টিকা নিতে এসে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন শিক্ষার্থী
টঙ্গী পূর্ব (গাজীপুর) প্রতিনিধি
২০ জানুয়ারি ২০২২, ২২:৪৬:৫২ | অনলাইন সংস্করণ
গাজীপুরের টঙ্গীতে করোনাভাইরাসের টিকা নিতে এসে বৃহস্পতিবার দুপুরে কেন্দ্রেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন ফরহাদ হোসেন (১৮) নামে এক শিক্ষার্থী।
তিনি এরশাদনগর বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে ২০২১ সালে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ফরহাদসহ তার সহপাঠীরা দুপুরে কলেজগেট এলাকায় নির্ধারিত টিকাদান কেন্দ্রে লাইনে দাঁড়ান। একপর্যায়ে দুপুর পৌনে ২টার দিকে লাইনে দাঁড়ানো অবস্থা থেকে পড়ে যান তিনি। পরে সহপাঠীরা তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় ঢাকা ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে নিয়ে গেলে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত ফরহাদের সহপাঠী জাহিদ হাসান বলেন, আমরা পূর্ব নির্ধারিত তারিখ অনুযায়ী বৃহস্পতিবার টিকাদান কেন্দ্রে যাই। সকাল ৭টা থেকে শিক্ষার্থীদের করোনার টিকার প্রথম ডোজ (ফাইজার) দেওয়া শুরু হয়। বেলা ১টা ৪৫মিনিটে ওই কেন্দ্রের ১০১ নম্বর কক্ষে টিকা নিতে প্রবেশ করেন ফরহাদ। এর কিছুক্ষণ পরেই সে অচেতন হয়ে পড়লে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে হোসেন মার্কেট ঢাকা ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে নিয়ে যাই। পরে শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের মা লিপি আক্তার বলেন, ফরহাদ হৃদরোগে আক্রান্ত ছিল। চিকিৎসা নেওয়ার পর সে সুস্থ হয়ে উঠে। গত ১৫ জানুয়ারি সে টিকার নিবন্ধন করে। সকালে বাসা থেকে নাস্তা করে টিকা নিতে টিকা কেন্দ্রে যায়। এরপর দুপুরে সহপাঠীরা ফোন করে জানায় সে মারা গেছে।
শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন বলেন, আমাদের স্কুলের প্রায় ৩৫০ জন শিক্ষার্থীকে বৃহস্পতিবার টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া হয়েছে। টিকা নেওয়ার পর কোনো শিক্ষার্থীর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়নি। ফরহাদ টিকা নিয়ে অসুস্থ হয়ে পরেছে এমন খবর পেয়ে এগিয়ে গিয়ে দেখি সহপাঠীরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছে। পরে জানতে পারি ফরহাদ মারা গেছে। তবে ফরহাদের পরিবার ও সহপাঠীদের নিকট থেকে শুনেছি সে আগে থেকেই হৃদরোগের সমস্যায় ভুগছিলেন।
শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালের ইমার্জেন্সি বিভাগের চিকিৎসক ডা. মকবুল হোসেন বাকী বলেন, হাসপাতালে আনার পূর্বেই ওই শিক্ষার্থী মারা গেছে। হয়তো হার্টের সমস্যার কারণে সে মারা যেতে পারে।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে টঙ্গী পূর্ব থানার অফিসার ইনচার্জ মো. জাবেদ মাসুদ পরিবারের লোকজনের বরাত দিয়ে বলেন, নিহত ফরহাদ আগে থেকেই হৃদরোগে আক্রান্ত ছিল। তার সামনে টিকা দিতে দেখে সম্ভবত সে আতঙ্কিত হয়ে হার্টঅ্যাটাকে মারা গেছেন। পরিবারের সদস্যরা হাসপাতাল থেকে নিহতের লাশ নিয়ে গেছেন।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
টিকা নিতে এসে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন শিক্ষার্থী
গাজীপুরের টঙ্গীতে করোনাভাইরাসের টিকা নিতে এসে বৃহস্পতিবার দুপুরে কেন্দ্রেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন ফরহাদ হোসেন (১৮) নামে এক শিক্ষার্থী।
তিনি এরশাদনগর বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে ২০২১ সালে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ফরহাদসহ তার সহপাঠীরা দুপুরে কলেজগেট এলাকায় নির্ধারিত টিকাদান কেন্দ্রে লাইনে দাঁড়ান। একপর্যায়ে দুপুর পৌনে ২টার দিকে লাইনে দাঁড়ানো অবস্থা থেকে পড়ে যান তিনি। পরে সহপাঠীরা তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় ঢাকা ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে নিয়ে গেলে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত ফরহাদের সহপাঠী জাহিদ হাসান বলেন, আমরা পূর্ব নির্ধারিত তারিখ অনুযায়ী বৃহস্পতিবার টিকাদান কেন্দ্রে যাই। সকাল ৭টা থেকে শিক্ষার্থীদের করোনার টিকার প্রথম ডোজ (ফাইজার) দেওয়া শুরু হয়। বেলা ১টা ৪৫মিনিটে ওই কেন্দ্রের ১০১ নম্বর কক্ষে টিকা নিতে প্রবেশ করেন ফরহাদ। এর কিছুক্ষণ পরেই সে অচেতন হয়ে পড়লে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে হোসেন মার্কেট ঢাকা ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে নিয়ে যাই। পরে শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের মা লিপি আক্তার বলেন, ফরহাদ হৃদরোগে আক্রান্ত ছিল। চিকিৎসা নেওয়ার পর সে সুস্থ হয়ে উঠে। গত ১৫ জানুয়ারি সে টিকার নিবন্ধন করে। সকালে বাসা থেকে নাস্তা করে টিকা নিতে টিকা কেন্দ্রে যায়। এরপর দুপুরে সহপাঠীরা ফোন করে জানায় সে মারা গেছে।
শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন বলেন, আমাদের স্কুলের প্রায় ৩৫০ জন শিক্ষার্থীকে বৃহস্পতিবার টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া হয়েছে। টিকা নেওয়ার পর কোনো শিক্ষার্থীর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়নি। ফরহাদ টিকা নিয়ে অসুস্থ হয়ে পরেছে এমন খবর পেয়ে এগিয়ে গিয়ে দেখি সহপাঠীরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছে। পরে জানতে পারি ফরহাদ মারা গেছে। তবে ফরহাদের পরিবার ও সহপাঠীদের নিকট থেকে শুনেছি সে আগে থেকেই হৃদরোগের সমস্যায় ভুগছিলেন।
শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালের ইমার্জেন্সি বিভাগের চিকিৎসক ডা. মকবুল হোসেন বাকী বলেন, হাসপাতালে আনার পূর্বেই ওই শিক্ষার্থী মারা গেছে। হয়তো হার্টের সমস্যার কারণে সে মারা যেতে পারে।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে টঙ্গী পূর্ব থানার অফিসার ইনচার্জ মো. জাবেদ মাসুদ পরিবারের লোকজনের বরাত দিয়ে বলেন, নিহত ফরহাদ আগে থেকেই হৃদরোগে আক্রান্ত ছিল। তার সামনে টিকা দিতে দেখে সম্ভবত সে আতঙ্কিত হয়ে হার্টঅ্যাটাকে মারা গেছেন। পরিবারের সদস্যরা হাসপাতাল থেকে নিহতের লাশ নিয়ে গেছেন।