কৃতী শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা দিল সুজানগর উপজেলা প্রশাসন
সুজানগর (পাবনা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৫ জানুয়ারি ২০২৩, ১০:৫০ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
পাবনার সুজানগরে কৃতী শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। বুধবার দুলাই হাইস্কুলে এ সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়। সুজানগর উপজেলা প্রশাসন ও দুলাই হাইস্কুল অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন যৌথভাবে এ সংবর্ধনার আয়োজন করে।
এসএসসি পরীক্ষায় সর্বোচ্চ ১২৮৯ নম্বর পেয়ে রাজশাহী বোর্ডে প্রথম স্থান অর্জনকারী পাবনার সুজানগর উপজেলার দুলাই হাইস্কুলের কৃতী শিক্ষার্থী মো. আশরাফুল আবেদীন আলিফ, উপজেলার মধ্য দ্বিতীয় স্থান অর্জনকারী মো. শাফায়েত খান লিখন ও উপজেলার মধ্য তৃতীয় স্থান অর্জনকারী মনিষা কৈরালা ঘোষকে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. তরিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে সংবর্ধনা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন পাবনা-২ আসনের সংসদ সদস্য আহমেদ ফিরোজ কবির।
বিশেষ অতিথি ছিলেন- উপজেলা চেয়ারম্যান শাহীনুজ্জামান শাহীন, পৌর মেয়র রেজাউল করিম রেজা, থানার ওসি আব্দুল হান্নান, ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম শাহজাহান।
ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক আব্দুল মালেকের (বিএসসি) পরিচালনায় অন্যদের মাঝে বক্তব্য রাখেন- দুলাই উচ্চ বিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ব্যাংক কর্মকর্তা হামিদুর রহমান, আনিসুজ্জামান লিটন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মজিদ, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ গোলাম রসুল, উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার মনোয়ার হোসেন।
স্বাগত বক্তব্য দেন প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) মো. কামাল হোসেন লিটন। কৃতী শিক্ষার্থীর মধ্য বক্তব্য দেয় আশরাফুল আবেদীন আলিফ, শাফায়েত খান লিখন ও মনিষা কৈরালা ঘোষ।
উপস্থিত ছিলেন- উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা নাজমুল হুদা, সরকারি ডা. জহুরুল কামাল কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল লতিফ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সাইদুর রহমান সাইদ, যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক সরদার আব্দুর রউফ, সুজানগর প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এম এ আলিম রিপন, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ফেরদৌস আলম ফিরোজ, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির এলাকা পরিচালক হাবিবুর রহমান বাদশা, ওই বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক-শিক্ষার্থী সহ স্থানীয় বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তিরা।
জীবনে কেবল ভাল রেজাল্ট করাই বড় কথা নয় উল্লেখ করে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পাবনা-২ আসনের সংসদ সদস্য আহমেদ ফিরোজ কবির বলেন, পড়ালেখার মূল উদ্দেশ্য প্রকৃত মানুষ হয়ে ওঠা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমরা স্বাধীন বাংলাদেশ পেয়েছি। এ দেশকে গড়ে তোলার দায়িত্ব আমাদের।
তিনি বলেন, উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের একটি বিদ্যালয়ে পড়ালেখা করেও তোমরা যারা এ কৃতিত্ব অর্জন করেছ অবশ্যই তোমরা মেধাবী। তবে এটাই সব কিছু নয়। শিক্ষার প্রকৃত উদ্দেশ্য হলো মানুষকে ভালোবাসা। মানুষকে জানা। গরিব, অসহায় মানুষের পাশে থাকা। উচ্চ শিক্ষাসম্পন্ন করে তোমরা যে যেখানে থাকবে সেখান থেকেই মানুষের কল্যাণে কাজ করতে হবে। গরিব ও অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহীনুজ্জামান বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস জানা জরুরি উল্লেখ করে বলেন, আমাদের মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের জানতে হবে। সম্মান করতে হবে তাদের। ভালবাসতে হবে দেশ ও দেশের মানুষকে। তোমরা তোমাদের মেধাকে কাজে লাগিয়ে দেশ ও মানুষের কল্যাণে অবদান রাখবে।
সভাপতির বক্তব্যে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. তরিকুল ইসলাম কৃতী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, দেশ যদি উন্নত হয়, সমৃদ্ধ হয় তাহলে তোমাদের সাফল্য, মা-বাবার কষ্ট সফল হবে। তোমরা ভালো রেজাল্ট করে মা-বাবার মুখ যেমন উজ্জ্বল করেছ, তেমনি দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার ক্ষেত্রেও তোমাদের সচেষ্ট থাকতে হবে।
পরে অতিথিরা কৃতী ওই তিন শিক্ষার্থীর হাতে ক্রেস্ট, নগদ অর্থ ও উপহার তুলে দেন। এছাড়া রাজশাহী বোর্ডে প্রথম স্থান অর্জনকারীকে আবুল কাশেম ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে প্রতি মাসে পাঁচ হাজার টাকা করে শিক্ষাবৃত্তি প্রদানের ঘোষণা দেন উপজেলা চেয়ারম্যান।
প্রসঙ্গত, সংবর্ধিত ওই তিন কৃতী শিক্ষার্থী গত ২০২২ সালের এসএসসি পরীক্ষায় ১৩০০ নম্বরের মধ্য ১২৮৯ নম্বর পেয়ে মো. আশরাফুল আবেদীন আলিফ রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের মধ্য প্রথম স্থান, ১২৬৭ নম্বর পেয়ে শাফায়েত খান লিখন উপজেলার মধ্যে দ্বিতীয় এবং মনিষা কৈরালা ঘোষ ১২৬৩ নম্বর পেয়ে উপজেলার মধ্যে তৃতীয় স্থান অর্জন করে। তারা তিনজনই বিজ্ঞান শাখার শিক্ষার্থী এবং তিনজনই উপজেলার দুলাই হাইস্কুল থেকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে।
