পাবিপ্রবির শিক্ষকের বিরুদ্ধে স্ত্রী নিয়োগের অপচেষ্টার অভিযোগ
পাবনা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৮ জানুয়ারি ২০২২, ০২:০১ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) গণিত বিভাগের চেয়ারম্যান ড. হারুন অর রশিদের বিরুদ্ধে নিজের স্ত্রীকে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষক পদে নিয়োগ নিশ্চিত করার অপচেষ্টার অভিযোগ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। শুধু তাই নয়, স্ত্রীর নিয়োগ নিশ্চিতে ব্যর্থ হয়ে নিয়োগ পরীক্ষা বানচাল ও বিতর্কিত করাসহ পরীক্ষা বিলম্বিত ও প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্টারও অভিযোগ করা হয়েছে তার বিরুদ্ধে।
শুক্রবার বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দফতরের উপপরিচালক ফারুক হোসেন চৌধুরী স্বাক্ষরিত রেজিষ্ট্রার দফতরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ অভিযোগের কথা উল্লেখ করা হয়।
রেজিস্ট্রার দফতর জানায়, গণিত বিভাগের প্রভাষক নিয়োগ সংক্রান্ত বিভাগীয় প্লানিং কমিটির ১নং সদস্য ড. হারুণ অর রশিদের নেতৃত্বে যথেষ্ট সময় নিয়ে যাচাই-বাছাই শেষে নিয়োগের জন্য যোগ্য প্রার্থীদের তালিকা রেজিস্ট্রার দফতরে পাঠানো হয়। এরপর ২৭ জানুয়ারি নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষায় হারুন অর রশিদ নিজের স্ত্রী শিখা খাতুনকে নিয়োগের জন্য অপচেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হন। অথচ সরকারি নিয়ম অনুযায়ী পোষ্য বা নিকটাত্মীয় চাকরি প্রার্থী থাকলে নিয়োগদাতা সদস্য কেউ নিয়োগ বোর্ডে থাকতে পারবেন না।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ হারুন অর রশিদকে সরকারি নিয়ম মেনে চলার অনুরোধ জানান। এরপর হারুন অর রশিদ তার স্ত্রীকে নিয়োগ নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়ে ওই দিনই এক সংবাদ সম্মেলনে তাকে ভিসির নির্দেশে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ করেন; যা মিথ্যা ও বানোয়াট।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আরও উল্লেখ করেন- হারুন অর রশিদের ওই সংবাদ সম্মেলনে ৬ মাস আগে অনুষ্ঠিত সেকশন অফিসার পদে নিয়োগ নিয়ে প্রার্থী আতিকুল ইসলাম অনিয়মের মিথ্যা বানোয়াট অভিযোগ করেন। পরীক্ষা অনুষ্ঠানের ব্যবধান ৬ মাস হলেও এই দুজনের একই সংবাদ সম্মেলনে একই ধরনের অভিযোগের মধ্যদিয়ে তাদের মিথ্যা ষড়যন্ত্র প্রকাশ পেয়েছে।
একটি কুচক্রী মহল বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা ও শিক্ষার পরিবেশ নস্যাৎ করতেই এ ধরনের ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে।
২৭ জানুয়ারি বিকালে গণিত বিভাগের চেয়ারম্যান ড. হারুন অর রশিদ এক সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন, নিয়োগে অস্বচ্ছতা, অনিয়ম এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. এম রোস্তম আলীর নির্দেশে কর্মচারীরা তাকে লাঞ্ছিত করেছেন।
ওই সংবাদ সম্মেলনে সেকশন অফিসার পদে নিয়োগপ্রার্থী আতিকুল ইসলাম জানান, গত বছরের ১৬ জুন নিয়োগ বোর্ডে মেধা যাচাই ও যোগ্যতাসম্পন্ন প্রার্থীদের না নিয়ে নিয়োগ বোর্ডের সভাপতির দায়িত্বে থেকে ভিসি স্যার তার আপন ভাতিজি কানিজ ফাতেমাকে প্রথম শ্রেণির সেকশন অফিসার পদে নিয়োগ দেন।
পাবিপ্রবির প্রক্টর ড. হাসিবুর রহমান বলেন, চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদের স্ত্রী লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারেননি। এরপরই তিনি বিকালে সংবাদ সম্মেলন ডেকে মিথ্যা অভিযোগ করেন।
প্রক্টর বলেন, পরীক্ষায় কোনো অনিয়ম-অস্বচ্ছতা হয়নি। আমি নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলাম।
তিনি বলেন, জামায়াতপন্থী এই শিক্ষকের সঙ্গে আরও একটি চক্র আছে, যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশকে নষ্ট করতে চায়।
এ বিষয়ে উপাচার্য প্রফেসর ড. এম রোস্তম আলী বলেন, অস্বচ্ছ, অনিয়ম এবং অনৈতিক পন্থায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয় এমন কোনো কাজ করা হয়নি। যে বা যারাই অভিযোগ করেছেন, তারা নিজেদের স্বার্থ হাসিল করতে পারেননি বা আমাকে ভিন্নভাবে ম্যানেজ করার চেষ্টায় ব্যর্থ হওয়ায় একের পর এক উল্টা-পাল্টা ও মিথ্যা মনগড়া অভিযোগ তুলে পরিবেশ নষ্ট করার পাঁয়তারা করছেন।
