প্রতিটা নেক কাজের সুগন্ধি আছে : ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ
তাড়াইলে ইসলাহী ইজতেমা সমাপ্ত
যুগান্তর রিপোর্ট
১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ২২:২৩:২৪ | অনলাইন সংস্করণ
প্রতিটা নেক কাজের সুগন্ধি আছে বলে মন্তব্য করেছেন শোলাকিয়া ঈদগাহের গ্র্যান্ড ইমাম, আওলাদে রাসূল হযরত ফিদায়ে মিল্লাত আসআদ মাদানী রহ.-এর খলিফা, শাইখুল হাদীস আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ।১০ ফেব্রুয়ারি রোববার দুপুরে কিশোরগঞ্জের তাড়াইলের বেলঙ্কা-ইছাপশর, জামিয়াতুল ইসলাহ ময়দানে চারদিনব্যাপি ইসলাহী ইজতেমার আখেরি মোনাজাতের আগে আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ এসব কথা বলেন।
রোববার দুপুরে আল্লামা মাসঊদের আহ্বানে চারদিন ব্যাপী কিশোরগঞ্জের তাড়াইল ইসলাহী ইজতেমা আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে সমাপ্ত হয়। আখেরি মোনাজাতে হাজার হাজার মানুষের আমীন ধ্বনিতে তাড়াইলের বেলঙ্কা-ইছাপশর ভারী হয়ে উঠেছিল।
আখেরী মোনাজাতের আগে হিদায়াতি ফিদায়ে মিল্লাত আসআদ মাদানী রহ.-এর খলিফা, শাইখুল হাদিস আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ বলেন, নারীকে আমরা সম্মান করতে জানি না। নবীজী ঘরের কাজও করে দিতেন। নারীর উপর আমাদের সহমর্মী হতে হবে। জিকিরের শব্দ ঘরেও পৌঁছে দিতে হবে।
পৃথিবীর সবচেয়ে মধুর শব্দ ‘আল্লাহ ও আল্লাহর নামের জিকির’ উল্লেখ করে ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ বলেন, আল্লাহ নামের জিকিরের স্বাদ কখনো কমে না, বরং যত বেশি বেশি করবে ততো স্বাদ বৃদ্ধি পাবে। আল্লাহর নামের জিকিরে কখনো বিরক্তিও আসে না। যে ব্যক্তি যত বেশি জিকির করবে সে আল্লাহর কাছে ততো প্রিয় হতে থাকবে। দুনিয়া ও আখেরাতে আল্লাহ ও আল্লাহর নামের জিকিরের চাইতে মধুর কোন শব্দ নেই।
আল্লাহ নামের জিকির কারো জন্য অনেক সহজ, কারো জন্য মাত্রাতিরিক্ত কঠিন উল্লেখ করে শোলাকিয়া ঈদগাহের গ্র্যান্ড ইমাম বলেন, জিহ্বায় আল্লাহ নাম আসাটা অনেক বেশি কঠিন। কতটা কঠিন সেটা বলে বোঝানো যাবে না। বুঝতে হলে ফেরাউন, আবু জেহেল, আবু লাহাব’কে জিজ্ঞেস করতে হবে। আর আল্লাহর প্রিয় বান্দা এবং মুমিনদের জন্য আল্লাহ নামের জিকিরটা খুবই সহজ। মুমিনের জন্য জিকিরের চাইতে সহজ কোন শব্দ নেই। আমরা আল্লাহ কাছে শুকরিয়া আদায় করি, আল্লাহ আমাদের জিহ্বায় তার নাম আসাটা সহজ করে দিয়েছেন। আমরা সহজেই তার নামের জিকির করতে পারি।
প্রত্যেকটা নেক কাজের আলাদা আলাদা সুগন্ধি আছে মন্তব্য করে বাংলাদেশ জমিয়তুল উলামার চেয়ারম্যান বলেন, মানুষ যখন কোন নেক কাজ করে, তখন এই নেক কাজের সুগন্ধি ছড়ায়। আমাদের নাক বন্ধ তাই আমরা পাই না। কিন্তু ফেরেশতারা এই নেক কাজে সুগন্ধি পায়। তারা এই সুগন্ধি পেয়ে আল্লাহ কাছে দুআ করে- ‘হে আল্লাহ তোমার অমুক বান্দা নেক কাজ করে আমাদেরকে সুগন্ধি দিয়েছে। আমাদেরকে শান্তি দিয়েছে। তুমি তাকে ক্ষমা করে দাও। তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব করে দাও। তিনি বলেন, প্রত্যেটা গুণাহের কাজেরও আলাদা আলাদা দুর্গন্ধ আছে। মানুষ যখন মিথ্যা বলে, গীবত করে, জিনা-ব্যভিচার করে, বিভিন্ন ধরনের গুণাহে লিপ্ত হয়, তখন মানুষের শরীরে, বাতাসে এসব পাপাচারে দুর্গন্ধ ছড়ায়। আর ফেরেশতারা দুর্গন্ধ সহ্য করতে না পেরে আল্লাহর কাছে দুআ করে বলে- ‘হে আল্লাহ ওরা আমাদেরকে কষ্ট দিচ্ছে। মিথ্যা কথা বলে বেড়েচ্ছে। তুমি তাদের উপর অভিশাপ বর্ষণ করো।’
আমাদের গুণাহের আধিক্যে বাতাস খারাপ হয়ে গেছে দাবি করে আল্লামা মাসঊদ বলেন, বাতাস ভালো-মন্দের প্রভাব গ্রহণ করে। মানুষ যখন ভালো কাজ করে, আল্লাহ আল্লাহ জিকির করে, মালিকের ইবাদতে মগ্ন হয়, গুণাহ নাফরমানী করা থেকে বিরত থাকে, তখন বাতাসে এসব নেক কাজের সুঘ্রাণ ছড়ায়। কিন্তু এখন তো আমার শুধু খারার কাজ করি। আমাদের পাপের কারণে বাতাস খারাপ হয়ে গেছে। তাই এখন আমাদের দায়িত্ব হকের আওয়াজ দিয়ে বাতাসকে ভারী করা। আল্লাহ আল্লাহ নামের জিকির করে বাতাসকে ভালো করা।
চারদিন ব্যাপী ইসলাহী ইজতেমায় এ ছড়াও আলোচনা করেন, ভারতের মাওলানা আফফান মনসুরপুরী, মাওলানা ইয়াহইয়া মাহমুদ, মুফতি মুহাম্মদ আলী, মাওলানা ইমদাদুল্লাহ কাসেমী, মুফতি আবদুল কাইয়ুম খান, মাওলানা আরীফ উদ্দীন মারুফ, মুফতি তাজুল ইসলাম কাসেমী, মাওলানা আবদুর রহীম কাসেমী, মুফতি ইবরাহীম শিলাস্থানী, মাওলানা হোসাইন আহমদ, মাওলানা রশিদ আহমদ মকবুল, মাওলানা উবায়দুর রহমান ফরিদী, মাওলানা মঈনুল হক চৌধুরী, মাওলানা হোসাইন আহমদ বাহুবলী, মাওলানা সদরুদ্দীন মাকনুন প্রমুখ। এ বছর মাদানী সিলসিলার খেলাফতলাভে ধন্য হয়েছেন মাওলানা আবদুর রহীম কাসেমী, মাওলানা মুশাররফ হোসাইন ও মাওলানা হাবিবুর রহমান।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
তাড়াইলে ইসলাহী ইজতেমা সমাপ্ত
প্রতিটা নেক কাজের সুগন্ধি আছে : ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ
প্রতিটা নেক কাজের সুগন্ধি আছে বলে মন্তব্য করেছেন শোলাকিয়া ঈদগাহের গ্র্যান্ড ইমাম, আওলাদে রাসূল হযরত ফিদায়ে মিল্লাত আসআদ মাদানী রহ.-এর খলিফা, শাইখুল হাদীস আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ।১০ ফেব্রুয়ারি রোববার দুপুরে কিশোরগঞ্জের তাড়াইলের বেলঙ্কা-ইছাপশর, জামিয়াতুল ইসলাহ ময়দানে চারদিনব্যাপি ইসলাহী ইজতেমার আখেরি মোনাজাতের আগে আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ এসব কথা বলেন।
রোববার দুপুরে আল্লামা মাসঊদের আহ্বানে চারদিন ব্যাপী কিশোরগঞ্জের তাড়াইল ইসলাহী ইজতেমা আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে সমাপ্ত হয়। আখেরি মোনাজাতে হাজার হাজার মানুষের আমীন ধ্বনিতে তাড়াইলের বেলঙ্কা-ইছাপশর ভারী হয়ে উঠেছিল।
আখেরী মোনাজাতের আগে হিদায়াতি ফিদায়ে মিল্লাত আসআদ মাদানী রহ.-এর খলিফা, শাইখুল হাদিস আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ বলেন, নারীকে আমরা সম্মান করতে জানি না। নবীজী ঘরের কাজও করে দিতেন। নারীর উপর আমাদের সহমর্মী হতে হবে। জিকিরের শব্দ ঘরেও পৌঁছে দিতে হবে।
পৃথিবীর সবচেয়ে মধুর শব্দ ‘আল্লাহ ও আল্লাহর নামের জিকির’ উল্লেখ করে ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ বলেন, আল্লাহ নামের জিকিরের স্বাদ কখনো কমে না, বরং যত বেশি বেশি করবে ততো স্বাদ বৃদ্ধি পাবে। আল্লাহর নামের জিকিরে কখনো বিরক্তিও আসে না। যে ব্যক্তি যত বেশি জিকির করবে সে আল্লাহর কাছে ততো প্রিয় হতে থাকবে। দুনিয়া ও আখেরাতে আল্লাহ ও আল্লাহর নামের জিকিরের চাইতে মধুর কোন শব্দ নেই।
আল্লাহ নামের জিকির কারো জন্য অনেক সহজ, কারো জন্য মাত্রাতিরিক্ত কঠিন উল্লেখ করে শোলাকিয়া ঈদগাহের গ্র্যান্ড ইমাম বলেন, জিহ্বায় আল্লাহ নাম আসাটা অনেক বেশি কঠিন। কতটা কঠিন সেটা বলে বোঝানো যাবে না। বুঝতে হলে ফেরাউন, আবু জেহেল, আবু লাহাব’কে জিজ্ঞেস করতে হবে। আর আল্লাহর প্রিয় বান্দা এবং মুমিনদের জন্য আল্লাহ নামের জিকিরটা খুবই সহজ। মুমিনের জন্য জিকিরের চাইতে সহজ কোন শব্দ নেই। আমরা আল্লাহ কাছে শুকরিয়া আদায় করি, আল্লাহ আমাদের জিহ্বায় তার নাম আসাটা সহজ করে দিয়েছেন। আমরা সহজেই তার নামের জিকির করতে পারি।
প্রত্যেকটা নেক কাজের আলাদা আলাদা সুগন্ধি আছে মন্তব্য করে বাংলাদেশ জমিয়তুল উলামার চেয়ারম্যান বলেন, মানুষ যখন কোন নেক কাজ করে, তখন এই নেক কাজের সুগন্ধি ছড়ায়। আমাদের নাক বন্ধ তাই আমরা পাই না। কিন্তু ফেরেশতারা এই নেক কাজে সুগন্ধি পায়। তারা এই সুগন্ধি পেয়ে আল্লাহ কাছে দুআ করে- ‘হে আল্লাহ তোমার অমুক বান্দা নেক কাজ করে আমাদেরকে সুগন্ধি দিয়েছে। আমাদেরকে শান্তি দিয়েছে। তুমি তাকে ক্ষমা করে দাও। তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব করে দাও। তিনি বলেন, প্রত্যেটা গুণাহের কাজেরও আলাদা আলাদা দুর্গন্ধ আছে। মানুষ যখন মিথ্যা বলে, গীবত করে, জিনা-ব্যভিচার করে, বিভিন্ন ধরনের গুণাহে লিপ্ত হয়, তখন মানুষের শরীরে, বাতাসে এসব পাপাচারে দুর্গন্ধ ছড়ায়। আর ফেরেশতারা দুর্গন্ধ সহ্য করতে না পেরে আল্লাহর কাছে দুআ করে বলে- ‘হে আল্লাহ ওরা আমাদেরকে কষ্ট দিচ্ছে। মিথ্যা কথা বলে বেড়েচ্ছে। তুমি তাদের উপর অভিশাপ বর্ষণ করো।’
আমাদের গুণাহের আধিক্যে বাতাস খারাপ হয়ে গেছে দাবি করে আল্লামা মাসঊদ বলেন, বাতাস ভালো-মন্দের প্রভাব গ্রহণ করে। মানুষ যখন ভালো কাজ করে, আল্লাহ আল্লাহ জিকির করে, মালিকের ইবাদতে মগ্ন হয়, গুণাহ নাফরমানী করা থেকে বিরত থাকে, তখন বাতাসে এসব নেক কাজের সুঘ্রাণ ছড়ায়। কিন্তু এখন তো আমার শুধু খারার কাজ করি। আমাদের পাপের কারণে বাতাস খারাপ হয়ে গেছে। তাই এখন আমাদের দায়িত্ব হকের আওয়াজ দিয়ে বাতাসকে ভারী করা। আল্লাহ আল্লাহ নামের জিকির করে বাতাসকে ভালো করা।
চারদিন ব্যাপী ইসলাহী ইজতেমায় এ ছড়াও আলোচনা করেন, ভারতের মাওলানা আফফান মনসুরপুরী, মাওলানা ইয়াহইয়া মাহমুদ, মুফতি মুহাম্মদ আলী, মাওলানা ইমদাদুল্লাহ কাসেমী, মুফতি আবদুল কাইয়ুম খান, মাওলানা আরীফ উদ্দীন মারুফ, মুফতি তাজুল ইসলাম কাসেমী, মাওলানা আবদুর রহীম কাসেমী, মুফতি ইবরাহীম শিলাস্থানী, মাওলানা হোসাইন আহমদ, মাওলানা রশিদ আহমদ মকবুল, মাওলানা উবায়দুর রহমান ফরিদী, মাওলানা মঈনুল হক চৌধুরী, মাওলানা হোসাইন আহমদ বাহুবলী, মাওলানা সদরুদ্দীন মাকনুন প্রমুখ। এ বছর মাদানী সিলসিলার খেলাফতলাভে ধন্য হয়েছেন মাওলানা আবদুর রহীম কাসেমী, মাওলানা মুশাররফ হোসাইন ও মাওলানা হাবিবুর রহমান।