Logo
Logo
×

সারাদেশ

আমরা রাজনীতির মাঠে ফুটবল হতে আসিনি, প্লেয়ার হয়ে এসেছি: নুর

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন, পটুয়াখালী

প্রকাশ: ১২ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৩:২৬ এএম

আমরা রাজনীতির মাঠে ফুটবল হতে আসিনি, প্লেয়ার হয়ে এসেছি: নুর

গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর বলেছেন, জুলাই আন্দোলনের সব অংশীদাররা আগামী জাতীয় নির্বাচনে থাকবে। বিএনপির নেতৃত্বে ফ্যাসিবাদ পতনের এক দফা যুগপৎ আন্দোলন চলাকালে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আগে থেকেই বোঝাপড়া ছিল—ফ্যাসিবাদ পতনের পর সবাই মিলে নির্বাচন ও সরকার গঠন করা হবে। কিন্তু বিএনপি আন্দোলনের শরিকদের সঙ্গে কোন আলোচনা ছাড়াই ২৭২ আসনে এককভাবে প্রার্থী ঘোষণা করায় আন্দোলনশীল দলগুলোর ভেতরে ‘একটা ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।

বৃহস্পতিবার পটুয়াখালীর গলাচিপা সফরকালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নুর বলেন, গতকাল আমরা বৈঠকে বসেছিলাম। সবাই বলেছে—যেহেতু আমরা একসঙ্গে আন্দোলন করেছি এবং বিএনপি জাতীয় সরকারের ঘোষণা দিয়েছিল, তাই শরিক দলগুলোর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতেই হবে। জুলাই আন্দোলনে যারা ছিল—জামায়াতসহ ৮ দলীয় জোট অন্যান্য দলও যেন সংসদে যেতে পারে, বিএনপিকে সেই ভূমিকা নিতে হবে। স্থিতিশীল রাষ্ট্র ও সরকার গঠনের জন্য তাদের প্রতিনিধিত্ব রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

তিনি বলেন,  একটা সমন্বিত জোট বা আসন সমঝোতা হবে। যেসব দলের প্রধান বা গুরুত্বপূর্ণ নেতা আছেন—সেসব আসনে অন্য কোনো প্রার্থী থাকবে না। এক থেকে দেড়শো আসন সমঝোতার ভিত্তিতে নির্বাচন হতে পারে, বাকিগুলোতে উন্মুক্ত নির্বাচন। আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে আমরা শিগগিরই একটা ঐক্যমতে পৌঁছাতে পারবো।

সদ্য পদত্যাগী ছাত্র উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের গণধিকার পরিষদে যোগদানের প্রসঙ্গে নুর বলেন, আসিফ মাহমুদের রাজনৈতিক হাতে খড়ি হয়েছে ছাত্র অধিকার পরিষদের মাধ্যমে। অনেকেই ভিন্নমতের কারণে বাইরে আছে, অনেকে আবার যোগাযোগ করছে—পুরনো ঘরে ফিরতে। অনেকে ইতোমধ্যে ফিরেছেন, আমরা তাদের স্বাগত জানিয়েছি। সজীব ভূঁইয়া যদি আসেন তাকেও ওয়েলকাম করবো। তিনি কুমিল্লার মুরাদনগর বা ঢাকা ১০–১২—যেখান থেকে নির্বাচন করতে চান, আমরা তাকে সর্বোচ্চ সহায়তা করব।

নির্বাচন প্রসঙ্গে নুর বলেন, আমরা হয়তো নির্বাচনী জোট করতে পারি, বা আসন সমঝোতা করতে পারি। উদ্দেশ্য একটাই—সকলকে নিয়েই আমরা নির্বাচন করতে চাই। একটি জাতীয় ঐক্যমতের সরকার গঠনের মধ্য দিয়ে আগামী পাঁচ বছর স্থিতিশীল সরকার গঠন করে দেশকে এগিয়ে নিতে চাই।

বৃহস্পতিবার রাত ৮টায় বকুলবাড়িয়া ইউনিয়ন কলেজ মাঠে পথসভায় তিনি আরও বলেন, আমরা রাজনীতির মাঠে ফুটবল হতে আসিনি, প্লেয়ার হয়ে এসেছি। বাপ-দাদার কোটায় আসিনি—নিজের যোগ্যতায়, সংগ্রাম করে, রক্ত দিয়ে রাজনীতির মাঠ ও সংগঠন দাঁড় করিয়েছি। আমরা ভুঁইফোড় দল না—নিবন্ধিত দল। ইতোমধ্যে দুই শতাধিক আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছি, আরও কিছু আসনের ঘোষণা দুই-এক দিনের মধ্যেই আসবে।

তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা ও নিয়মনীতি আছে—সব রাজনৈতিক দলকে তা মানতে হবে। আমরা চাই অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন। যে নির্বাচন হবে না ‘আমি-ডামি’ নির্বাচন, রাতে ব্যালট ভরে রাখা হবে না, কেন্দ্রে গেলে বলা হবে না ‘আপনার ভোট হয়ে গেছে’। সেই নির্বাচন আবার বাংলাদেশে আসবে না।

ব্যক্তিগত সমালোচনা নিয়ে নুর বলেন, যারা বাজে ভাষায় সমালোচনা করছে—বাস্তবতা বলছি, তারা আমাদের লেভেলের না। মানসিকতা, ব্যক্তিত্ব, রাজনীতি—কোন জায়গাতেই আমাদের ধারে কাছে নেই তারা। তাদের জবাব দিয়ে আমরা মুখ খারাপ করবো না। আমাদের সাহস ও শক্তির জায়গা জনগণ। জনগণের বিরুদ্ধে গিয়ে কোনো রাজনৈতিক দল আর বাংলাদেশে টিকতে পারবে না।

সভাপতিত্ব করেন ইউনিয়ন কমিটির মো. জুয়েল খান। উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট শিরিন আক্তার সেলি, যুব অধিকার পরিষদের জেলা সহসভাপতি মহিবুল্লাহ এনিম, গলাচিপা উপজেলা আহ্বায়ক আলহাজ্ব হাফিজুর রহমান, সদস্য সচিব জাকির মুন্সি প্রমুখ।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম