শায়েস্তাগঞ্জে ভূমি অফিসের নির্মাণ শেষ হলেও অফিস চলে ওমেন্স কর্নারে
শায়েস্তাগঞ্জ (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৩ আগস্ট ২০২০, ০৪:৫৮ পিএম
হবিগঞ্জ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জে রাজিউড়া ইউনিয়নের ভূমি অফিসটি সুতাং বাজারের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত। পুরাতন অফিসটি ভেঙে নতুনভাবে প্রায় কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয় রাজিউড়া ইউনিয়ন ভূমি অফিস। পুরাতন অফিসের কার্যক্রম প্রায় দুই বছর যাবত অস্থায়ী কার্যালয় হিসেবে বাজারে নির্মিত ওমেন্স কর্নারেই চলছে।
নতুন অফিসের নির্মাণ কাজ প্রায় সম্পন্ন হলেও ঠিক কী কারণে এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হচ্ছে না, তার কারণ জানা যায়নি। এদিকে খুবই জরাজীর্ণ অবস্থায় অফিস করছেন ভূমি অফিসের কর্মকর্তারা। ওমেন্স কর্নারের সাঁটার দুইটা নষ্ট, যেকোনো সময় জরুরি কাগজপত্র হারিয়ে যেতে পারে। অনেক ক্ষেত্রেই গ্রাহকরা পাচ্ছেন না ডিজিটাল সেবা। অন্যদিকে বাজারের প্রাণকেন্দ্র ওমেন্স কর্নারে ভূমির কার্যক্রম করায় বাজারের ক্রেতা ও বিক্রেতাদের ও হয়রানির শিকার হতে হয়। সকাল ১০টায় ব্রাক্ষণডুরা থেকে খাজনা দিতে আসা বৃদ্ধ কবির মিয়াকে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।
সরেজমিন এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য রোববার (২৩ আগস্ট) সকাল ১০টা ৫ মিনিটে রাজিউড়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসে গেলে অবসরপ্রাপ্ত অফিস সহকারী সাজিদ উল্লাহ ছাড়া কাউকে পাওয়া যায়নি। পরে তহশিলদার আয়েশা আক্তারকে কল দিলে তিনি জানান, তিনি এসি ল্যান্ড অফিসে রয়েছেন। পরে ইউনিয়ন ভূমি সহকারী মো. আবুল কালাম চৌধুরী ১০টা ৩৮ মিনিটে অফিসে আসেন।
অফিস ১০টায় শুরু হলেও সবাই যথাসময়ে না আসার কারণ জিজ্ঞেস করলে অফিস সহকারী সাজিদ উল্লাহ বলেন, আমি অবসর নিয়ে চলে গেছি, আমি শুধু অফিস খুলি আর লাগাই, আর কোনো দায়িত্ব নেই আমার। তিনি বলেন, সবাই ফিল্ডে কাজে আছেন। নতুন অফিস কবে চালু হবে জিজ্ঞেস করলে সাজিদ উল্লা জানান, নতুন অফিসের ফ্লোরের টাইলসে একটা ঝামেলা হয়েছে তাই দেরি হচ্ছে।
একই বিষয়ে ইউনিয়নের ভূমি সহকারী কর্মকর্তা আয়েশা আক্তারের সাথে মুঠোফোনে কথা বললে তিনি জানান, আমরা খুব কষ্টে অফিস করতেছি। সারা বাজারের ধুলোবালি ধবল আমাদের ওপর দিয়েই যায়। ল্যাপটপ, কম্পিউটার ধুলোয় প্রলেপ জমে যায়। আমরা বারবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে এ বিষয়টি অবগত করেছি।
নতুন ভবনের কাজ শেষ হলেও ব্যবহার না করার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, মনে হয় কয়েকটি দরজা-জানালা লাগানো বাকি আছে। ঠিকাদার এখনও অফিস বুঝিয়ে দেয়নি তাই নতুন অফিসটি ব্যবহৃত হচ্ছে না। এদিকে ঠিকাদারের নাম ও ফোন নাম্বার চাইলে তিনি বলেন, আমি নাম জানি না, আর ঠিকাদারের নাম্বার বন্ধ রয়েছে বেশ কিছুদিন ধরে। একই বিষয়ে গত ৯ ফেব্রুয়ারি পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল। তখন সদর উপজেলা (সহকারী কমিশনার ভূমি) মাসফিকা হোসেন জানিয়েছিলেন, ৭-১০ দিনের মধ্যেই নতুন অফিসে কাজ শুরু করা হবে। কিন্তু আজও পর্যন্ত ওমেন্স কর্নারেই অফিস চলছে।
এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য দুপুর ১২টা ৩২ মিনিটে হবিগঞ্জ সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি মাসফিকা হোসেনকে বারবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। পরে মুঠোফোনে উনাকে খুদে বার্তা পাঠালেও উনার সাড়া মেলেনি।
হবিগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শাখাওয়াত হোসেন রুবেল জানান, যদিও রাজিউড়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসটি সদরে পড়েছে, কিন্তু এর কার্যক্রম শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা থেকেই নিয়ন্ত্রণ করা হয়। আমি এখনই এসি ল্যান্ডের সাথে কথা বলছি।
