‘চোর’ সন্দেহে গণপিটুনিতে বৃদ্ধ নিহত: বাড়িওয়ালাসহ আটক ৪
নবীনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮:২৫ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলায় চুরির সন্দেহে গণপিটুনিতে মো. সাহেদ আলী নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। রোববার (২১ ডিসেম্বর) ভোররাতে উপজেলার উত্তর কাইতলা ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের কোনাউর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত সাহেদ আলী (৬০) উপজেলার সেমন্তঘর গ্রামের বাসিন্দা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শনিবার রাত ৩টার দিকে কোনাউর গ্রামের মোহাম্মদ আলীর বাড়ির দক্ষিণ ভিটার টিনশেড ঘরের সিঁধ কেটে ৪-৫ জন লোক ভেতরে প্রবেশ করে। মালামাল নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় বাড়ির মালিক মোহাম্মদ আলীর স্ত্রী আনোয়ারা বেগম একজনকে জাপটে ধরেন। এ সময় ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে ওই ব্যক্তি হাত ফসকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে বাড়ির লোকজন ‘চোর চোর’ বলে চিৎকার শুরু করেন। চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে বাড়ির পাশের সড়কে সাহেদ আলীকে ধরে ফেলে এবং এলোপাতাড়ি মারধর করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গণপিটুনির একপর্যায়ে সাহেদ আলী সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়েন। পরে সকাল ৬টা ৪০ মিনিটের দিকে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
বাড়ির মালিকের পুত্রবধূ মুসলিমা আক্তার দাবি করেন, চোরচক্রটি আমাদের ঘর থেকে প্রায় এক ভরি ওজনের স্বর্ণালংকার, দুটি অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন এবং নগদ ২০ হাজার টাকা নিয়ে গেছে।
এদিকে একই রাতে পাশের আরুব আলীর বাড়িতেও সিঁধ কেটে চুরির ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে। ওই বাড়ির লোকজন ঘুমিয়ে থাকায় বিষয়টি তাৎক্ষণিক টের না পেলেও সকালে তারা দেখেন ঘর থেকে নগদ প্রায় ৩০ হাজার টাকা চুরি হয়েছে।
খবর পেয়ে নবীনগর থানা পুলিশ সকালে ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, নিহতের মাথায় আঘাত ও শ্বাসরোধের কারণে মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাড়ির মালিক মোহাম্মদ আলীসহ চারজনকে আটক করা হয়েছে।
নবীনগর থানার ওসি মো. রফিকুল ইসলাম জানান, মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। মামলার প্রস্তুতি চলছে।
