Logo
Logo
×

সারাদেশ

কুড়িগ্রামে নদীভাঙনে গৃহহীন আরও শতাধিক পরিবার

Icon

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৩ আগস্ট ২০২০, ১১:৩৮ এএম

কুড়িগ্রামে নদীভাঙনে গৃহহীন আরও শতাধিক পরিবার

কুড়িগ্রামে আবারও বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। ভারিবর্ষণ ও উজানের ঢলে কুড়িগ্রামে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।

গত ২৪ ঘণ্টায় ধরলায় ১০ ও ব্রহ্মপুত্রে ৪ সেন্টিমিটার পানি বেড়েছে। ধরলার পানি বিপৎসীমার মাত্র ২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে অর্ধশত চরের নিচু এলাকা আবারও প্লাবিত হয়েছে। নিমজ্জিত হয়েছে রোপা আমনসহ কিছু বাড়িঘর।

ধরলার ভাঙনে সদর উপজেলার সারডোব এলাকায় বিকল্প বাঁধের ৪ মিটার অংশ বিলীন হয়ে গেছে। প্রবল ভাঙন ও পানির তোড়ে টিকতে না পেরে ঘরবাড়ি  সরিয়ে নিচ্ছেন স্থানীয়রা। গৃহহীন মানুষ চলে যাচ্ছেন বাঁধ ও উঁচু রাস্তায়। গত ৪ দিনে জেলার বিভিন্ন এলাকায় নদী ভাঙনের শিকার হয়ে আরও শতাধিক পরিবার গৃহহীন হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সকালে সদর উপজেলার হলোখানা ইউনিয়নের সারডোব গ্রামে গিয়ে দেখা যায় তীব্র নদী ভাঙন শুরু হয়েছে এই পাড়ে। লোকজন ঘরবাড়ি সড়িয়ে নিচ্ছেন। ভাঙনকবলিতদের চোখে মুখে দিশেহারা অবস্থা। দীর্ঘদিনের বসতভিটা গিলে খাচ্ছে রাক্ষুসী ধরলা নদী। জমিজমাও খেয়ে ফেলেছে। এখন কোথায় যাবেন তারা। এ নিয়ে আশঙ্কা আর হতাশায় শূন্যচোখে তাকিয়ে আছেন। কিছুক্ষণ পরপর দীর্ঘশ্বাস আর আর্তনাদে ভারি হয়ে উঠছে পরিবেশ।

দুটি নৌকায় গৃহস্থালি মালামাল তুলছেন নুর হোসেন ও তার পরিবার। গতকাল ঘরবাড়ি সরিয়ে নিয়েছিলেন। আজ বাকি জিনিসপত্র নিয়ে যাচ্ছেন। কোথায় ঠাঁই নিয়েছেন- জানতে চাইলে তিনি জানান, রাস্তায় গিয়ে উঠছি। সে জায়গাতেও মানুষ বাধা দেয়।

এমন অবস্থা হয়েছে নুরুন্নবী, আলম মিয়া, এমদাদুল, নজীর হোসেন, নজরুল, ছলিম উদ্দীন ও বিধবা কছিমন বেওয়ার। সবাই এখন গৃহহীন। নিজেদের এবং সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে তারা আতংকিত।

এরই মধ্যে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বিকল্প বাঁধটির ৪০০ মিটার অংশ বিলীন হয়ে গেছে। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হবার পর  ডিঙি নৌকায় ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছেন গ্রামবাসী। এখন প্রচণ্ড ঘূর্ণিস্রোতে ভাঙছে পুরো গ্রাম। অনেকেই ঘরবাড়ি সরানোর মতো অর্থ জোগাড় করতে পারছেন না। আবার মাথাগোঁজার মতো ঠাঁই না থাকায় প্রায় সবাই বাঁধের রাস্তার উপর মালামাল স্তূপ করে রেখে একটি ছাপড়া তুলে আছেন।

বিষয়টি নিয়ে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুল ইসলাম জানান, সারডোবের ভাঙন প্রতিরোধে আপাতত বালুর বস্তা ফেলা হচ্ছে। পানি নেমে গেলে ৮০০ মিটার অংশ স্থায়ী তীর প্রতিরক্ষার কাজ করা হবে। তখন আর ভাঙনের সমস্যা থাকবে না। জেলায় চলতি বন্যায় ৩৭ কিমি বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ১৯টি পয়েন্টে ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড কাজ করছে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুল হাই সরকার জানান, চলতি বছর বন্যায় জেলায় পাঁচ শতাধিক পরিবার নদী ভাঙনে ভিটেবাড়ী হারিয়ে নি:স্ব হয়েছে। এ সংখ্যা প্রতিদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
 

কুড়িগ্রাম বন্যা

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম