Logo
Logo
×

সারাদেশ

অপরিকল্পিত ফেরিঘাটে দুর্ভোগ চরমে

Icon

কেএম রায়হান কবীর, শরীয়তপুর প্রতিনিধি 

প্রকাশ: ০৪ মার্চ ২০২২, ১২:১৬ পিএম

অপরিকল্পিত ফেরিঘাটে দুর্ভোগ চরমে

ছবি: সংগৃহিত

অপরিকল্পিত ফেরি চলাচল শুরু করায় শরীয়তপুরের ছাত্তার মাদবর ফেরিঘাটে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। অপ্রশস্ত রাস্তা, নেই কোনো বাস টার্মিনাল, গণশৌচাগার ও যাত্রী ছাউনি না থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছেন এ অঞ্চলের লাখ লাখ যাত্রী। 

এসব ভোগান্তি লাঘবে আন্দোলনে নেমেছেন স্থানীয়রা। শুক্রবার সকালে ছাত্তার মাদবর (মঙ্গলমাঝি) বাজারের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ মাঠে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেন তারা। দ্রুত সমাধান না হলে গণআন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে বলে হঁশিয়ারি দেন তারা। 

এদিকে বিআইডব্লিউটিএ বলছে, এসব জনদুর্ভোগের কথা ওপর মহলে জানানো হয়েছে। 

ছাত্তার মাদবর (মঙ্গল মাঝি) লঞ্চঘাটের ইজারাদার মোকলেস মাদবর ও বিআইডব্লিউটিএ সূত্রে জানা যায়, পদ্মা সেতুতে বারবার ফেরির ধাক্কা লাগার কারণে গত বছরের শেষের দিকে মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া থেকে শরীয়তপুরের জাজিরার ছাত্তার মাদবর (মঙ্গল মাঝি) লঞ্চঘাটে ফেরি চলাচল শুরু করে। এরপর থেকে এ রুটে প্রতিদিন বরিশাল, ভোলা, ঝালকাঠি, মাদারীপুর, ফরিদপুর ও শরীয়তপুরসহ বিভিন্ন জেলা থেকে শত শত গাড়ি ও হাজার হাজার যাত্রী চলাচল করে। 

জানা গেছে, যানজটের কারণে ছাত্তার মাদবর (মঙ্গল মাঝি) থেকে প্রায় ৩ কিলোমিটার দূরে যাত্রীদের নামিয়ে দেয় বিভিন্ন পরিবহণ। যাত্রীদের মালামাল নিয়ে হেঁটে ফেরিতে উঠতে হয়। পাশাপাশি অ্যাম্বুলেন্স, পণ্যবাহী গাড়িসহ ছোটবড় গাড়ি ঘণ্টার পর ঘণ্টা পারাপারের অপেক্ষায় বসে থাকতে হয়। গণশৌচাগার না থাকায় আশপাশের বাড়িঘরে তাদের যেতে হয়। এতে প্রতিনিয়তই বিড়ম্বনায় পড়তে হয় যাত্রীদের। যাত্রী ছাউনি না থাকায় নারী-শিশু ও রোগীদের নিয়ে পড়তে হয় চরম বিপাকে।

ছাত্তার মাদবর (মঙ্গল মাঝি) ফেরিঘাট এলাকার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি নেছার উদ্দিন মাদবর বলেন, পদ্মা সেতুর জন্য বাপ-দাদার ভিটা ছেড়ে দিয়েছি। এখন আমাদের এ ঘাট দিয়ে অপরিকল্পিতভাবে ফেরি চলাচল শুরু করায় যাত্রী সাধারণের দুর্ভোগের পাশাপশি আমাদেরও চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

স্থানীয় শিক্ষক শান্ত মাস্টার, ব্যবসায়ী লোকমান মাদবর ও তুহিন মাঝি বলেন, এ ঘাটে নতুন করে ফেরি চলাচল শুরুর পর থেকেই বাস টার্মিনাল না থাকায় রাস্তার উপরে গাড়ি রাখায় তীব্র যানজট শুরু হচ্ছে। পাশাপাশি অপ্রশস্ত রাস্তা, গণশৌচাগার ও যাত্রী ছাউনি না থাকায় ছাত্রছাত্রীসহ এলাকার লোকজনের পড়তে হয় চরম ভোগান্তিতে।

বরিশাল থেকে আসা অ্যাম্বুলেন্সের চালক কাউসার মিয়া বলেন, বরিশাল থেকে আসতে ২ থেকে ৩ ঘণ্টা সময় লাগে, আর অপরিকল্পিত ছাত্তার মাদবরের ফেরি হওয়ায় ৩ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে হয়। রাস্তাঘাটে গাড়ি রাখার কারণে ২-৩ ঘণ্টায়ও ফেরিতে উঠা যায় না। 

নাওডোবা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোসলেম উদ্দিন মাদবর বলেন, ফেরিঘাট চালু করার সময় প্রশাসন আমাদের আশ্বাস দিয়েছিল, তারা এখানে তাদের নিজস্ব বাস টার্মিনাল, রাস্তা প্রশস্ত, গণশৌচাগার ও যাত্রী ছাউনিসহ সব নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করবে। কিন্তু দির্ঘদিন ধরে ফেরি চলাচল করলেও তারা কোনোরকম নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করছেন না। ফলে এ অঞ্চলের ২১ জেলার মানুষ দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে। দ্রুত এর সমাধান না করলে এ অঞ্চলের মানুষ গণআন্দোলনে নামবে। 

ছাত্তার মাদবর (মঙ্গল মাঝি) ঘাটের বিআইডব্লিউটিএর সুপার সেলিম আহম্মেদ বলেন, এ ঘাটে বাস টার্মিনালসহ নানা সমস্যা থাকায় চরম দুর্ভোগ হচ্ছে। আমরা বিষয়টি ওপর মহলে জানিয়েছি। আশা করি অচিরেই এর সমাধান হবে। 
 

অপরিকল্পিত ফেরিঘাট দুর্ভোগ চরম

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম