Logo
Logo
×

সারাদেশ

প্রেমিকের মুখে ‘মা’ ডাক শুনে স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যা

Icon

নজরুল ইসলাম পলাশ, মাদারীপুর

প্রকাশ: ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:২৬ পিএম

প্রেমিকের মুখে ‘মা’ ডাক শুনে স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যা

প্রতীকী ছবি

মাদারীপুরের শিবচরে তুচ্ছ কারণে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে দশম শ্রেণীর ছাত্রী সুমাইয়া। আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলা দায়ের করা হলেও এখনো কেউ গ্রেফতার হয়নি।  উলটো মামলা উঠিয়ে নেওয়ার জন্য প্রেমিক রিফাত উকিলসহ তার লোকজনের হুমকির শিকার সুমাইয়ার পরিবার। সঙ্গে যোগ দিয়েছেন সুমাইয়ার দূরসম্পর্কের মামা খায়ের চোকদার। পুলিশও বিষয়টি মিমাংসার মাধ্যমে সমাধান করতে চাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন সুমাইয়ার মামা।

পুলিশ ও সুমাইয়ার পরিবার সূত্রে জানা গেছে, সুমাইয়া নানা বাড়িতে থেকে স্থানীয় একটি হাইস্কুলে দশম শ্রেণীতে পড়ত। স্কুলে যাওয়া-আসার পথে তার পরিচয় হয় স্থানীয় রিফাত উকিলের সঙ্গে এবং ধীরে ধীরে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বাড়িতে নিয়ে সুমাইয়াকে মায়ের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয় রিফাত। একপর্যায়ে সুমাইয়া বিয়ের জন্য চাপ দিলে রিফাত বিয়ে করতে অস্বীকার করে। বিষয়টি সুমাইয়ার দূরসম্পর্কের মামা আবুল খায়েরকে জানায় রিফাত।

গত ১৭ নভেম্বর মামা আবুল খায়ের ও রিফাতসহ স্থানীয় কয়েকজন সুমাইয়ার নানা বাড়িতে গিয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং বাড়ির সবাইকে উৎখাত করার হুমকি দেয়। পরদিন সুমাইয়া রিফাতের মায়ের কাছে গিয়ে বিয়ের কথা বলেন এবং নানা বাড়ির সবাইকে হুমকির বিচার চান। রিফাতের মা সুমাইয়াকে আশ্বাস দিয়ে ফেরত পাঠান। পরে ১৯ নভেম্বর রিফাতসহ তার লোকজন আবারও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে ও হুমকি দেয়।

পরবর্তীতে মামা খায়ের বাড়ির উঠানে বসে সুমাইয়া ও নানা বাড়ির সবাইকে ডেকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং রিফাতকে দিয়ে সুমাইয়াকে ‘মা’ ডাকান। বিষয়টি মেনে নিতে পারেনি স্কুলছাত্রী সুমাইয়া। দুই পক্ষ যখন তর্কে ব্যস্ত, তখন সুমাইয়া নানা বাড়িতে ঢুকে ঘরের দরজা আটকে দিয়ে আড়ার সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে। বাড়ির লোকজন দরজা ভেঙে তার লাশ উদ্ধার করেন। এ সময় রিফাতসহ অন্যরা পালিয়ে যায়।

সুমাইয়ার মামি শুভতারা বলেন, প্রথম দিন আবুল খায়ের মামা রিফাত ও তার লোকজন নিয়ে এসে আমাদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি দেয়। যেদিন সুমাইয়া আত্মহত্যা করে, সেদিন তিনি উপস্থিত ছিলেন না। তবে তার পরিবারের লোকজন আমাদের বাড়িতে এসে উঠানে আমাদের ডেকে আবারও গালিগালাজ করে ও হুমকি দেয়। এরপর রিফাতকে দিয়ে সুমাইয়াকে ‘মা’ ডাকানো হয়। রিফাত সুমাইয়াকে ‘মা’ ডাকার সঙ্গে সঙ্গে সে আমাদের ঘরে গিয়ে দরজা আটকিয়ে আত্মহত্যা করে।     

আরও পড়ুন
শীতে কাঁপছে কুড়িগ্রাম

সুমাইয়ার মামা মামুন বলেন, আমাদের বাড়িতে পুলিশ বিষয়টি মিমাংসার মাধ্যমে সমাধান করার কথা বলেছে। এছাড়া রিফাতদের পরিবারের লোকজনও মিমাংসা করতে হুমকি দিচ্ছে। আমরা মিমাংসায় না গেলে আমাদের মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হচ্ছে।

সুমাইয়ার দূরসম্পর্কের মামা আবুল হোসেন বলেন, সুমাইয়া মারা যাওয়ার বিষয়টি শুনেছি। আমি বাড়িতে ছিলাম না এবং মামলায়ও আমার কোনো নাম নেই। শুধু শুধু আমাকে দোষারোপ করা হচ্ছে।

মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আসামিদের ধরার চেষ্টা চলছে। মামলায় কয়েকজনের নাম উল্লেখ আছে এবং আরও কয়েকজন অজ্ঞাতনামা আসামি রয়েছে। তদন্ত করে জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম