অবশেষে জাহানারা হত্যার রহস্য উন্মোচন, ছেলে গ্রেফতার
রংপুর ব্যুরো
প্রকাশ: ০১ নভেম্বর ২০২২, ০৪:৪১ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
নীলফামারীর ডিমলা উপজেলায় জাহানারা বেগম (৭০) হত্যা মামলার ৪ বছর পর রহস্য উন্মোচন করেছে রংপুর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এ ঘটনায় ঘাতক ছেলে আব্দুর রহিমকেও গ্রেফতার করা হয়। পরে তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে ২০১৯ সালের ২০ এপ্রিল তার মেয়ে নাজমা বেগম বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
আদালত ও পিবিআই পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালের ১৮ আগস্ট নীলফামারী জেলার ডিমলা উপজেলার রুপাহারা গ্রামের মৃত আতাউর রহমান আতা মিয়ার স্ত্রী জাহানারা বেগমকে ঘরের মেঝেতে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখতে দেখতে পান তার মেয়ে নাজমা বেগম। এরপর তিনি প্রথমে তাকে ডিমলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরবর্তীতে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল রংপুরে ভর্তি করান। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই বছরের ২৪ আগস্ট জাহানারা বেগম মৃত্যুবরণ করেন।
প্রথমে একটি অপমৃত্যু মামলা এবং পরবর্তীকে হত্যা মামলা হয়। ডিমলা থানা পুলিশ তদন্ত করে হত্যার রহস্য উন্মোচন করতে না পারলে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের নির্দেশে মামলাটি পিবিআই রংপুরে হস্তান্তর করা হয়। পিবিআই হেডকোয়ার্টার্সের নির্দেশে পুলিশ পরিদর্শক যতীন্দ্রনাথ শর্মা, পিবিআই রংপুর মামলাটি তদন্ত শুরু করেন।
মামলাটি তদন্তকালে পিবিআই পুলিশ জানাতে পারে, ভরণপোষণ দেওয়ার শর্তে জাহানারা বেগম (৭০) তার নিজ নামীয় ৩৭ শতক জমির মধ্যে ১৭ শতক জমি ছেলে তারা মিয়া এবং ২০ শতক জমি আ. রহিমকে লিখে দেন। কিন্তু আ. রহিম মায়ের কাছ থেকে ভরণপোষণের কথা বলে কৌশলে জমি লিখে নিলেও মাকে ভরণপোষণ দিতেন না। এ নিয়ে মা জাহানারা বেগম ও ছেলে আ. রহিমের মধ্যে প্রায় ঝগড়া লেগে থাকত।
এরই মধ্যে ২০১৮ সালের ১৮ আগস্ট রাতে মা জাহানারা বেগম জানতে পারেন যে, তার দেওয়া ২০ শতক জমি আ. রহিম বিক্রি করবেন। এই নিয়ে মা জাহানারা বেগম তার ছেলে আ. রহিমকে জমি বিক্রি করতে নিষেধ করেন। এ নিয়ে মা ছেলের মধ্যে তর্ক বিতর্ক শুরু হয়। তর্ক বিতর্কের মধ্যে আ. রহিম পাশে থাকা কাঠ দিয়ে জাহানারা বেগমের মাথায় সজোরে আঘাত করেন।
এরপর রক্তাক্ত অবস্থায় তার মেয়ে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। ওই বছরের ২৪ আগস্ট তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এরপর থেকে আ. রহিম পলাতক ছিলেন। অবশেষে হত্যার ৪ বছর পর গত সোমবার তথ্য প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার করে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা যতীন্দ্রনাথ শর্মার নেতৃত্বে পিবিআই রংপুরের একটি দল আসামি আব্দুর রহিমকে গ্রেফতার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আব্দুর রহিম মাকে হত্যার কথা স্বীকার করেন। পরে আব্দুর রহিমকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
পিবিআই রংপুরের পুলিশ সুপার এবিএম জাকির হোসেন বলেন, পিবিআই সত্যকে উদঘাটনে সর্বদা অবিচল। ছেলে কর্তৃক মাকে হত্যার মতো ন্যক্কারজনক ঘটনার সত্য উদঘাটন করতে পেরেছি। দ্রুত পুলিশ প্রতিবেদন আদালতে প্রেরণ করা হবে।
