শিশু সাজিদ ট্র্যাজেডি
যারা গর্ত খুঁড়েছে তাদের অবহেলায় সন্তান হারালাম
তানোর (রাজশাহী) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১২ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৭:৩৬ পিএম
গভীর নলকূপের সরু গর্ত দিয়ে গভীরে পড়ে যাওয়া শিশু সাজিদকে (ইনসেটে) উদ্ধারে ফায়ার সার্ভিসের অভিযান। বৃহস্পতিবার রাজশাহীর তানোরের কোয়েলহাট পূর্বপাড়া গ্রামে -যুগান্তর
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
পরিত্যক্ত অগভীর নলকূপের গর্তে পড়ে নিখোঁজ শিশু সাজিদকে ৩৩ ঘণ্টা পর উদ্ধার করা হয়। এর আধাঘণ্টা পর তার মৃত্যু ঘোষণা করা হয়। এ ঘটনায় মাটি খননকারীদের বিচার চেয়েছে সাজিদের পরিবার।
বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১১টার দিকে রাজশাহীর তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে কোয়েলহাট পূর্বপাড়া গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসা হয় সাজিদের লাশ। সাজিদকে গভীর নলকূপের ৪২ ফুট মাটি খনন করে ৩৩ ঘণ্টা পর উদ্ধার করেন ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা।
সাজিদের লাশ বাড়িতে নিয়ে আসা হলে কথা হয় তার বাবা রাকিব উদ্দীনের সঙ্গে। এ সময় তিনি বলেন, বাড়ির পাশে যারা গর্ত খুঁড়েছে তাদের দোষ বা অবহেলায় আমি সন্তান হারালাম। প্রশাসনের কাছে বিচার চাই, সঠিক যেটা, সেটা আমাকে পাইয়ে দেবেন। আমি ফুটফুটে একটা সন্তান হারিয়েছি। আমি গরিব মানুষ, আমার কিছু করণীয় নাই; কিন্তু গর্ত খুঁড়ে অবহেলায় বন্ধ না করায় এ ক্ষতি হলো। তাদের এ অবহেলার জন্য আমার সন্তান হারালাম।
পাশের গ্রাম থেকে উদ্ধার তৎপরতা দেখতে আসা আমিনুল ইসলাম বলেন, যারা হাউজিং (গর্ত) করেছে, এটা ভরাট করা তাদেরই কাজ। অথচ বছর ধরে ফেলে রেখেছে। পাইপের মুখে তারা অন্য কিছু দিত, একটা বস্তু দিত বা পাইপের মুখ বেঁধে রাখত অথবা তারা যদি একটা নিশানা দিত। তারা কিছুই দেয়নি। গর্ত করে ফেলে রেখেছে। এ অবহেলার জন্য সন্তান হারাল বাবা-মা। আমি প্রশাসনের কাছে এর বিচার চাই।
সাজিদের মা রুনা বেগম বলেন, যে গভীর নলকূপ স্থাপন করা হয়েছিল সেটি পাশের গ্রামের ওছির আলী নামে এক ব্যক্তি অনুমোদন ছাড়াই নিজ উদ্যোগে খনন করেছিলেন। পরে সেটিতে পানি না ওঠায় পরিত্যক্ত হয়। তবে সেই গর্ত তিনি ভরাট করেননি। ওছির আলীর অবহেলার কারণে আমি সন্তান হারালাম। আমি তার বিচার চাই ও ক্ষতিপূরণ দাবি করছি।
এ বিষয়ে তানোর থানার ওসি মোহাম্মাদ শহীদুজ্জামান বলেন, শিশু সাজিদ ট্র্যাজেডির ঘটনা মর্মান্তিক। কেউ বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে ঘটনার পর থেকে অগভীর নলকূপ স্থাপনকারী বা গর্ত খননকারী ওছির আলী পলাতক থাকায় এ ব্যাপারে তার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাঈমা খান বলেন, সাজিদ ট্র্যাজেডি আমরা সারাক্ষণ মনিটরিং করেছি। মৃত সাজিদের বাড়ি গিয়ে নগদ অর্থ ও শুকনা খাবার এবং কম্বল দিয়ে তার বাবা ও মায়ের সঙ্গে কথা বলে সান্ত্বনা দিয়েছি।
