হত্যার ৩ দিনেও মামলা নেয়নি পুলিশ, চলছে গড়িমসি
কালীগঞ্জ (গাজীপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:২৯ এএম
নিহত কিশোর সিফাত। ছবি: যুগান্তর
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
গাজীপুরের কালীগঞ্জে সিফাত নামের এক কিশোরকে জোরপূর্বক বিয়ারের সঙ্গে ইয়াবাসহ বিভিন্ন নেশাদ্রব্য মিশিয়ে খাইয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্তরা পলাতক রয়েছে বলেও জানা গেছে।
এদিকে চাঞ্চল্যকর ঘটনার ৩ দিন অতিবাহিত হলেও মামলা নিতে নানা তালবাহানা করছে বলে অভিযোগ থানা পুলিশের বিরুদ্ধে।
নিহতের ময়নাতদন্ত শেষে বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) রাত ৮টায় ভাটিরা হাফিজিয়া মাদ্রাসা মাঠে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে ওই রাতেই তাদের পারিবারিক কবরস্থানে লাশ দাফন করা হয়।
কিশোর সিফাত (১৬) উপজেলার বক্তারপুর ইউনিয়নের ভাটিরা দক্ষিণপাড়া (ডেউয়ান) জালাল উদ্দিনের ছেলে।
নিহতের বাবা জালাল উদ্দিন যুগান্তরকে বলেন, ছেলেকে হারিয়ে ৩ দিন ধরে অভিযোগ নিয়ে কালীগঞ্জ থানায় ছোটাছুটি করছি। পুলিশ মামলা আমলে নিতে নানা তালবাহানা করছে। আসামিদের সঙ্গে যোগসাজসেই মামলা নিতে গড়িমসি করছেন থানা পুলিশ। আমার ছেলেকে পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।
নিহতের স্বজনরা জানান, সিফাত তার মা-বাবার সঙ্গে ঢাকায় থাকতো। মঝেমধ্যে বাড়িতে আসতো। চলতি বছরের ২৬ অক্টোবর বিকালে ঘুরতে যাওয়ার কথা বলে সিফাতের বন্ধুরা উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যায়। পরে রাত আনুমানিক ৮টার দিকে অজ্ঞাতনামা কোনো এক জায়গায় নিয়ে সেন্টার বিয়ারের সঙ্গে নেশা জাতীয় কেমিক্যাল মিশিয়ে জোরপূর্বকভাবে সিফাতকে পান করানো হয়। পরে রাত ১০টার দিকে তাকে তার বড় আব্বা (চাচা) ইব্রাহিম বেপারীর ঘর থেকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। পরের দিন (২৭ অক্টোবর) ভোরে তাকে ঢাকা সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে সেখান থেকে ঢাকা ইউনাইটেড হেলথ কেয়ারে নিয়ে যায়। সেখানে তারা অবস্থার অবনতি হলে অবশেষে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। দীর্ঘ ১ মাস ১৬ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর ১১ ডিসেম্বর সকাল ৭টার দিকে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে সিফাত। আমরা এই হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।
তারা আরাও জানান, ৩ বছর আগে অভিযুক্ত তামিমের বাবা ইয়ামিন নিহত সিফাতের বাবা জালাল উদ্দিনকে সৌদি আরবে চাকরি দেওয়ার কথা বলে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে তাকে ভালো কোম্পানিতে কাজ দিতে পারেননি ইয়ামিন। অবশেষে দারিদ্রতার কারণে জালাল উদ্দিন অবৈধভাবে দুই বছর প্রবাসে থেকে খালি হাতে দেশে ফেরেন।
বিষয়টি নিয়ে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ একটি আপস মীমাংসা করে দেয়। একে কেন্দ্র করে শুরু হয় তাদের শত্রুতা। সেই শত্রুতার বলি হলো ১৬ বছরের অবুঝ কিশোর সিফাত। এমনই অভিযোগ তার পরিবারের।
এদিকে ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত তামিম, ইমন, ইমরান, প্রিন্স ও আলিফসহ আরও ৪-৫ জন পলাতক।
এ ঘটনায় নিহতের চাচা জোবায়ের বাদী হয়ে উল্লেখিত আসামিদের নাম উল্লেখ করে ২৫ নভেম্বর কালীগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তাতেও কোনো প্রতিকার পায়নি বলেও জানিয়েছেন নিহতের পরিবারের লোকজন।
এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ থানার ওসি মো. জাকির হোসেন যুগান্তরকে বলেন, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।

