Logo
Logo
×

সারাদেশ

সাহিত্যিক প্রমথ চৌধুরীর পৈতৃক ভিটা এখন গো-চারণ ভূমি!

Icon

চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৮ মার্চ ২০২২, ০১:৩৬ পিএম

সাহিত্যিক প্রমথ চৌধুরীর পৈতৃক ভিটা এখন গো-চারণ ভূমি!

ভাঙাচোরা মন্দির, একটি পুকুর ও বেশকিছু আমগাছে সারি। তিন একর জায়গা ওপর পাবনার চাটমোহর উপজেলার হরিপুর গ্রামে ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে বাংলা গদ্যরীতির প্রবর্তক বিখ্যাত সাহিত্যিক প্রমথ চৌধুরীর পৈতৃক ভিটা।

বাংলা ভাষারীতিতে বিশেষ পরিবর্তন আনা এই মানুষটির কোনো স্মৃতিচিহ্নই নেই সেখানে। যেটুকু আছে সেটা রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বিলুপ্তির পথে। আর এই সুযোগটা নিচ্ছেন স্থানীয়রা। ফাঁকা জায়গা এখন গরু-ছাগলের চারণ ভূমিতে পরিণত হয়েছে।

দখলদারদের হাত থেকে বিখ্যাত এই সাহিত্যিকের জায়গা উদ্ধার করে পাঠাগার নির্মাণ করা হলেও সেটিও এখন খোলা হয় না। ধুলোর আস্তরণে ঢাকা পড়েছে পাঠাগারের চেয়ার টেবিল ও বইপত্র। 

সরেজমিন জানা গেছে, প্রমথ চৌধুরীর পিতা দুর্গাদাস চৌধুরী ছিলেন হরিপুর গ্রামের জমিদার বংশের সন্তান। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের কৃষ্ণনগরে প্রমথ চৌধুরীর শৈশব ও কৈশোর কাটলেও মাঝেমধ্যেই হরিপুরর গ্রামে পৈতৃক ভিটায় আসতেন তিনি। সেখানে বহু প্রাচীন একমাত্র মন্দিরে পূজার্চনা করতেন। সময়ের পরিক্রমায় কেটে যায় বহুবছর। এর মধ্যে দখলদাররা বিখ্যাত এই সাহিত্যিকের জায়গা জমি দখল করে বসবাস শুরু করেন। স্মৃতিচিহ্ন যখন মুছে যাচ্ছিল ঠিক এ সময় চাটমোহরের সচেতন সমাজ ‘প্রমথ চৌধুরী স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদ’গড়ে তোলেন।

দীর্ঘ তিন বছর আন্দোলনের পর তৎকালীন পাবনার জেলা প্রশাসক রেখা রানী বালোর প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় প্রশাসন প্রমথ চৌধুরীর তিন একর পৈতৃক ভিটা দখলমুক্ত করেন এবং সেখানে একটি পাঠাগার গড়ে তোলেন। কিন্তু কিছুদিন পর সেই পাঠাগারটিতেও এখন কেউ বসেন না। পাঠাগারের ভেতরে আসবাব ও বইপত্র ধুলোর আস্তরণে ঢাকা পড়েছে। 

বর্তমানে এলাকার লোকজন ফাঁকা জায়গাটি এখন খড় শুকানো, গরু-ছাগল চড়ানো থেকে শুরু করে নানা কাজে ব্যবহার করে থাকেন। একমাত্র মন্দিরটির একেবারেই জরাজীর্ণ। জায়গাটি রক্ষণাবেক্ষণের কোনো ব্যবস্থা নেই। বিদেশি সাহিত্য ও সংস্কৃতির সঙ্গে বাঙালির পরিচয় ঘটানো স্বনামধন্য লেখক প্রমথ চৌধুরীর পৈতৃক ভিটাটি আবারো দখলদারদের কবলে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সচেতন মহল। 

প্রমথ চৌধুরী স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদের সভাপতি প্রভাষক ইকবাল কবির রঞ্জু যুগান্তরকে বলেন, সবার আগে বহু প্রাচীন মন্দির এবং জায়গাটির রক্ষণাবেক্ষণ জরুরি। তাছাড়া কোনো স্মৃতিচিহ্নই থাকবে না। তবে শুনেছি, সেখানে কী কী করা যায় এ ব্যাপারে উপজেলা প্রশাসন থেকে একটি প্রকল্প সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। দ্রুত এ ব্যাপারে পদক্ষেপ না নিলে আবারো জায়গাটি দখল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান তিনি।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈকত ইসলাম যুগান্তরকে জানান, বেশ কয়েক বছর আগে জায়গাটি দখলমুক্ত করা হয়েছে। জেলা প্রশাসক স্যারের মাধ্যমে বরাদ্দ চেয়ে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে সেখানে কী কী করা যায় এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পাবনা

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম