কিশোরীকে আটকে রেখে গণধর্ষণ, দম্পতিসহ গ্রেফতার ৩
নরসিংদী প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৬ নভেম্বর ২০২২, ০৪:৩৬ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
নরসিংদীর বেলাবতে এক কিশোরীকে (১৫) ঘরে আটকে রেখে গণধর্ষণের অভিযোগে তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় মঙ্গলবার ভুক্তভোগী কিশোরীর বাবা চারজনকে আসামি করে মামলা করেছেন।
পরে আটক তিনজনকে ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে মঙ্গলবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
রোববার বিকালে নরসিংদীর বেলাব উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নের গকুলনগর এলাকার একটি বাড়িতে ওই কিশোরীকে আটকে রেখে গণধর্ষণ করা হয় বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
ভুক্তভোগী কিশোরী রায়পুরা উপজেলার নারায়ণপুর এলাকার একটি কারখানায় কাজ করে। বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করে আলাদা থাকায় ওই কিশোরী মায়ের সঙ্গে থাকে।
ধর্ষণের মামলায় গ্রেফতার তিনজন হলেন- রায়পুরার মুছাপুর ইউনিয়নের পাহাড়কান্দি এলাকার মোহাম্মদ আলী (৪০), জুয়েনা আক্তার ওরফে মায়া সরকার (৩০) ও তার স্বামী খোরশেদ আলম (৩৫)। জুয়েনা-খোরশেদ দম্পতি বেলাব উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নের গকুলনগর এলাকায় ভাড়া থাকেন। অপর আসামি হলেন পাহাড়কান্দি এলাকার মো. সোহরাব হোসেন (৪০)।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ওই কিশোরী ভৈরবে এক বান্ধবীর বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিল। কর্মস্থলে ফেরার জন্য গেল রোববার সকাল ৭টার দিকে তিনি ভৈরব বাসস্ট্যান্ড থেকে একটি বাসে ওঠে। এ সময় বাসের পাশের সিটে বসা জুয়েনার সঙ্গে তার কথা হয়। জুয়েনা তাকে একটি ভালো কাজ দেওয়ার কথা বলে সঙ্গে করে নিয়ে আসেন। সকাল ৮টার দিকে বেলাব উপজেলার গকুলনগরে ওই নারীর বাড়িতে পৌঁছায় তারা।
এরপর কিশোরী ওই বাড়িতেই ছিল। বিকাল ৪টার দিকে বাড়িটির একটি কক্ষে অবস্থানের সময় মোহাম্মদ আলী ও মো. সোহরাব হোসেন ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেন। এ সময় কিশোরী চিৎকার করলেও জুয়েনা ও তার স্বামী খোরশেদ এগিয়ে আসেননি। একপর্যায়ে ওই দুই ব্যক্তি তাকে ধর্ষণ করেন। পরে জুয়েনা ও খোরশেদ এসে কিশোরীকে বিভিন্ন কথাবার্তা বলে সান্ত্বনা দিয়ে বাড়িতেই আটকে রাখেন।
পরদিন সোমবার বেলা ১১টার দিকে ওই বাড়ির সীমানায় এক নারীকে দেখতে পেয়ে ঘটনার বিস্তারিত জানায় ওই কিশোরী। পরে তার মাধ্যমে স্থানীয় কয়েক ব্যক্তি পুলিশে খবর দিলে বাড়িটিতে এসে কিশোরীকে উদ্ধার করেন এবং জুয়েনা ও খোরশেদকে আটক করে।
খবর পেয়ে বেলাব থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে ওই দম্পতিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। তারা ঘটনার কথা স্বীকার করে ধর্ষণে জড়িতদের নাম-পরিচয় জানান। ওই রাতেই কিশোরীর বাবা বেলাব থানায় চারজনকে আসামি করে লিখিত অভিযোগ দেন। রাতেই মোহাম্মদ আলীকে আটক করে নিয়ে আসে পুলিশ।
কিশোরীর বাবা বলেন, একটা ভালো কাজের ব্যবস্থা করে দেবে বলে আমার মেয়েকে আটকে রেখে এ ঘটনা ঘটিয়েছে তারা। আমি তাদের বিচার চাই।
বেলাব থানার ওসি তানভীর আহম্মেদ বলেন, গ্রেফতার তিনজনকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। এরই মধ্যে কিশোরীর ডাক্তারি পরীক্ষাও সম্পন্ন হয়েছে। অপর আসামিকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
