Logo
Logo
×

সারাদেশ

বড় পুকুরিয়া কয়লা খনি বন্ধের আশঙ্কা

Icon

পার্বতীপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:২৩ পিএম

বড় পুকুরিয়া কয়লা খনি বন্ধের আশঙ্কা

ছবি: সংগৃহীত

‎বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি বন্ধের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এর বিশেষ কারণগুলো হিসেবে বলা হচ্ছে— খনি সন্নিকটে কয়লা ভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে লক্ষ্যমাত্রাভিত্তিক কয়লার ব্যাবহার হ্রাস ও বিদ্যুৎ উৎপাদন না হওয়া, কয়লার যথাযথ ব্যাবহার না হওয়ায় কোল ইয়ার্ডে জায়গা অসংকুলান ও বিদ্যুৎ বিভাগ কয়লার মুল্য চুক্তি মোতাবেক না দেওয়া বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

এক সময় কয়লার একটি বৃহৎ সিষ্টেম লসের কারণে খোলাবাজারে কয়লা বিক্রি বন্ধ করে দেওয়া হয়। নিয়ম করা হয় বড় পুকুরিয়ার কয়লা সমুদয় ব্যাবহার করা হবে খনি নিকটস্থ তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে। যেখানে কয়লার প্রয়োজন প্রতিদিন দুই থেকে আড়াই হাজার মে. টন। আর খনিতে কয়লা উৎপাদনের পরিমাণ প্রতিদিন সাড়ে তিন হাজার মে. টন । দায়িত্বশীল সুত্রগুলো বলছে কয়লার উৎপাদন ঠিক থাকলেও বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র সে পরিমাণ কয়লা নিতে পারছেনা। অপরদিকে বাইরের খোলা বাজারে কয়লা বিক্রির নীতিমালায় কর্তৃপক্ষ পরিবর্তন আনতে পারছেনা। ফলে উৎপাদন বিপনন সংরক্ষণ ও ব্যাবহারে জঠিলতার কারণে কয়লা খনি বন্ধ করে দিতে চায় আমলাতান্ত্রিক একটি চক্র। খনি প্রশাসনের একাধিক সূত্র থেকে এ দাবি করা হয়েছে।

‎এদিকে খনিকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষার্থে সোমবার (২২ ডিসেম্বর) দুপুরে শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের আহবানে সংবাদ সন্মেলন করা হয়েছে। ইউনিয়ন কার্যালয়ের এ সন্মেলনে অংশ নেন খনির ভু অভ্যন্তরের শ্রমিক ইউনিয়নও। বলা হয়েছে, খনি থেকে উত্তোলিত কয়লা আর কোল ইয়ার্ডে ধারন করা যাচ্ছেনা। মূল কারণ হিসাবে জানানো হয় খনি সন্নিকটের তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র কয়লার যথাযথ ব্যাবহার করতে পারছেনা। সেখানকার প্রতিদিন চাহিদা দুই থেকে আড়াই হাজার মে. টন। যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে দুইটি ইউনিট বন্ধ থাকে। একটি ইউনিট চলে চড়াই উৎরাই নিয়ে। বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয় মাত্র ৬০ থেকে ৭০ মেঘাওয়াট । অথচ তিন ইউনিট সমন্বয়ে তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে উৎপাদন লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারিত ছিল ৫২৫ মেঘাওয়াট। এখন ২৭৫ ও ১২৫ মেগাওয়াটের ইউনিট দুটি বন্ধ কয়েক বছর ধরে।

সূত্র বলছে, এ ব্যাপারে কারোর মাথা ব্যাথা নেই। খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে এখন কয়লার প্রয়োজন মাত্র ৭শ থেকে ৮শ মে. টন। কথা হয় তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী আবু বক্কর সিদ্দিকের সঙ্গে। তিন জানান, আমরা কি করব প্লান্ট নির্মানকালীন বিশেষজ্ঞ পর্যায়ের কিছু বিষয় থাকতে পারে। নচেৎ ইউনিটগুলোতে যান্ত্রিক ত্রুটি নিত্য সঙ্গী হবে কেন। সব মিলে কয়লা খনি ও তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সার্ফেস ভাগে কয়লার ধারন ক্ষমতা না থাকায় খোলা বাজারে কয়লা বিক্রির দাবি তুলেছেন শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা। তারা বলছেন বিক্রি না হলে উৎপাদন হবে কিভাবে।

অপর দিকে কয়লার বিক্রি মূল্য ১৭৬ ডলার থেকে কমিয়ে কখনো ১০৪ কখনো ১০৫ ডলার করা হচ্ছে। এতে উৎপাদন খরচের সঙ্গে বিক্রি মূল্যের সমন্বয়হীনতা দেখা দিয়েছে। যে কারণে খনি বন্ধের জোরালো আশংকা করছেন শ্রমিকরা। এক পর্যায় বিদ্যুৎ বোর্ডের তিন কর্মকর্তার অপসারণ দাবি করেন তারা। সংবাদ সন্মেলনে বক্তব্য দেন বড় পুকুরিয়া কয়লা খনি শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি আবুল কাসেম শিকদার, লোড আনলোড কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি শওকত আলী, ভু-অভ্যন্তর শ্রমিক ইউনিয়ন সভাপতি রবিউল ইসলাম। লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সাবেক শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।

এ বিষয় জানতে চাইলে কয়লা খনির এমডি আবু তালেব ফরায়েজি বলেন, আমি কিছু জানিনা। তবে পরে শুনতে পেরেছি সংবাদ সন্মলনের কথা। বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি বোর্ড চেয়ারম্যান ও বিদ্যুৎ সচিব ফারজানা মমতাজের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করা হলে তা সম্ভব হয়নি।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম