Logo
Logo
×

সারাদেশ

মিথ্যা অপবাদ সইতে না পেরে ভাই-বোনের বিষপান

Icon

রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:২০ পিএম

মিথ্যা অপবাদ সইতে না পেরে ভাই-বোনের বিষপান

কুড়িগ্রামের রৌমারীতে স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির লোকজনের মিথ্যা অপবাদ সইতে না পেরে ভাই ও বোন বিষপান করেন। পরে বোনের মৃত্যু হয়েছে।

তবে ভাইয়ের অবস্থার অবনতি হলে তাকে রৌমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক ড. জান্নাতুল ফেরদৌস।

এ ঘটনায় মৃতের মা বাদী হয়ে রৌমারী থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।

বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) উপজেলার দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়নের চর গয়টাপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

মৃত তামান্না আক্তার তুলি (২৫)। গুরুত্বর অসুস্থ তার আপন বড় ভাইয়ের নাম আনারুল ইসলাম। তাদের পিতার নাম সায়দার হোসেন।

পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গত ৮ বছর আগে উপজেলার দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়নের ঝগড়ারচর গ্রামের আইনাল মাস্টারের ছেলে রাশেদুল ইসলামের সঙ্গে একই ইউনিয়নের খেতারচর গ্রামের পালিত (দত্তক) বাবা মজারত হোসেনের মেয়ে তামান্না আক্তার তুলির বিয়ে হয়। পরে দীর্ঘ দিন ধরে তাদের সুখের সংসার চলছিল।

এ দিকে আর্থিক অনটনের অভাবে স্বামী-স্ত্রী উভয় ঢাকার একটি টেক্সটাইলে কাজ করেন। পরে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বনিবনা না হওয়ায় তামান্না তার গ্রামের জন্মদাতা পিতা সায়দার হোসেনের বাড়িতে চলে আসে। পরে স্থানীয়ভাবে উভয়পক্ষ নিয়ে সালিশি বৈঠকের মাধ্যমে মীমাংসার চেষ্টা করা হলেও তা ব্যর্থ হয়।

এদিকে তামান্না আক্তার তুলির স্বামী এবং তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন মিলে আপন বড়ভাইয়ের সঙ্গে পরকীয়া অভিযোগ তোলেন। পরে অপবাদ সইতে না পেরে বৃহস্পতিবার সকালে সবার অগোচরে ভাই-বোন একসঙ্গে বিষপান করেন। বিষয়টি বুঝতে পেরে পরিবারের লোকজন তাদের উদ্ধার করে রৌমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে বোনের মৃত্যু হয়।

অপরদিকে ভাইয়ের অবস্থার অবনতি হলে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়।

মৃতের বড় বোন শাহিনা আক্তার জানান, আমার ভাই ও বোনের নামে তার স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির লোকজন মিথ্যা অপবাদ দেওয়ায় তারা বিষপান করেছে। এর বাইরে আমি কিছু জানি না।

মৃত তামান্নার শ্বশুর আইনাল মাস্টার বলেন, আমার ছেলের বউ বিষপান করে মৃত্যুর বিষয় শুনেছি। তবে কী কারণে বিষপান করেছে তা জানি না।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, ভাই আনারুলের সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কের বিষয়ে প্রতিবাদ করলে ২ মাস আগে ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়িতে পালিয়ে আসে আমার ছেলের স্ত্রী তামান্না। এরপর আমাদের সঙ্গে আর যোগাযোগ হয়নি।

এদিকে নিহত তুলির পালিত (দত্তক) বাবা মজারত হোসেন বলেন, ছোট থেকে বড় করে তুলিকে বিয়ে দিয়েছি। জামাইয়ের সঙ্গে পালিত মেয়ের কি নিয়ে ঝগড়া হয়েছে তা আমি কিছুই জানি না। তবে তাদের সঙ্গে প্রায় ৬ মাস ধরে যোগাযোগ নেই। এদিকে বিষপান করে তুলির মৃত্যু হয়েছে বলে জানতে পেরেছি।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে নিহত তুলির স্বামী রাশেদুল ইসলামের ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বারটি বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

রৌমারী থানার ওসি কাওসার আলী বলেন, লাশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে সুরুতহাল শেষে রৌমারী থানায় নেওয়া হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য কুড়িগ্রাম মর্গে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। এ বিষয়ে আইনি প্রক্রিয়া চলমান।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম