Logo
Logo
×

সারাদেশ

চরের পতিত জমি হাসি ফোটাচ্ছে কৃষকের মুখে

Icon

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৯ মার্চ ২০২২, ০১:২০ পিএম

চরের পতিত জমি হাসি ফোটাচ্ছে কৃষকের মুখে

কুড়িগ্রামে সদ্য জেগে ওঠা চরের জমিতে যৌথভাবে খেসারি ডাল চাষ করে লাভবান হয়েছেন কৃষকরা। মাত্র সাড়ে ৪ মাস যত্ন নেওয়ার পর পবিত্র রমজান মাসের রোজার পূর্বে এ কালাই পেয়ে খুশি তারা। রোজায় ইফতারিতে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় পেঁয়াজু বানাতে এই খেসারি কালাইয়ের প্রয়োজন হয়। এ সময় বেশি দামে বিক্রি করে দুটো বাড়তি পয়সা আয় করতে পারবে এতেই খুশি চাষিরা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর অফিসের উপসহকারী কৃষি অফিসার জয়নাল আবেদীন জানান, চলতি বছর কুড়িগ্রাম জেলায় ১ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে খেসারি কালাইয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। সেখানে অর্জিত লক্ষ্যমাত্রা ১ হাজার ১৬১ হেক্টর। চরাঞ্চলে অধিক পরিমাণে এই ডাল চাষ করা হয়ে থাকে। এবার কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নে ব্যতিক্রমভাবে দেড় শতাধিক চাষি যৌথভাবে ২৫ একর জমিতে কালাই চাষ করেছে। একসাথে চাষ করায় খরচ পরেছে কম। অল্প খরচে অধিক কালাই পেয়ে চাষিদের চোখে মুখে হাসি ফুটে উঠেছে।

যাত্রাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী সরকার জানান, এই ইউনিয়নে প্রমত্ত ব্রহ্মপুত্র নদের বুকজুড়ে রয়েছে ছোট বড় প্রায় ২৫টি চর। এর মধ্যে অর্ধেক চরে মানুষ বসবাস করলেও নতুন জেগে ওঠা চর স্থায়ী না হওয়া পর্যন্ত সেই চরে মানুষ বসতি স্থাপন করে না। বিগত ৫-৬ বছর ধরে ভগবতীপুর ও পোড়ার চরের মাঝখানে প্রায় ৮০ একর জমি নিয়ে তৈরি হয়েছে নতুন একটি চর। এই চরের অধিকাংশ জমিতে চাষ করা হচ্ছে বিভিন্ন ফসল। পালন করা হচ্ছে গবাদিপশুও। কেউ কেউ এখানে নতুনভাবে বসতি গড়ে তুলছেন। এই বিশাল চরের মধ্যে প্রায় ২৫ একর জমিতে ১৫০টি পরিবার নতুন যৌথভাবে চাষ করেছেন খেসারি কালাই। প্রথমবার চাষ করেই ভালো ফলন পেয়ে খুশি তারা।

চাষি সোলায়মান মিয়া জানান, নিজেরা শ্রম দিয়ে কালাই চাষ করেছি। বিঘাপ্রতি খরচ হয়েছে প্রায় ৮ হাজার টাকা করে। সব ধরনের খরচ মিলিয়ে বিঘায় প্রায় ৫ হাজার টাকা করে লাভ থাকবে।

অপর কৃষক সালাম মিয়া জানালেন, গত কয়েক বছর ধরে খেসারী কালাইয়ের বাজার পড়তির দিকে। আগে প্রতি মণ কালাইয়ের বাজার ছিল ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা। এবার বাজার ঊর্ধ্বমুখী। বর্তমানে ২৪ থেকে ২৫ হাজার টাকা মণ দরে কেনাবেচা হচ্ছে। এবার কালাই বিক্রি করে ভালো লাভবান হব আশা করি।

চরে পরির্দশনে এসে কালাইয়ের চাষ দেখে বিস্মিত সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রাসেদুল হাসান জানান, চরের পতিত জমিতে যৌথভাবে ডাল উৎপাদন করে উদাহরণ সৃষ্টি করেছে ১৫০ পরিবার। এই রমজানের পূর্বে অধিক মূল্যে ডাল বিক্রি করতে পারবে তারা। এতে পতিত জমিগুলোও ব্যবহার উপযোগী হবে এবং যৌথ পদ্ধতিতে ডাল চাষের মাধ্যমে দেশের চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে।

এ ব্যাপারে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. আব্দুর রশীদ জানান, আমাদের দেশে প্রচুর ডালের চাহিদা রয়েছে। বিদেশ থেকে আমাদের ডাল আমদানি করতে হয়। চলতি বছর জেলায় ১ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে খেসারি কালাইয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। সেখানে অর্জিত লক্ষ্যমাত্রা ১ হাজার ১৬১ হেক্টর। এভাবে চরগুলোতে যৌথ পদ্ধতিতে ডাল চাষ করা হলে আমাদের আর আমদানিনির্ভর হতে হবে না। এ ধরনের উদ্যোগ আশাব্যঞ্জক।

কুড়িগ্রাম সদ্য জেগে ওঠা চর

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম