শিহাব-সবুজ হত্যা মামলায় নিজাম হাজারীসহ ৩৪৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট
যতন মজুমদার, ফেনী
প্রকাশ: ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:২৭ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
২০২৪ সালের ৪ আগস্ট ফেনীর মহিপালে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গুলিতে নিহত ওয়াকিল আহমেদ শিহাব ও টমটমচালক মো. সবুজ হত্যা মামলায় ফেনী-২ আসনের সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারীসহ মোট ৩৪৪ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) নিশাত তাবাসসুম আদালতে দুটি মামলার চার্জশিট দাখিলের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ওয়াকিল আহমেদ শিহাব হত্যা মামলায় ২২০ জন ও সবুজ হত্যা মামলায় ১২৪ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দিয়েছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তারা। আগামী বছরের ১৮ জানুয়ারি শিহাব হত্যা মামলা ও ১১ ডিসেম্বর সবুজ হত্যা মামলার চার্জশিট পর্যালোচনার জন্য দিন ধার্য করেছেন আদালত। এ মামলায় মূল আসামিরা ধরাছোঁয়ার বাইরে হলেও মোট ১০৬ জন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যাদের মধ্যে এজহারভুক্ত ১৮ জন।
টমটমচালক সবুজ হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ফেনী মডেল থানার এসআই মো. ফারুক মিয়া জানান, সবুজ হত্যা মামলায় এজাহারভুক্ত ৬৫ জন ও তদন্তে প্রাপ্ত ৫৯ জনসহ মোট ১২৪ জনকে অভিযুক্ত করে মঙ্গলবার আদালতে চার্জশিট প্রদান করা হয়েছে। আদালত ১১ ডিসেম্বর চার্জশিট পর্যালোচনার জন্য দিন নির্ধারণ করেছেন।
তিনি আরও জানান, এ মামলায় এজাহারভুক্ত ৫ জন ও সন্দেহভাজন ৩৯ জনসহ মোট ৪৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ৭ জনকে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও তাদের মধ্যে কেউ আদালতে দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেয়নি।
অন্যদিকে ওয়াকিল আহমেদ শিহাব হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ফেনী মডেল থানার এসআই মোতাহের হোসেন জানান, শিহাব হত্যা মামলায় এজাহারভুক্ত ১৪৮ জন ও তদন্তে প্রাপ্ত ৭২ জনসহ মোট ২২০ জনের নাম উল্লেখ করে গত ৮ ডিসেম্বর আদালতে চার্জশিট জমা দেওয়া হয়েছে।
তিনি জানান, এ মামলায় এজাহারভুক্ত ১৩ জন ও সন্দেহভাজন ৪৯ জনসহ মোট ৬২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মামলায় মেজবাহ উদ্দিন মেজু, এনামুল হকসহ ৬ জনকে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তাদের মধ্যে নবী মেম্বার ও ওসমান গণি লিটন ১৬৪ ধারায় হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। তারা দুজনেই অস্ত্রধারী।
ফেনী মডেল থানা সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট সংঘটিত নৃশংস হামলার ঘটনায় এখন পর্যন্ত দায়ের হয়েছে ২৪টি মামলা, যার মধ্যে রয়েছে ৭টি হত্যা মামলা ও ১৭টি হত্যাচেষ্টা এবং সহিংসতার অভিযোগ।
২০২৪ সালের ২০ আগস্ট শিহাবের মা মাহফুজা আক্তার বাদী হয়ে ১৫১ জনের নাম উল্লেখ ও ১০০-১৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে ফেনী মডেল থানায় মামলা করেন। এ মামলার আসামিদের মধ্যে রয়েছেন ফেনী-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী, ফেনী-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আলাউদ্দিন আহমদ চৌধুরী নাসিম, ফেনী-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী।
এ ঘটনায় সম্পৃক্ততা না থাকায় এ মামলায় আবদুল আহাদ নয়ন, মীর হোসেন ও আবুল হাশেম নামে তিনজনকে চার্জশিট থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে মীর হোসেনের নাম-ঠিকানা মিল পাওয়া যায়নি।
অন্যদিকে ২০২৪ সালের ১৩ আগস্ট সবুজের ভাই মো. ইউছুপ বাদী হয়ে ফেনী-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী, ফেনী সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান শুসেন চন্দ্র শীল, সাবেক পৌর মেয়র স্বপন মিয়াজীসহ ৬৫ জনের নাম উল্লেখ ও ৩০০-৪০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে ফেনী মডেল থানায় মামলা করেন।
