Logo
Logo
×

সারাদেশ

২৫ হাজার মানুষকে বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা, সেই চিকিৎসক এবার এমপি প্রার্থী

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৩:০৯ পিএম

২৫ হাজার মানুষকে বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা, সেই চিকিৎসক এবার এমপি প্রার্থী

মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করার পর প্রখ্যাত মেডিসিন ও হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. কর্নেল (অব) জেহাদ খান। ছবি: সংগৃহীত

কিশোরগঞ্জ-৩ (তাড়াইল–করিমগঞ্জ) আসন থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন দেশের প্রখ্যাত মেডিসিন ও হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. কর্নেল (অব) জেহাদ খান। তিনি এবার জামায়াত মনোনিত সংসদ সদস্য প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িপাল্লা প্রতীকে নির্বাচন করবেন।

দলীয় সূত্র জানিয়েছে, ইতিমধ্যে ডা. জেহাদ খান তাড়াইল-করিমগঞ্জে ৬২টি ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প করেছেন। সপ্তাহের চারদিন তিনি গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ঘুরে ঘুরে মানুষকে স্বাস্থ্যসেবা দেন।  ইতিমধ্যে দুই উপজেলায় প্রায় ২৫ হাজার মানুষ তার কাছ থেকে বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা পেয়েছেন।

বুধবার করিমগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাহমিনা আক্তারের কাছ থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য অধ্যাপক ডা. কর্নেল (অব.) জেহাদ খান।  এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন তাড়াইল উপজেলা জামায়াতের আমির হাবিবুর রহমান ভূইয়া, করিমগঞ্জ উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা আবুল কাসেম ফজলুল হক, নায়েবে আমির মাওলানা জোবায়ের আহমেদ, সেক্রেটারি মাওলানা নাজিম উদ্দিন, তাড়াইল উপজেলা সেক্রেটারি এস. এম. মাসুদস, শিবিরের সাবেক জেলা সভাপতি খায়রুল ইসলাম, শিবিরের করিমগঞ্জ উপজেলা সভাপতি মোসাব্বির প্রমুখ।

করিমগঞ্জ উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা নাজিম উদ্দিন বলেন, ইতিমধ্যে ডা. জেহাদ খান তাড়াইল-করিমগঞ্জে ৬২টি ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প করে এলাকায় ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছেন। এতে দুই উপজেলায় প্রায় ২৫ হাজার মানুষকে বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা দিয়েছেন। 

তিনি বলেন, গরিবের ডাক্তার খ্যাত জেহাদ খান ইতিমধ্যে করিমগঞ্জ ও তাড়াইলের বিনামূল্যে ছানি অপারেশন করে শতাধিক মানুষকে চোখের আলো ফিরিয়ে দিয়েছেন। আগামী মাসে আরও ১৩০ জন রোগীকে বিনামূল্যে ছানি অপারেশন করার প্রস্তুতি চলছে। একই সঙ্গে শিশুদের ফ্রি খতনা ক্যাম্প করেও তিনি দুই উপজেলায় আলোচিত। দলমত, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সবাই তার ব্যবহারে মুগ্ধ। তার জয়ের ব্যাপারে আমরা শতভাগ আশাবাদী। 

কে এই জেহাদ খান? 

জেহাদ খান ১৯৫৭ সালে ১১ মার্চ কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার জাফরাবাদ ইউনিয়নে একটি সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহন করেন। 

সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের শ্যালক হিসেবে পরিচিত হলেও তার পূর্বসূরীদের রয়েছে বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক ক্যারিয়ার। জেহাদ খানের নানা যুক্তফ্রন্টের এমলএ বা এমপি ছিলেন। ১৯২৩ সালে তিনি বিএ পাশ করে আকর্ষনীয় সরকারি চাকরিতে যোগদান না করে কিশোরগঞ্জ আজিম উদ্দিন উচ্চবিদ্যালয়ে শিক্ষকতায় নিয়োজিত হন।  কিশোরগঞ্জের শহীদি মসজিদ ও জামিয়া ইমদাদিয়া মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠাতাদের অন্যতম ছিলেন তিনি।

জেহাদ খানের আপন খালা হাফেজা আসমা ছিলেন জামায়াতের মহিলা সংসদ সদস্য। 

জেহাদ খানের শিক্ষাজীবন শুরু হয় কিশোরগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী দ্বীনি শিক্ষাপ্রাতিষ্ঠান আল জামিয়াতুল ইমদাদিয়ায়। সেখানে তিনি ৫ বছর পড়াশুনা করার পর আজিম উদ্দিন উচ্চবিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি হন। ওই বছরই তিনি ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়ে কৃতিত্বের পরিচয় দেন। ৮ম শ্রেণিতেও তিনি ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পান।

জেহাদ খান ১৯৭৬ সালে এসএসসি পরীক্ষায় ঢাকা বোর্ডে ২১তম স্থান অধিকার করেন। এসএসসি পরীক্ষায় পুরো কিশোরগঞ্জ জেলায় ১ম হওয়ায় ‘ রায়মহাশয়” স্বর্ণপদক লাভ করেন।

১৯৭৮ সালে ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজ থেকে স্টার মার্ক পেয়ে এইসএসসি পাশ করে ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন। কিছুদিন পর তৎকালীন সোভিয়েত রাশিয়ার সরকারি বৃত্তি নিয়ে চিকিৎসাবিদ্যা অধ্যয়নের জন্য তিনি রাশিয়া গমন করেন।

১৯৮৬ সালে তাজিকিস্তান থেকে কৃতিত্বের সাথে ডাক্তারি পাশ করেন । ১৯৮৮ সালে তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে মেডিকেল কোরে যোগদান করেন। ১৯৯৮ সালে তিনি এসসিপিএস পাশ করে ঢাকা সিএমএইচে কার্ঢিওলজি বিভাগে যোগদান করেন। ২০০০ সালে উচ্চতর প্রশিক্ষনের জন্য জার্মান সরকারের বৃত্তি নিয়ে জার্মানী গমন করেন।

২০০০-২০০৬ তিনি আফ্রিকার আইভরিকোস্টে জাতিসংঘ বাহিনীতে মেডিসিন বিশেষজ্ঞের দায়িত্ব পালন করেন।

দীর্ঘ ২৬ বছর সামরিক কর্মকর্তা হিসেবে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন দেশে চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত ছিলেন জেহাদ খান। এছাড়া ঢাকা আর্মড ফোর্সেস মেডিকেল কলেজসহ দেশের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজে অধ্যাপনা করেছেন তিনি। 

২০১৪ সালে তিনি স্বেচ্ছায় সেনাবাহিনী থেকে অবসর গ্রহণ করেন।  অবসরগ্রহণের পর তিনি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীতে পুরোপুরি নিজেকে নিয়োজিত করেন। 

২০১৬ সাল থেকে এখন পর্যন্ত তিনি ঢাকার ধানমন্ডি ইবনে সিনা কার্ডিয়াক সেন্টারে সিনিয়র কার্ডিওলজিস্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম