পাবনায় কবিরাজের দেয়া গুড় খেয়ে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু
পাবনা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৪ আগস্ট ২০১৯, ০৪:০৯ পিএম
স্কুলশিক্ষক হাফেজ মো.আব্দুর রাজ্জাক। ফাইল ছবি
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
পাবনায় জাতীয় পার্টির এক স্থানীয় নেতার ছেলের চুরি হয়ে যাওয়া টাকা উদ্ধারের উদ্দেশে কবিরাজের ঝাড়-ফুঁক দেয়া গুড় খেয়ে এক স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু হয়েছে।
মারা যাওয়া ওই স্কুলশিক্ষক হাফেজ মো.আব্দুর রাজ্জাক (৩২)পাবনার সুজানগর আল এহসান একাডেমির শিক্ষক ছিলেন। এ ছাড়াও তিনি পৌরসভার নিউগির বনগ্রাম মসজিদের ইমাম ছিলেন।
শনিবার ভোরে সুজানগর হাসপাতালে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। হাফেজ আব্দুর রাজ্জাক উপজেলার দুলাই ইউনিয়নের চরগোবিন্দপুর গ্রামের মৃত ছগির প্রাং-এর ছেলে।
সুজানগর উপজেলা হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার(আরএমও) ডা. রকি জানান, শুক্রবার রাত ১০টার দিকে ডায়রিয়া ও বমি হওয়ায় আব্দুর রাজ্জাক হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসাধীন ছিলেন। শনিবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে ঘুমন্ত অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় আব্দুর রাজ্জাকের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে দাবি করে সুজানগর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন তার ভাই আব্দুল মমিন প্রাং।
লিখিত অভিযোগে আব্দুল মমিন জানান, আব্দুর রাজ্জাক ২ বছর আগে বিয়ে কোর স্ত্রী সাথী খাতুনকে নিয়ে পৌরসভার নিউগির বনগ্রাম গ্রামের মোহাম্মদ আলী মদনার বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। তিনি স্থানীয় আল এহসান একাডেমিতে শিক্ষকতা করার পাশাপাশি স্থানীয় মসজিদের ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। এরই মধ্যে উক্ত বাসার মালিক উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি মোহাম্মদ আলী মদনার ছেলে মামুনের বাড়ি থেকে গত ১৯ আগস্ট তিন লাখ টাকা চুরি হয়। এ চুরির ঘটনায় আব্দুর রাজ্জাকের স্ত্রী সাথী খাতুন জড়িত বলে অভিযোগ করেন মামুন। এ নিয়ে আব্দুর রাজ্জাক ও তার স্ত্রীর ওপর মানসিক চাপ প্রয়োগ করতে থাকে তারা।
এর মধ্যে শুক্রবার দুপুরে মামুন একজন কবিরাজ নিয়ে আসে। ওই কবিরাজ গুড় (মিঠাই) ঝাড়-ফুঁক দিয়ে আব্দুর রাজ্জাককে খাওয়ায়। এরপরই মসজিদে আসর ও মাগরিব নামাজ আদায় করার পর বমি ও পাতলা পায়খানা হলে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন আব্দুর রাজ্জাক।
এ অবস্থায় তাকে শুক্রবার রাতেই সুজানগর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার ভোরে ঘুমন্ত অবস্থায় আব্দুর রাজ্জাকের মৃত্যু হয়।
এ বিষয়ে মামুন দাবি করে, তার টাকা হারিয়ে যাওয়ার পর একসঙ্গে কবিরাজের ঝাড়-ফুঁক দেয়া গুড় ১৬ জন খেয়েছে তাদের কোনো সমস্যা হয়নি।
সুজানগর থানা অফিসার ইনচার্জ শরিফুল আলম জানান, মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাবনা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলেই জানা যাবে স্বাভাবিক মৃত্যু না অন্য কোনো কারণে আব্দুর রাজ্জাকের মৃত্যু হয়েছে।
