নেত্রকোনার বারহাট্টায় ধর্ষণের শিকার এক কিশোরী (১৪) মা হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।  

সোমবার (২২ ডিসেম্বর) সকাল ৮টার দিকে নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে ছেলে সন্তানের জন্ম দেন ওই কিশোরী। 

এর আগে সর্বশেষ গত ৫ এপ্রিল ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। পরে মেয়েটির বাবা বাদী হয়ে চন্দ্রপুর গ্রামের মো. গোলাম কিবরিয়া (২৮) নামে এক যুবককে প্রধান আসামি করে দুজনের নামে মামলা করেন। 

মামলার এজাহার ও ভুক্তভোগীর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ওই কিশোরীর সঙ্গে প্রতিবেশী গোলাম কিবরিয়ার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। পরে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তাকে একাধিকবার ধর্ষণ করেন কিবরিয়া। তাকে আরেক প্রতিবেশী পারুল আক্তার (৪০) সহায়তা করেন। 

সর্বশেষ গত ৫ এপিল দুপুরে পারুল আক্তার কৌশলে ভুক্তভোগীকে ডেকে নিজের ঘরে নিয়ে যান। সেখানে অবস্থান করা কিবরিয়াকে রেখে বের হয়ে ঘরের দরজা লাগিয়ে তিনি বাইরে অপেক্ষা করেন। সেই সময় ওই কিশোরীকে আবারও ধর্ষণ করেন কিবরিয়া। এতে মেয়েটি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে কিবরিয়ার কাছে বিয়ের দাবি জানানো হয়। এ বিষয়ে তিনি অস্বীকৃতি জানান। পরে কিশোরীর বাবা বাদী হয়ে গত ৩ সেপ্টেম্বর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। ওই রাতে পুলিশ পারুল আক্তারকে গ্রেফতার করে। তবে এখন পর্যন্ত কিবরিয়াকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।

নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) মাজহারুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, ওই কিশোরী স্বাভাবিক প্রসবে সন্তান জন্ম দিয়েছেন। মা ও নবজাতক উভয়েই সুস্থ আছে। আমরা তাদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিচ্ছি।

ওই কিশোরীর মা বলেন, আমরা গরিব মানুষ। আমার স্বামী ভাড়ায় অন্যের অটোরিকশা চালান। কিবরিয়া আমার মেয়েকে ধর্ষণ করে সর্বনাশ করেছে। তার ছেলেসন্তান জন্ম নিয়েছে। পুলিশ এখনো কিবরিয়াকে গ্রেফতার করতে পারেনি। মামলা তুলে নিতে তার পরিবারের লোকজন বিভিন্ন সময় আমাদের হুমকি ভয়-ভীতি দেখাচ্ছে। আমরা ন্যায়বিচার চাই।

স্থানীয় বেসরকারি সংস্থা স্বাবলম্বী উন্নয়ন সমিতির অধিকার ও সুশাসন প্রকল্পের ব্যবস্থাপক কোহিনূর বেগম বলেন, ধর্ষণের শিকার মেয়েটি এখন মা হয়েছে। ঘটনার পর থেকেই আমরা স্বাবলম্বীর পক্ষ থেকে চিকিৎসা ও আইনি সহায়তা দিয়ে আসছি। অভিযুক্ত কিবরিয়াকে গ্রেফতার করতে ব্যর্থ হয়েছে পুলিশ। এখন ধর্ষণের শিকার শিশুটির গর্ভজাত সন্তানের দায়িত্ব কে নেবে? 

তিনি বলেন, আমরা চাই আসামিকে দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনাসহ নবজাতক শিশুটি যেন পিতৃপরিচয় পায়।    

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মামলার পর থেকে অভিযুক্ত কিবরিয়া এলাকা ছেড়ে পালিয়েছেন।

তবে বারহাট্টা থানার ওসি শিবিরুল ইসলাম বলেন, অভিযুক্ত কিবরিয়াকে গ্রেফতারে পুলিশি কার্যক্রম চলমান।