পদ্মার ভাঙনে এবার হুমকির মুখে লক্ষ্মীনগর স্কুলসহ শতাধিক বাড়ি
আমানুল হক আমান, বাঘা (রাজশাহী)
প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০৬:২২ এএম
ছবি: যুগান্তর
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
আবারও নতুন করে পানিবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ভাঙছে পদ্মার পাড়। চাপ চাপ মাটি ধসে পড়ে দীর্ঘ হচ্ছে ভাঙনের চিত্র। প্রায় চার কিলোমিটার ভাঙনে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে শত শত একর জমিসহ গাছপালা ও ঘরবাড়ি।
এক সপ্তাহের ব্যবধানে ভাঙনে রাজশাহীর বাঘা উপজেলার পদ্মার মধ্যে চকরাজাপুর ইউনিয়নের কালীদাসখালী ও লক্ষ্মীনগর চরের দেড় শতাধিক মানুষ আশ্রয় হারিয়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছেন। হুমকিতে রয়েছে লক্ষ্মীনগর স্কুলসহ আরও শতাধিক বাড়ি।
জানা যায়, চকরাজাপুর ইউনিয়নের ৪ ও ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কালীদাসখালী ও লক্ষ্মীনগর চরের মানুষ ঘরবাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন এবং হুমকির মধ্যে রয়েছে শতাধিক পরিবার ও লক্ষ্মীনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। বর্তমানে ভাঙন থেকে ১৫০ মিটার দূরে রয়েছে স্কুলটি।
এ ছাড়া কালীদাসখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে চকরাজাপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বর (৩ নম্বর কালীদাসখালী চর) শহিদুল ইসলাম বলেন, এক সপ্তাহ থেকে আবারও নতুন করে পদ্মার পানি বাড়তে শুরু করেছে। পাশাপাশি শুরু হয়েছে ভাঙন। যেসব জমি ভাঙনের কবলে পড়েছে, তার সিংহভাগ জমিতে ছিল আম, খেজুরগাছ ও বাড়িঘর। এবার ভাঙনের কবলে আমার ১০ বিঘা নিজস্ব জমিসহ আমবাগান বিলীন হয়ে গেছে।
৩ নম্বর কালীদাসখালী চর ও চকরাজাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক গোলাম মোস্তফা বলেন, এক সপ্তাহের ব্যবধানে আমার ১৫ বিঘা আমবাগান নদীগর্ভে ইতিমধ্যে বিলীন হয়ে গেছে। এমনকি আমার বাড়িটাও হুমকির মধ্যে রয়েছে। ভাঙন থেকে মাত্র ৬০ মিটার দূরে রয়েছে বাড়ি। নতুনভাবে আবারও যে ভাঙনের ডাক তাতে মনে হয় কালীদাসখালী ও লক্ষ্মীনগর বলে কোনো চিহ্ন থাকবে না।
চকরাজাপুর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বর ফজলুল হক বলেন, চকরাজাপুর বলে কোনো চিহ্ন নেই। ইতিমধ্যে বিলীন হয়ে গেছে। এই ওয়ার্ডের চার ভাগের তিন ভাগ ইতিমধ্যে পদ্মা গর্ভে চলে গেছে। নতুনভাবে যে হারে ভাঙা শুরু হয়েছে, এভাবে ভাঙতে থাকলে আর কিছু দিনের মধ্যে এই ওয়ার্ডও বিলীন হয়ে যাবে।
এদিকে ৬ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বর আনোয়ার শিকদার বলেন, আমার প্রায় ৩০ বিঘা জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এ ছাড়া আমার নির্বাচনী ওয়ার্ডের কোনো চিহ্ন নেই। এই ওয়ার্ডের তিন শতাধিক পরিবার অন্যত্র চলে গেছে।
কালীদাসখালী চরের রতন আলীর স্ত্রী সালমা বেগম বলেন, আমার মাত্র ১০ কাঠা জমি ছিল। তাও ভাঙনে চলে গেল। দুই সন্তান নিয়ে কী করে চলব, কথায় যাব– কিছুই ভেবে পাচ্ছি না।
চকরাজাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আজিজুল আযম বলেন, প্রতি বছর ভাঙনের কবলে পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন মানুষ। তবে বর্তমানে ভাঙনের বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানানো হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহিন রেজা বলেন, পদ্মার ভাঙনের খবর পেয়ে সরেজমিন তদন্ত করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে।
