স্ত্রী-ছেলেসহ বগুড়া শ্রমিক লীগের সম্পাদকের বিরুদ্ধে মামলা
বগুড়া ব্যুরো
প্রকাশ: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১০:১৬ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
বগুড়ায় জ্ঞাত-আয়বহির্ভূত প্রায় ১৫ কোটি টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগে স্ত্রী ও ছেলেসহ জেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক, শ্রমিক নেতা সামছুদ্দিন শেখ হেলালের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। সম্পদ বিবরণীতে দেড় কোটির অধিক টাকার মিথ্যা ও ভিত্তিহীন ঘোষণা এবং দ্বিতীয় স্ত্রী আবে জমজম নাজীর নামে এক কোটির অধিক টাকার স্থাবর সম্পত্তি হস্তান্তরের অভিযোগ আনা হয়েছে।
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বগুড়া কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. মনিরুজ্জামান রোববার এ মামলা করেন।
অন্য আসামিরা হলেন- সামছুদ্দিন শেখ হেলালের প্রথম স্ত্রী হেলেনা পারভীন ও ছেলে হোসাইন হাবীব।
অভিযোগ প্রসঙ্গে জেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সামছুদ্দিন শেখ হেলাল বলেন, তিনি নিয়মিত আয়কর পরিশোধ করে থাকেন। স্ত্রী ও ছেলেসহ তার বিরুদ্ধে দুদকের মামলা সঠিক নয়। তিনি মামলাগুলো আইনগতভাবে মোকাবেলা করবেন বলে জানিয়েছেন।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে- বগুড়া মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সামছুদ্দিন শেখ হেলাল, তার স্ত্রী হেলেনা পারভীন ও ছেলে হোসাইন হাবীবের কাছে স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের হিসাব বিবরণী দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে তারা গত ২০২১ সালের ২৫ মে দুদক বগুড়া জেলা কার্যালয়ে সম্পদ বিবরণী দাখিল করেন।
তদন্ত ও অনুসন্ধানে জানা যায়, সামছুদ্দিন শেখ হেলাল তার সম্পদ বিবরণীতে ৫৮ লাখ ৪২ হাজার ৮৪ টাকার মিথ্যা ও ভিত্তিহীন ঘোষণা প্রদানসহ ৯ কোটি ৭২ লাখ ৪০ হাজার ৯২৬ টাকা ৩৪ পয়সার জ্ঞাত-আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেন। এছাড়া তিনি দ্বিতীয় স্ত্রী আবে জমজম নাজীর কাছে এক কোটি দুই লাখ ৫৯ হাজার ৩৫৭ টাকার স্থাবর সম্পত্তি হস্তান্তর করার অপরাধ করেছেন। তাই তার বিরুদ্ধে রোববার দুদক জেলা কার্যালয়ে মামলা করা হয়েছে।
তার স্ত্রী হেলেনা পারভীন সম্পদ বিবরণীতে ১৬ লাখ ৯৪ হাজার ১৮৯ টাকার মিথ্যা ও ভিত্তিহীন ঘোষণা প্রদানসহ দুই কোটি ৪১ লাখ ২৩ হাজার ৯৮৩ টাকা ৪১ পয়সার জ্ঞাত-আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন। এছাড়া তিনি স্বামী, ছেলে ও মেয়ের নামে এক কোটি ৭২ লাখ ১২ হাজার ৪৩৯ টাকার স্থাবর সম্পত্তি হস্তান্তর করার অপরাধ করেছেন। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইনে মামলা করা হয়েছে।
এছাড়া তার ছেলে হোসাইন হাবীব নিজের সম্পদ বিবরণীতে ৭৭ লাখ ৮০ হাজার ৬২২ টাকার মিথ্যা ও ভিত্তিহীন ঘোষণা প্রদানসহ দুই কোটি ৮০ লাখ পাঁচ হাজার ৩৪৯ টাকার জ্ঞাত-আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অপরাধ করেছেন। তাই তার বিরুদ্ধে দুদক আইনে, মামলা করা হয়।
তিনটি মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে- সামছুদ্দিন শেখ হেলাল, স্ত্রী রেহেনা পারভীন ও ছেলে হোসাইন হাবীব সম্পদ বিবরণীতে এক কোটি ৫৩ লাখ ১৬ হাজার ৮৯৫ টাকার মিথ্যা ও ভিত্তিহীন ঘোষণা দেন। তারা মোট ১৪ কোটি ৯৩ লাখ ৭০ হাজার ২৫৮ টাকা ৭৫ পয়সার জ্ঞাত-আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন। হেলাল দ্বিতীয় স্ত্রী আবে জমজম নাজীকে এক কোটি দুই লাখ ৫৯ হাজার ৩৫৭ টাকার স্থাবর সম্পত্তি হস্তান্তর করেছেন। রেহেনা পারভীন তার স্বামী, ছেলে ও মেয়েকে এক কোটি ৭২ লাখ ১২ হাজার ৪৩৯ টাকার স্থাবর সম্পত্তি হস্তান্তর করেছেন।
মামলার বাদী দুদক বগুড়া জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. মনিরুজ্জামান জানান, মামলাগুলো তদন্তে শিগগিরই কর্মকর্তা নিয়োগ করা হবে।
