সেই সেলিনার চার মেয়ের লেখাপড়ার দায়িত্ব নিলেন আ জ ম নাছির
চট্টগ্রাম ব্যুরো
প্রকাশ: ১২ এপ্রিল ২০২২, ০৪:৪৩ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
চট্টগ্রামে পুলিশের দেওয়া ঘর পাওয়া এবং প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলা সেই নারীর চার মেয়ের লেখাপড়ার দায়িত্ব নিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটির সাবেক মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন। চার মেয়ের সর্বোচ্চ লেখাপড়া করতে যা খরচ হয় তা ব্যক্তিগত তরফ থেকে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
একই সঙ্গে নগদ ৫০ হাজার টাকা ও স্থায়ী আয়ের জন্য দুটি রিকশাভ্যান বানিয়ে দেওয়ারও ঘোষণা দেন।
মঙ্গলবার বিকালে চট্টগ্রাম এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে সিজেকেএস কার্যালয়ে ডেকে এনে সেলিনা আক্তারের হাতে নগদ ৫০ হাজার টাকা তুলে দেন আ জ ম নাছির।
হাটহাজারী থানার এসআই আকরাম হোসেন সেলিনাকে নিয়ে এসেছিলেন সিজেকেএস কার্যালয়ে।
জানা গেছে, পরপর চারটি মেয়েসন্তান হওয়ার পর স্ত্রী সেলিনা আক্তারকে ফেলে চলে গিয়েছিলেন সিএনজি চালক স্বামী মুজিবুর রহমান মিলন। তখন তার কোলে ছিল তিন মাস বয়সী চতুর্থ মেয়ে। সেই থেকে ১২ বছর ধরে চার মেয়েকে নিয়ে জীবনযুদ্ধ করছিলেন তিনি। গার্মেন্টসে ১ হাজার ৬শ টাকা বেতনের চাকরিতে ঢুকে কোনোমতে জীবন কাটাচ্ছিলেন। মাথাগোঁজার ঠাঁইটুকুও ছিল না। অর্থাভাবে বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল চার মেয়ের লেখাপড়া। মাদ্রাসা থেকে একে একে সবাইকে নামিয়ে ফেলছিলেন। এ অবস্থায় মুজিববর্ষ উপলক্ষে চট্টগ্রামের ১৬ থানায় ১৬ হতদরিদ্র পরিবারকে দেওয়া ঘরের একটি পান হাটাহাজারীর গুমান মর্দন এলাকার বাসিন্দা সেলিনা আক্তার।
গত ১০ এপ্রিল এ উপলক্ষে গৃহ হস্তান্তর এবং নারী, শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী সার্ভিস ডেস্কের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কথা বলেন, চট্টগ্রামের হাজহাজারী ও চন্দনাইশ উপজেলার দুই নারীর সঙ্গে। চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ লাইন্স থেকে যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে তার অসহায়ত্ব ও জীবনযুদ্ধের কথা তুলে ধরেন সেলিনা আক্তার।
সেলিনা আক্তারের অসহায়ত্ব ও জীবন যুদ্ধের বিষয়টি স্পর্শ করে আ জ ম নাছিরকে। তিনি চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন ও জেলা পুলিশ সুপার এসএম রশিদুল হকের মাধ্যমে সেলিনা আক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং সেলিনার চার মেয়ের লেখাপড়ার দায়িত্ব নেন। স্থায়ী আয়ের জন্য দুটি রিকশাভ্যান বানিয়ে দেওয়ার কথা বলেন।
সেলিনার চার মেয়ে- সুমি আক্তার (১৭), রুমি আক্তার (১৫), রুমা আক্তার (১৩), ও চাঁদনি আক্তার (১১)। চারজনই হাটহাজারী গুমান মর্দন সুন্নিয়া দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থী থাকলেও অর্থাভাবে তাদের লেখাপড়া বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছিল। এর মধ্যে বড় মেয়ে সুমি আক্তারকে দাখিল পরীক্ষা না দিয়ে মাদ্রাসা থেকে নামিয়ে ফেলেছিলেন সেলিনা।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে পারা, পুলিশের দেওয়া ঘর পাওয়া, চট্টগ্রামের সাবেক মেয়রের কাছ থেকে চার মেয়ের লেখাপাড়ার দায়িত্ব নেওয়ার প্রতিশ্রুতি পাওয়া, স্থায়ী আয়ের ব্যবস্থা করার আশ্বাস পেয়ে যারপরনাই খুশি হয়েছেন সেলিনা। তিনি বলেন, ‘আমার মনে হচ্ছে এখন আমি জীবনযুদ্ধে জয়ী হয়েছি।'
