১২ দিন পর চিরনিদ্রায় শায়িত শান্তিরক্ষী জাহাঙ্গীর
ডিমলা (নীলফামারী) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৫ অক্টোবর ২০২২, ০২:৫২ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রে বোমা বিস্ফোরণে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে নিয়োজিত নিহত শান্তিরক্ষী জাহাঙ্গীর আলমের মরদেহ শনিবার দুপুর ১২টায় নীলফামারীর ডিমলার দক্ষিণ তিতপাড়া গ্রামে পৌঁছেছে। পরে দক্ষিণ তিতপাড়া জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে গার্ড অব অনার ও জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। দুপুর ১টার দিকে সম্পূর্ণ সামরিক মর্যাদায় পারিবারিক কবরস্থানে এই শহীদের দাফন সম্পন্ন হয়।
এর আগে বেলা ১১টা ১০ মিনিটে ডিমলা রানী বৃন্দারানী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জাহাঙ্গীরের মরদেহ নিয়ে সেনাবাহিনীর একটি হেলিকপ্টার অবতরণ করে।
জাহাঙ্গীরের মরদেহ বহনকারী অ্যাম্বুলেন্স বাড়িতে পৌঁছামাত্র এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। মরদেহ দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন স্বজন ও প্রতিবেশীরা। বিশেষ করে মা গোলেনুর বেগম এবং বাবা লতিফুর রহমান ও স্ত্রী শিমু আকতার মরদেহ দেখে বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন।
নিহত জাহাঙ্গীর আলম ২০২১ সালের নভেম্বর মাসে সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকের দুর্গম এলাকায় একটি অস্থায়ী ক্যাম্পে মোতায়েন ছিলেন। জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশনের কার্যক্রম পরিচালনাকালে ৪ অক্টোবর বাংলাদেশ সময় রাত ১টা ৩৫ মিনিটে বোমার আঘাতে গুরত্বর আহত হন জাহাঙ্গীরসহ তিন সেনা সদস্য।
গুরুত্বর আহত অবস্থায় প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদানের পর উন্নত চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক জাহাঙ্গীরসহ আহত তিন সৈনিককে মৃত ঘোষণা করেন। ১১ দিন পর শুক্রবার রাতে তার লাশ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ঢাকা সদর দপ্তরে এসে পৌছায়। সেখানে তাদের কার্যক্রম শেষে শনিবার সকালে সেনাবাহিনীর একটি হেলিকপ্টারে করে তার গ্রামের বাড়ি ডিমলা উপজেলার ডিমলা আরবিআর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এসে পৌঁছায়।
সেখান থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে তার নিজ বাড়িতে লাশ পৌঁছানোর পরে দক্ষিণ তিতপাড়া গ্রামের ঈদগাহ ময়দানে জানাজা শেষে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। তাকে এক নজর দেখার জন্য লাখো জনতার ঢল নামে এবং এলাকায় হৃদয় বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়। উপস্থিত সবাই কান্নায় ভেঙে পড়েন।
শহীদ সৈনিক জাহাঙ্গীর আলমের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সেনাপ্রধান জেনারেল (সিএএস) এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ, নীলফামারী-১ (ডোমার-ডিমলা) আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আফতাব উদ্দিন সরকার, নীলফামারী জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন, ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন গভীর শোক প্রকাশ করেন। এবং তার শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।
