরুতে আত্মসমর্পণকৃত জলদস্যু ডন বাহিনীর পরিচয়ে তাদের অপহরণ করা হয়েছিল; কিন্তু দুই দিন জিম্মি অবস্থায় থাকার সময়ে তারা জলদস্যুদের কথোপকথনে নিশ্চিত হয়েছেন যে নয় সদস্যের জলদস্যু দলটি নানু বাহিনী নামে সুন্দরবনে দস্যুতা চালাচ্ছে। এসব জেলের দাবি পুলিশ বা র‌্যাবের ব্যবহারকৃত একটি পিস্তলসহ মোট সাতটি আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে জলদস্যুদের কাছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ফিরে আসা দুই জেলে আরও জানান, সাতক্ষীরার পারুলিয়ায় বসে কোনো একটি প্রভাবশালী চক্র এ জলদস্যুদের নিয়ন্ত্রণ করছে। তাদের সামনে একাধিকবার জলদস্যুরা পারুলিয়ায় অবস্থানরতদের সঙ্গে কথা বলেছেন। ইতোপূর্বে আত্মসমর্পণকৃত জলদস্যু শ্যামনগর উপজেলার মৌখালী আটিরউপর এলাকার সফিকুল, শাহাজান, কালিঞ্চির মিকাইল, গোলাখালীর আসলাম, গাবুরার আজিজুল ও মিন্টুকে তারা চিনতে পেরেছেন।

সাতক্ষীরা রেঞ্জের রেঞ্জার মো. ফজলুল হক জানান, জিম্মি হওয়া কয়েকজন জেলে বাড়িতে ফিরেছেন বলে লোকমুখে জেনেছেন। তবে ফিরে আসা জেলেদের থেকে এখনো কিছু জানা যায়নি।

শ্যামনগর থানার ওসি মো. খালেদুর রহমান জানান, জলদস্যুদের কবল থেকে ফিরে আসা জেলেদের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে অপরাধীদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে।