কুয়াশার চাদরে অবরুদ্ধ পদ্মা-যমুনা নৌপথ
যুগান্তর প্রতিবেদন, মানিকগঞ্জ
প্রকাশ: ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:২১ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
অব্যাহত ঘন কুয়াশার কারণে দেশের দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে রাজধানীর অন্যতম প্রধান যোগাযোগ মাধ্যম পাটুরিয়া–দৌলতদিয়া ও আরিচা-কাজিরহাট নৌপথে ফেরি চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেছে।
শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) রাত ৯টা ৪০ মিনিট থেকে দুর্ঘটনার আশঙ্কায় এ নৌরুটে সব ধরনের ফেরি চলাচল সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়।
ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় উভয় ঘাটে শত শত যানবাহন আটকা পড়েছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রী ও যানবাহনের চালকরা। পাশাপাশি ঘন কুয়াশার কারণে মাঝ পদ্মা নদীতে যানবাহন ও যাত্রীবোঝাই চারটি ফেরি অবরুদ্ধ অবস্থায় নোঙর করে আছে।
মাঝ নদীতে আটকে থাকা ফেরিগুলো হলো— রো-রো ফেরি ভাষা শহীদ বরকত, কেরামত আলী, বিএস ডি গোলাম মাওলা এবং রো-রো ফেরি বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান।
বাংলাদেশ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা এরিয়া অফিসের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) আব্দুস সালাম যুগান্তরকে জানান, ঘন কুয়াশায় দৃশ্যমানতা অত্যন্ত কমে যাওয়ায় ফেরি মাস্টারদের সিদ্ধান্তে যাত্রী ও নৌযানের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে সাময়িকভাবে সব ধরনের ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।
ফেরি সেক্টরের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানান, কুয়াশার ঘনত্ব এতটাই বেশি ছিল যে ফেরির ব্রিজ থেকে কাছাকাছি কোনো বস্তুই স্পষ্টভাবে দেখা যাচ্ছিল না। এমন পরিস্থিতিতে চলাচল অব্যাহত রাখলে বড় ধরনের দুর্ঘটনার ঝুঁকি ছিল।
বিআইডব্লিউটিসি সূত্রে জানা গেছে, রাত ৯টা ৪৫ মিনিট থেকে পাটুরিয়া প্রান্তে পৃথক ঘাট এলাকায় একাধিক ফেরি নোঙর করে রাখা হয়েছে। পাটুরিয়া ৩ নম্বর ঘাটে নোঙর করে আছে রো-রো ফেরি শাহ পরান ও খান জাহান আলী। ৪ নম্বর ঘাটে রয়েছে রো-রো ফেরি বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন ও ফেরি কুমিল্লা।
অন্যদিকে দৌলতদিয়া প্রান্তের ৩ নম্বর ঘাটে রয়েছে একটি বাইগার, ৪ নম্বর ঘাটে রো-রো ফেরি বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীর ও ফেরি ঢাকা। এছাড়া ৭ নম্বর ফেরিঘাটে নোঙর করে আছে রো-রো ফেরি শাহ মখদুম, ফেরি এনায়েতপুরী ও ইউটিলিটি ফেরি হাসনা হেনা।
এদিকে আরিচা–কাজিরহাট নৌপথেও একই কারণে ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। আরিচা এরিয়া অফিসের ব্যবস্থাপক আবু আব্দুল্লাহ রনি জানান, রাত সাড়ে ৯টা থেকে এ নৌপথে ফেরি চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে। আরিচা প্রান্তে হামিদুর রহমান ও ধানসিঁড়ি নামের দুটি ফেরি নোঙর করে আছে। রো-রো ফেরি শাহ আলী কাজিরহাট প্রান্তে এবং ফেরি চিত্রা কাজিরহাট ফেরিঘাটের অদূরে যমুনা নদীতে নোঙর করে রয়েছে।
ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় ঢাকা থেকে দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন জেলার সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ঘাট এলাকায় পণ্যবাহী ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহনের দীর্ঘ সারি তৈরি হয়েছে। বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এটি প্রাকৃতিক কারণে সৃষ্ট সাময়িক সমস্যা। কুয়াশার ঘনত্ব কমে দৃশ্যমানতা স্বাভাবিক হলেই তাৎক্ষণিকভাবে ফেরি সার্ভিস পুনরায় চালু করা হবে।
