Logo
Logo
×

সারাদেশ

মিথ্যা মামলায় জনপ্রতিনিধিকে হয়রানীর অভিযোগ

Icon

বরিশাল ব্যুরো

প্রকাশ: ২৯ জুলাই ২০২০, ০৪:১৪ পিএম

মিথ্যা মামলায় জনপ্রতিনিধিকে হয়রানীর অভিযোগ

মিথ্যে ঘটনা সাজিয়ে মামলা দিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের নারী সদস্য ও তার ছেলেকে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। যুগান্তর

মিথ্যে ঘটনা সাজিয়ে মামলা দিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের নারী সদস্য ও তার ছেলেকে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে।

বুধবার বেলা ১২টায় শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত বরিশাল প্রেসক্লাবে লিখিত বক্তব্য পাঠকালে ভুক্তভোগী ও পিরোজপুর জেলার ইন্দুরকানী উপজেলার চন্ডিপুর ইউনিয়নের সংরক্ষিত ওয়ার্ডের সদস্য মোঃ লাকি বেগম দাবি করেন, পার্শ্ববর্তী ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের চক্রান্তে দায়ের করা এই মামলা তাকে ও তার পরিবারকে হয়রানি করার জন্য করা হয়েছে।  

তাই তিনি এই মামলা ও হয়রানি থেকে মুক্তির দাবি জানিয়েছেন। লিখিত বক্তব্য পাঠকালে লাকি বেগম জানান, তিনি জাতীয় পার্টি (জেপি) ইন্দুরকানী উপজেলার শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক। তার ছেলে সাগর (১৮) খুলনা সিটি কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করে বর্তমানে বাড়িতে রয়েছেন। ইন্দুরকানী উপজেলায় ৩টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত হলেও, পরবর্তীতে সেখানে ৫ টি ইউনিয়নে রুপান্তর করা হয়েছে।  

তিনি বলেন, প্রথমে তিনি বালিপাড়া ইউনিয়নের বাসিন্দা হলেও, ইউনিয়ন ভেঙ্গে বৃদ্ধি করায় বর্তমানে তিনি চন্ডিপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা। আর এই কারনে তিনিও চন্ডিপুর ইউনিয়নের আওতাভুক্ত ইউপি সদস্য হয়ে যান। আর বালিপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কবির হোসেন বয়াতির বাড়ি বালিপাড়া ইউনিয়নের মধ্যে হওয়ায় তিনি সেখানকার চেয়ারম্যান থেকে যান।

ইউনিয়ন পরিষদ ভেঙ্গে বিভক্ত হওয়ার আগেই বালিপাড়া ইউনিয়নে এলজিএসপি খাতে সাড়ে ১২ লাখ টাকার বরাদ্দ আসে। কিন্তু ইউনিয়নে বিভক্তি হওয়ার পরে সেই টাকার সবটুকুই চেয়ারম্যান বালিপাড়ায় রেখে দিতে চাইলে ন্যায্য হিস্যা অনুযায়ী অর্ধেক টাকা চন্ডিপুর ইউনিয়নে দেয়ার জন্য দাবি তুলি। নইলে রেজুলেশনেও সাক্ষর দিতে অপারগতা জানাই। এতে চেয়ারম্যান ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে দেখে নেয়ার হুমকি দেয়।
ইউপি সদস্য বলেন, গত ২৩ জুলাই আমার এলাকার বাসিন্দা ফয়সাল ফকিরের বাড়ি থেকে ৫৩ হাজার ৫ শত টাকা চুরি করে নিয়ে যায় দিনমজুর মাসুম শেখ। বিষয়টি ফয়সাল ফকির তাকে জানালে তিনি উভয় পক্ষকে ডাকেন এবং বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হন। এসময় দিনমজুর মাসুম শেখ তার মা মোনার বেগমের সামনে টাকা চুরির বিষয়টি স্বীকার করেন।
স্থানীয় মীমাংসাতে চুরি হওয়া টাকার মধ্যে ত্রিশ হাজার পরের দিন এবং ১ মাস পর এনজিও থেকে লোন নিয়ে বাকি ২০ হাজার টাকা ফেরত দেয়ার কথা বলে ছেলেকে নিয়ে বাড়িতে যান মোনারা বেগম।

কিন্তু পরের দিন মোনারা বেগম ও তার ছেলে না আসায় খোঁজ নিয়ে জানতে পারি তারা বালিপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কবির হোসেনের প্রত্যক্ষ প্ররোচনায় মিথ্যে ঘটনা সাজিয়ে থানায় একটি মামলা করেছেন। যেখানে তারা ১৯ বছরের মাসুম শেখকে ১৬ বছরের নাবালক দেখিয়ে অভিযোগ করেছেন, ‘ফয়সাল ফকিরের কিছু টাকা না পাওয়ার ভয়ে সেই টাকা বাহির করার জন্য মাসুম শেখকে মারধর ও শরীরে মরিচের গুড়া দিয়ে নির্যাতন করা হয়।’

এই ধরণের কোন ঘটনা না ঘটলেও মামলায় এমন তথ্য দিয়ে মূল ভুক্তভোগী ফয়সাল ফকির এবং ইউপি সদস্য লাকি বেগম ও তার ছেলে সাগরকে আসামী করা হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়েছে।

পাশাপাশি ইউপি সদস্যের স্বামী আনোয়ার হোসেনকে মামলায় আসামী না করার জন্য ইন্দুরকানী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) এএম মাহবুবুর রহমান ১০ হাজার টাকা দাবি করে। যেখানে ৮ হাজার টাকা দিয়ে আনোয়ার হোসেনকে আসামীর তালিকা থেকে বাদ দেয়া হয় বলে দাবি লাকি বেগমের।

তিনি আরো জানান, ইন্দুরকানী থানার ওসি হাবিবুর রহমান বিভিন্ন সময়ে মিথ্যে মামলা নেয়াসহ নানাভাবে জনসাধারণকে হয়রানি করেন। যার প্রতিবাদ করায় তিনিও তার ওপর ক্ষিপ্ত রয়েছেন। 

এ বিষয়ে ইন্দুরকানী থানার ওসি হাবিবুর রহমান জানান, শালিসের আগে কেউ বিষয়টি থানা পুলিশকে অবগত করেনি। যখন নির্যাতনের শিকার ছেলেটির মা আমাদের বিষয়টি জানায় এবং অভিযোগ দেয় তখনই আমরা বিষয়টি জানতে পারি। 
অভিযোগ পেয়ে প্রাথমিক তদন্তে নির্যাতনের ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। সেই সাথে ওই নারী ইউপি সদস্যের স্বামী নির্যাতনের ঘটনার সাথে জড়িত না থাকায় তাকে মামলায় আসামী করা হয়নি। এক্ষেত্রে যতো অভিযোগ তোলা হচ্ছে তা মিথ্যে। 
 

মামলা বরিশাল

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম