অধ্যক্ষকে হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে ফুঁসছে মাগুরা
মাগুরা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৭ মার্চ ২০১৯, ০১:৫৬ পিএম
অধ্যক্ষকে হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে ফুঁসছে মাগুরা
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
অধ্যক্ষ আবদুর রউফ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছে মাগুরা। ‘পাননু যতক্ষণ বেঁচে আছে কোনো শিক্ষার্থী যাবো না বইয়ের কাছে, যে স্থানে পাননুকে পাও আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দাও’ ইত্যাদি স্লোগানসংবলিত নানান পোস্টার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাটবাজারে ছেয়ে গেছে।
বিচারের দাবিতে প্রতিদিনই চলছে কোনো না কোনো কর্মসূচি।
এদিকে ঘটনার ৫ দিন পর মঙ্গলবার নিহতের ছোট ভাই আবদুল ওয়াহাব মিলন মোহম্মদপুর থানায় বালিদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান পাননু মিয়াকে প্রধান আসামি করে ১২ জনের নামে মামলা দায়ের করেছেন। তবে এখনও কাউকে পুলিশ গ্রেফতার করতে পারেনি।
গত ২১ মার্চ বৃহস্পতিবার রাতে মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার বড়রিয়া গ্রামে অধ্যক্ষ আবদুর রউফের ওপর সন্ত্রাসী হামলা চালানো হয়। ওইদিন রাতেই তাকে মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সোমবার বিকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার কাদিরপাড়া সম্মিলনি আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আবদুর রউফ একই সঙ্গে মহম্মদপুর উপজেলার হাজী মোসলেম উদ্দীন টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড বিএম কলেজের পরিচালনা কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্বপালন করছিলেন।
বিএম কলেজের বেশকিছু মূল্যবান গাছ জোরপূর্বক কেটে নেয়ার কারণে ৭ জানুয়ারি মাওলানা আবদুর রউফ বালিদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান পাননু মোল্যার নামে আদালতে মামলা দায়ের করেন। এ মামলার কারণে সাম্প্রতিক সময়ে অন্তত তিনবার তার ওপর হামলা করা হয়েছে। সর্বশেষ ২১ মার্চ তারিখে তাকে বড়রিয়া বাজার এলাকায় একা পেয়ে চেয়ারম্যান পাননু মোল্যা লোকজন নিয়ে নির্মমভাবে জখম করে বলে জানা গেছে।
মহম্মদপুরের ঘোষপুর গ্রামের হাজী মোসলেম উদ্দিনের ছেলে জনপ্রিয় শিক্ষক আবদুর রউফের মৃত্যুর পর প্রায় প্রতিদিনই শিক্ষক সমাজের পক্ষ থেকে মাগুরা সদর, শ্রীপুর ও মহম্মদপুরে বিক্ষোভ চলছে। সাধারণ শিক্ষার্থীরা হত্যাকারীর বিচার চেয়ে বিভিন্ন স্থানে পোস্টার লিফলেট প্রচার করেছে।
এদিকে বৃহস্পতিবার মাগুরার সব মাদ্রাসা শিক্ষক-কর্মচারী, শিক্ষার্থী এবং উলামা-মাশায়েখের পক্ষ থেকে শহরে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি নেয়া হয়েছে।
মাদ্রাসা শিক্ষক সংগঠন বাংলাদেশ জমিয়াতুল মুদাররেসিন মাগুরা জেলা শাখার সভাপতি এবিএম মাহফুজুর রহমান অধ্যক্ষ আবদুর রউফ বৃহস্পতিবারের বিক্ষোভ কর্মসূচি ও মানববন্ধন সম্পর্কে বলেন, আমরা হত্যাকারীদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি ঘোষণা করেছি।
এদিকে আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশের কোনো তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন হত্যা মামলার বাদী আবদুল ওয়াহাব মিলন। তিনি বলেন, আসামি গ্রেফতার পড়ে থাক, উল্টো চেয়ারম্যানের বাড়ি ঘিরে পুলিশ তাদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে।
মোহম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) লিটন সরকার বলেন, ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্ত চেয়ারম্যানসহ মামলার অপরাপর আসামিরা পলাতক রয়েছে। তবে তাদের গ্রেফতারে সর্বাত্মক চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
