দ্বিতীয় দফা বন্যায় কুড়িগ্রামে পানিবন্দী সাড়ে ৩ লাখ মানুষ
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৫ জুলাই ২০২০, ০৪:১০ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
কুড়িগ্রামে দ্বিতীয় দফা বন্যায় জেলার ৬২ ইউনিয়নের ৫৩৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে সাড়ে ৩ লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।
ধরলা নদীর পানি কিছুটা কমলেও দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি। দ্বিতীয় দফা বন্যায় আগের তুলনায় অধিক পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।
মহাসড়কসহ উপজেলা কেন্দ্রিক ৫টি জায়গায় সড়কের উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে বলে সড়ক ও জনপদ অধিদফতর জানিয়েছে। নতুন করে তলিয়ে গেছে সদর উপজেলার ভোগডাঙ্গা, ঘোগাদহ ও পাঁচগাছী ইউনিয়নের ২৫টি গ্রাম।
অব্যাহত পানি বৃদ্ধির কারণে জেলা-উপজেলা শহরের সঙ্গে চরাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন হাজার হাজার মানুষ। বানভাসি মানুষের মাঝে খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি, শুকনো খাবার ও জ্বালানি সংকট দেখা দিয়েছে। উঁচু রাস্তা, বাঁধ ও আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে হাজার হাজার মানুষ। তবে নৌকার অভাবে অনেকেই নিরাপদ স্থানে যেতে পারছে না।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম জানান, কুড়িগ্রামের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি হয়েছে। বুধবার সন্ধ্যায় সেতু পয়েন্টে ধরলার পানি বিপৎসীমার ৮৪ সেন্টিমিটার, ব্রহ্মপুত্রের চিলমারী পয়েন্টে বিপৎসীমার ১০৩ সেন্টিমিটার ও নুনখাওয়া পয়েন্টে ৯৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
কুড়িগ্রাম সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আলী নুরায়েন জানান, জেলার ৫টি গুরুত্বপূর্ণ সড়কের উপর দিয়ে বন্যার পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
এর মধ্যে কুড়িগ্রাম-নাগেশ্বরী সড়ক, রৌমারী-তুরা সড়ক, সোনাহাট-মাদারগঞ্জ সড়ক, ভুরুঙ্গামারী-সোনাহাট সড়ক ও ভিতরবন্দ-মন্নেয়ারপাড় সড়কের কিছু অংশ পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। আমরা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় বালির বস্তা ও জিওব্যাগ দিয়ে ক্ষতি কমানোর চেষ্টা করছি।
সিভিল সার্জন ডা. হাবিবুর রহমান জানান, দ্বিতীয় দফা বন্যায় পানিতে ডুবে দুই শিশুসহ ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় জেলায় ৮৫টি মেডিকেল টিম কাজ করছে।
জেলা প্রশাসক রেজাউল করিম জানান, বন্যা দুর্গতদের উদ্ধারে নৌকা প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়া বানভাসিদের মাঝে খাদ্য সহায়তা প্রদান অব্যাহত রয়েছে।
কুড়িগ্রাম ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ইতোমধ্যে জেলা পর্যায়ে ৪শ’ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ এসেছে। এর মধ্যে ১৭০ মেট্রিক টন চাল উপজেলাগুলোতে উপ-বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এছাড়াও বরাদ্দ ১৩ লাখ টাকার মধ্যে ৪ লাখ টাকা, ৪ হাজার শুকনা প্যাকেটের মধ্যে ২ হাজার প্যাকেট, ২ লাখ টাকার শিশু খাদ্য ও ২ লাখ টাকার গো-খাদ্য উপজেলাগুলোতে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
