চলন্ত বাস থেকে ফেলে হত্যা: সুপার সনি বাসের সুপারভাইজার- সহকারী গ্রেফতার
ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২২ ডিসেম্বর ২০১৯, ০২:১৪ এএম
ছবি: যুগান্তর
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলায় ভাড়া নিয়ে তর্কের কারণে যাত্রী মো. সুমন হোসেনকে (৩৪) ধাক্কা দিয়ে ফেলে হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত বাসের সুপারভাইজার ও হেলপারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সনি পরিবহনের বাসটিকেও উদ্ধার করা হয়েছে।
শনিবার রাতে ঈশ্বরদী উপজেলা সদর থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের ধর্মদাহ গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে বাসের হেলপার নাসিম উদ্দিন (২২) এবং দৌলতপুরের গোড়ারপাড়া গ্রামের আনারুল ইসলামের ছেলে বাসের সুপারভাইজার রোকনুজ্জামান (৩৮)।
ঈশ্বরদী থানার ওসি বাহাউদ্দিন ফারুকী জানান, পাবনার ঈশ্বরদীতে গত ১৯ ডিসেম্বর ভাড়া নিয়ে বিবাদের জের ধরে চলন্ত বাস থেকে ধাক্কা দিয়ে সড়কে ফেলে দিলে যাত্রী সুমন হোসেন নিহত হন। কুষ্টিয়ার দৌলতপুর এলাকার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের শনিবার রাতে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়েছে।
শনিবার দুপুরে নিহতের স্ত্রী রুমা খাতুন বাদী হয়ে ঈশ্বরদীর সুপার সনি পরিবহনের সুপারভাইজার রোকনুজ্জামান ও নাসিম উদ্দিনসহ দুই হেলপারকে আসামি করে ঈশ্বরদী থানায় একটি মামলা করেন।
মামলার এজাহারে জানা যায়, সুমন হোসেন গত ১৯ ডিসেম্বর রাত সাড়ে ৮টার দিকে রূপপুর মোড় হতে নিজ বাড়ি ভেড়ামারা যাওয়ার উদ্দেশ্যে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা মেহেরপুরে গাংনীগামী সুপার সনি (ঢাকা মেট্রো- ব ১৫-১৭৬৮) পরিবহনে উঠেন।
এ সময় বাসের হেলপারদের সঙ্গে ভাড়া নিয়ে বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে বাসের দুই সহযোগী তাকে মারপিট করে।
বাসটি লালন শাহ সেতুর পাকশী টোল প্লাজা পার হতেই সহযোগী দুজন সুমনকে বাস থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। চালক সুমনের শরীরের ওপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে চলে যান। চাকায় পিষ্ট হয়ে সুমন গুরুতর আহত হন।
পরে হাইওয়ে পুলিশের সহযোগিতায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
ঈশ্বরদী থানার ওসি বাহাউদ্দীন ফারুকী জানান, সিসিটিভি ফুটেজ দেখে গাড়িটির নম্বর শনাক্ত করা হয়। এই সূত্র ধরেই মামলা এবং তড়িৎ তদন্ত চালিয়ে আসামি শনাক্তপূর্বক তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে।
নিহত সুমন ঈশ্বরদীর পাকশী ইউনিয়নের ঝাউতলা গ্রামে শ্বশুরবাড়ির পাশে ভাড়া বাড়িতে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে থাকতেন। পাকশীর রূপপুর মোড়ে একটি খাবার হোটেলে কাজ করতেন তিনি।
সুমনের স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। সুমনই সংসারে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন। সুমনের মরদেহ শুক্রবার রাতে তার গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়ার ভেড়ামারার সাতবাড়িয়া গ্রামে দাফন করা হয়েছে।
