বিশ্ব ইজতেমা ও তাবলিগ পরিচালনায় নিরপেক্ষ কমিটি গঠনের দাবি
একটি ধর্মীয় রাজনৈতিক দল সুকৌশলে তাবলিগ জামাতে ঢুকে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি করছে বলে দাবি করেছেন তাবলিগ জামাতের প্রধান কেন্দ্র দিল্লির নিজামুদ্দিন মারকাজের অনুসারীরা।
তাবলিগের সার্বিক কার্যক্রম ও বিশ্ব ইজতেমা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনায় প্রশাসনের সহযোগিতায় নিরপেক্ষ প্রভাবমুক্ত একটি কমিটি গঠনসহ প্রধানমন্ত্রীর কাছে সাত দফা দাবি জানিয়েছেন তারা।
বৃহস্পতিবার উত্তরার একটি রেস্তোরায় বিশ্ব ইজতেমা পরবর্তী এক সংবাদ সম্মেলনে নিজামুদ্দিন মারকাজের প্রধান মাওলানা সাদ কান্ধলভীর অনুসারী তাবলিগের সাথীরা এসব দাবি জানান।
এ সময় লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন অ্যাডভোকেট আব্দুল কুদ্দুস বাদল। এতে উপস্থিত ছিলেন মোহাম্মদ সায়েম, অ্যাডভোকেট ইউনুস মিয়া, মাওলানা সৈয়দ আনোয়ার আব্দুল্লাহ, মোহাম্মদ সোহেল ও মোহাম্মদ আতাউল্লাহ প্রমুখ।
লিখিত বক্তব্যে সাত দফা দাবি তুলে ধরে বক্তারা বলেন, তাবলিগ জামাত বিশ্বব্যাপী দাওয়াতের কাজ করছে। এখানে রাজনীতির কোনো সুযোগ নেই। বর্তমান তাবলিগ জামাতে বিভেদ সৃষ্টির একমাত্র কারণ তৃতীয় একটি পক্ষের রাজনৈতিক অবৈধ হস্তক্ষেপ।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, বিশ্ব ইজতেমার ময়দান নিয়ে তাবলিগ জামাত বাংলাদেশের (মাওলানা সাদ কান্ধলভীর অনুসারী) সঙ্গে বরাবরের মতো বৈরী ও বৈষম্যপূর্ণ আচরণ করা হচ্ছে। ২০১৮ সালে তাবলিগের বিশ্ব মারকাজ দিল্লির নিজামুদ্দিনের অনুসারী মূলধারার তাবলিগের সাথীরা টঙ্গী মাঠকে সরল বিশ্বাসে প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করেছিল। কিন্তু হেফাজত সমর্থিত মাওলানা জুবায়ের গ্রুপকে রহস্যজনকভাবে একতরফা ২০২৩ সাল পর্যন্ত টঙ্গী ময়দান মাদ্রাসা এলাকা, টিনশেড মসজিদ এবং গোডাউন এলাকা ব্যবহার করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। যেখানে মূলধারার তাবলিগ সাথীদের কেবল প্রতি বছর বিশ্ব ইজতেমার জন্য ব্যবহার করতে পাঁচদিনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বিশ্ব ইজতেমার মাঠে বিদ্যমান টিনশেডের পাশে আরেকটি শেড নির্মাণকাজ শুরু করেছেন কে বা কারা।
তারা প্রশ্ন তোলেন এসব কার অনুমতিক্রমে করা হচ্ছে। এ বিষয়ে তাবলিগের মূল ধারার সাথীদের সঙ্গে কোনো পরামর্শ করা হয়নি বলে অভিযোগ করা হয় সংবাদ সম্মেলনে।
মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে প্রশাসন একতরফা বিভাজন করে আসছে দাবি করে সাদ অনুসারীরা বলেন, চার বছর ধরে মাওলানা জুবায়ের গ্রুপকে চার সপ্তাহের জন্য কাকরাইল ব্যবহার করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। আর মূলধারার তাবলিগের সাথীরা মাত্র দুই সপ্তাহের জন্য ব্যবহার করছেন। অথচ এই বিভাজনের কোনো আইনগত এমনকি নৈতিক ভিত্তিও নেই। আমাদের সঙ্গে পরামর্শ না করে এবং হেফাজত সমর্থক এই বিচ্ছিন্ন তাবলিগের গ্রুপের মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে প্রশাসন এই একতরফা বিভাজন করে আসছে।
এ সময় প্রশাসনের কাছে সাতদফা দাবি তুলে ধরা হয়। দাবিগুলো হচ্ছে-
আমাদের অনুরোধ বিশ্ব ইজতেমার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাই মাঠের প্যান্ডেল নির্মাণ ও খোলার কাজ করবেন। প্রয়োজনে প্রশাসনের তদারকিতে উভয় পক্ষ বিশ্ব ইজতেমার ময়দান ব্যবহার করবেন।
কাকরাইল ও বিশ্ব ইজতেমার মাঠ থেকে দুই মাদ্রাসাকে অন্য জায়গায় স্থানান্তর করা, কারণ শুধু তাবলিগের কাজের জন্যই এই মাঠ ও কাকরাইল মসজিদ।
প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমাদের অনুরোধ তাবলিগের সার্বিক কার্যক্রম ও বিশ্ব ইজতেমা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনায় প্রশাসনের সহযোগিতায় নিরপেক্ষ প্রভাবমুক্ত একটি কমিটি গঠন করা।
কাকরাইল মসজিদ আগের মতো দিল্লির নিজামুদ্দিন মারকাজের অধীনে পরিচালনার যাবতীয় ব্যবস্থা করা।
দেশের সব মসজিদে তাবলিগের সব কার্যক্রমের জন্য অনুমতি দেওয়া। ধর্মীয় কাজে বাধা দিলে ও অপপ্রচার চালালে সংবিধান মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া। দেশে স্বাধীনভাবে ধর্মীয় দাওয়াতি কাজ করার পরিবেশ তৈরি করে দেওয়া।
টঙ্গী বিশ্ব ইজতেমায় সব মুরব্বিকে আসার বিষয়ে নিশ্চয়তা প্রদান এবং বাংলাদেশের ধর্মীয় সম্প্রীতি অক্ষুণ্ন রাখতে ও দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে তাবলিগের যাবতীয় কাজ পরিচালনায় হেফাজতসহ তৃতীয় পক্ষের রাজনীতিক অবৈধ হস্তক্ষেপ বন্ধ করা। যাতে করে ইসলামের নামে কোনো পক্ষ সাধারণ ধর্মপ্রাণ মুসলমানকে তাবলিগের নামে কেউ ভুল বুঝিয়ে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে না পারে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, কয়েক বছর ধরে তাবলিগের বিভক্তির শুরু থেকে হেফাজত নেতারা সরাসরি হস্তক্ষেপ ও মাদ্রাসাছাত্রদের ব্যবহার করে তাবলিগের মূল ধারার সাথিদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে এবং তাদের ওপর হামলা চালাচ্ছে।
নানাভাবে সারা দেশে সাদপন্থী মূল ধারার তাবলিগ অনুসারীদের ওপর নির্যাতন করা হচ্ছে বলে দাবি করা হয় সংবাদ সম্মেলনে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ইজতেমা আয়োজক কমিটির গণমাধ্যম সমন্বয়ের দায়িত্ব থাকা মোহাম্মদ সায়েম, ইজতেমা আয়োজক কমিটির মুরব্বি (সাদপন্থী) ইউনুস মিয়া, মাওলানা সৈয়দ আনোয়ার আব্দুল্লাহ, সোহেল ও আতাউল্লাহ।
বিশ্ব ইজতেমা ও তাবলিগ পরিচালনায় নিরপেক্ষ কমিটি গঠনের দাবি
টঙ্গী পশ্চিম (গাজীপুর) প্রতিনিধি
০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ২২:৫৬:৩৬ | অনলাইন সংস্করণ
একটি ধর্মীয় রাজনৈতিক দল সুকৌশলে তাবলিগ জামাতে ঢুকে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি করছে বলে দাবি করেছেন তাবলিগ জামাতের প্রধান কেন্দ্র দিল্লির নিজামুদ্দিন মারকাজের অনুসারীরা।
তাবলিগের সার্বিক কার্যক্রম ও বিশ্ব ইজতেমা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনায় প্রশাসনের সহযোগিতায় নিরপেক্ষ প্রভাবমুক্ত একটি কমিটি গঠনসহ প্রধানমন্ত্রীর কাছে সাত দফা দাবি জানিয়েছেন তারা।
বৃহস্পতিবার উত্তরার একটি রেস্তোরায় বিশ্ব ইজতেমা পরবর্তী এক সংবাদ সম্মেলনে নিজামুদ্দিন মারকাজের প্রধান মাওলানা সাদ কান্ধলভীর অনুসারী তাবলিগের সাথীরা এসব দাবি জানান।
এ সময় লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন অ্যাডভোকেট আব্দুল কুদ্দুস বাদল। এতে উপস্থিত ছিলেন মোহাম্মদ সায়েম, অ্যাডভোকেট ইউনুস মিয়া, মাওলানা সৈয়দ আনোয়ার আব্দুল্লাহ, মোহাম্মদ সোহেল ও মোহাম্মদ আতাউল্লাহ প্রমুখ।
লিখিত বক্তব্যে সাত দফা দাবি তুলে ধরে বক্তারা বলেন, তাবলিগ জামাত বিশ্বব্যাপী দাওয়াতের কাজ করছে। এখানে রাজনীতির কোনো সুযোগ নেই। বর্তমান তাবলিগ জামাতে বিভেদ সৃষ্টির একমাত্র কারণ তৃতীয় একটি পক্ষের রাজনৈতিক অবৈধ হস্তক্ষেপ।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, বিশ্ব ইজতেমার ময়দান নিয়ে তাবলিগ জামাত বাংলাদেশের (মাওলানা সাদ কান্ধলভীর অনুসারী) সঙ্গে বরাবরের মতো বৈরী ও বৈষম্যপূর্ণ আচরণ করা হচ্ছে। ২০১৮ সালে তাবলিগের বিশ্ব মারকাজ দিল্লির নিজামুদ্দিনের অনুসারী মূলধারার তাবলিগের সাথীরা টঙ্গী মাঠকে সরল বিশ্বাসে প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করেছিল। কিন্তু হেফাজত সমর্থিত মাওলানা জুবায়ের গ্রুপকে রহস্যজনকভাবে একতরফা ২০২৩ সাল পর্যন্ত টঙ্গী ময়দান মাদ্রাসা এলাকা, টিনশেড মসজিদ এবং গোডাউন এলাকা ব্যবহার করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। যেখানে মূলধারার তাবলিগ সাথীদের কেবল প্রতি বছর বিশ্ব ইজতেমার জন্য ব্যবহার করতে পাঁচদিনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বিশ্ব ইজতেমার মাঠে বিদ্যমান টিনশেডের পাশে আরেকটি শেড নির্মাণকাজ শুরু করেছেন কে বা কারা।
তারা প্রশ্ন তোলেন এসব কার অনুমতিক্রমে করা হচ্ছে। এ বিষয়ে তাবলিগের মূল ধারার সাথীদের সঙ্গে কোনো পরামর্শ করা হয়নি বলে অভিযোগ করা হয় সংবাদ সম্মেলনে।
মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে প্রশাসন একতরফা বিভাজন করে আসছে দাবি করে সাদ অনুসারীরা বলেন, চার বছর ধরে মাওলানা জুবায়ের গ্রুপকে চার সপ্তাহের জন্য কাকরাইল ব্যবহার করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। আর মূলধারার তাবলিগের সাথীরা মাত্র দুই সপ্তাহের জন্য ব্যবহার করছেন। অথচ এই বিভাজনের কোনো আইনগত এমনকি নৈতিক ভিত্তিও নেই। আমাদের সঙ্গে পরামর্শ না করে এবং হেফাজত সমর্থক এই বিচ্ছিন্ন তাবলিগের গ্রুপের মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে প্রশাসন এই একতরফা বিভাজন করে আসছে।
এ সময় প্রশাসনের কাছে সাতদফা দাবি তুলে ধরা হয়। দাবিগুলো হচ্ছে-
আমাদের অনুরোধ বিশ্ব ইজতেমার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাই মাঠের প্যান্ডেল নির্মাণ ও খোলার কাজ করবেন। প্রয়োজনে প্রশাসনের তদারকিতে উভয় পক্ষ বিশ্ব ইজতেমার ময়দান ব্যবহার করবেন।
কাকরাইল ও বিশ্ব ইজতেমার মাঠ থেকে দুই মাদ্রাসাকে অন্য জায়গায় স্থানান্তর করা, কারণ শুধু তাবলিগের কাজের জন্যই এই মাঠ ও কাকরাইল মসজিদ।
প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমাদের অনুরোধ তাবলিগের সার্বিক কার্যক্রম ও বিশ্ব ইজতেমা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনায় প্রশাসনের সহযোগিতায় নিরপেক্ষ প্রভাবমুক্ত একটি কমিটি গঠন করা।
কাকরাইল মসজিদ আগের মতো দিল্লির নিজামুদ্দিন মারকাজের অধীনে পরিচালনার যাবতীয় ব্যবস্থা করা।
দেশের সব মসজিদে তাবলিগের সব কার্যক্রমের জন্য অনুমতি দেওয়া। ধর্মীয় কাজে বাধা দিলে ও অপপ্রচার চালালে সংবিধান মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া। দেশে স্বাধীনভাবে ধর্মীয় দাওয়াতি কাজ করার পরিবেশ তৈরি করে দেওয়া।
টঙ্গী বিশ্ব ইজতেমায় সব মুরব্বিকে আসার বিষয়ে নিশ্চয়তা প্রদান এবং বাংলাদেশের ধর্মীয় সম্প্রীতি অক্ষুণ্ন রাখতে ও দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে তাবলিগের যাবতীয় কাজ পরিচালনায় হেফাজতসহ তৃতীয় পক্ষের রাজনীতিক অবৈধ হস্তক্ষেপ বন্ধ করা। যাতে করে ইসলামের নামে কোনো পক্ষ সাধারণ ধর্মপ্রাণ মুসলমানকে তাবলিগের নামে কেউ ভুল বুঝিয়ে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে না পারে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, কয়েক বছর ধরে তাবলিগের বিভক্তির শুরু থেকে হেফাজত নেতারা সরাসরি হস্তক্ষেপ ও মাদ্রাসাছাত্রদের ব্যবহার করে তাবলিগের মূল ধারার সাথিদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে এবং তাদের ওপর হামলা চালাচ্ছে।
নানাভাবে সারা দেশে সাদপন্থী মূল ধারার তাবলিগ অনুসারীদের ওপর নির্যাতন করা হচ্ছে বলে দাবি করা হয় সংবাদ সম্মেলনে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ইজতেমা আয়োজক কমিটির গণমাধ্যম সমন্বয়ের দায়িত্ব থাকা মোহাম্মদ সায়েম, ইজতেমা আয়োজক কমিটির মুরব্বি (সাদপন্থী) ইউনুস মিয়া, মাওলানা সৈয়দ আনোয়ার আব্দুল্লাহ, সোহেল ও আতাউল্লাহ।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by The Daily Jugantor © 2023