Logo
Logo
×

সারাদেশ

নোয়াখালীতে গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু

Icon

নোয়াখালী প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৬ জুলাই ২০২২, ০৩:৫৫ এএম

নোয়াখালীতে গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে হাজেরা খাতুন (৩৫) নামে এক গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। শ্বশুরবাড়ির লোকজন এটিকে একবার স্ট্রোক একবার বিদ্যুৎস্পর্শে মৃত্যু দাবি করলেও হাজেরার স্বজনরা বলছেন এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। 

হাজেরা খাতুন উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের আব্দুল মিয়ার বাড়ির মাহফুজুল হক মানিকের স্ত্রী এবং কবিরহাট উপজেলার ঘোষবাগ ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব সোনাদিয়া গ্রামের মৃত আবু বক্কর ছিদ্দিকের মেয়ে।  

মঙ্গলবার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে। এর আগে সোমবার সকাল ৯টার দিকে উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের আব্দুল মিয়ার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। পরে বিকাল ৪টার দিকে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। 

কোম্পানীগঞ্জ থানার ডিউটি অফিসার উপপরিদর্শক শফিকুল ইসলাম রাজা বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এ ঘটনায় নিহতের স্বামী বাদী হয়ে একটি অপমৃত্যু মামলা করেছেন। 

নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, নিহতের স্বামী স্থানীয় নুরানি ইসলামিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসার দারোয়ান। গত ১৩-১৪ বছর আগে তারা দ্বিতীয় বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের একমাত্র ছেলে হেফজখানায় পড়ে। ঈদের পর সে মাদ্রাসায় চলে যায়। শনিবার বিকালে নিহতের স্বামী মাদ্রাসায় ডিউটি করার জন্য চলে যায়। এর পর থেকে গৃহবধূ হাজেরা খাতুন ঘরে একা ছিল। সোমবার সকাল ১০টার দিকে নিহতের স্বামী মুঠোফোনে খবর পান তার স্ত্রী মারা গেছে। এমন খবরে তিনি তার বসতঘরের সামনে এসে দেখেন লোকজন জড়ো হয়ে আছে। তার স্ত্রী বসতঘরের দরজার ওপর মৃত অবস্থায় পড়ে আছে। তখন উপস্থিত লোকজনের মধ্যে কেউ কেউ বলাবলি করে। তার স্ত্রী স্ট্রোক অথবা বিদ্যুৎস্পর্শ হয়ে মারা গেছে। নিহতের স্বামী মানিক তার পাশের ঘরের লোকজনকে ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে তারা জানান, সকাল ৯টার দিকে তাকে বসতঘরের দরজার ওপর পড়ে থাকতে দেখে।

নিহতের ভাই ইসমাইল ও ইব্রাহিম অভিযোগ করে বলেন, শ্বশুরবাড়ির লোকজন তার বোনের লাশ তড়িঘড়ি করে দাফনের চেষ্টা করে। তাদের বাধার মুখে দাফন করতে পারেনি। এর পর তারা লাশ তার স্বামীর বাড়ি থেকে তাদের কবিরহাট উপজেলার ঘোষবাগ ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিম সোনাদিয়া গ্রামে নিয়ে যান। সেখানে তার শরীরে অনেক আঘাতের চিহ্ন দেখে স্থানীয় চেয়ারম্যান বিষয়টি কোম্পানীগঞ্জ থানাকে অবহিত করেন।

অভিযোগ করে তারা আরও বলেন, নিহত হাজেরার দেবর মিলন, তার স্ত্রী লাকী আক্তার ও তার ছেলে তারেক আমার বোনকে পিটিয়ে হত্যা করেছে। নিহতের শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলেও তারা দাবি করেন। এর আগেও একাধিকবার তারা আমাদের বোনকে মারধর করে। সর্বশেষ ঈদুল আজহার আগেও তাদের বোনকে মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ করেন।

নিহতের স্বামী মাহফুজুল হক মানিক অভিযোগ করে বলেন, এর আগে আমার সঙ্গে একাধিকবার আমার ছোট ভাই মিলনের সঙ্গে জায়গা সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জের ধরে মারামারি হয়। এর পর সে আমার স্ত্রীকে হুমকি দেয় এখানে তাকে থাকতে দেবে না।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে একাধিকবার নিহতের দেবর মিলনের ফোনে কল করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।  

এসআই রাজা আরও জানান, মঙ্গলবার সকালে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন ফেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।

নোয়াখালী গৃহবধূ

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম