বেনাপোলে দুই বাংলার ভাষাপ্রেমীদের মিলনমেলা
বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৯:৩১ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে বেনাপোলের নোম্যান্সল্যান্ডে দুই বাংলার হাজার হাজার ভাষাপ্রেমীর মিলনমেলা বসেছিল। ভৌগলিক সীমারেখা ভুলে কেবলমাত্র ভাষার টানে দুই বাংলার মানুষ একই মঞ্চে তুলে ধরেন বাংলা ভাষার জয়গান।
বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট নোম্যান্সল্যান্ডে মঙ্গলবার সকালে এভাবেই কাটালেন দুই বাংলার বাংলা ভাষাপ্রেমী মানুষ।
আমরা বাংলা ভাষায় কথা বলি বলে বাংলাদেশের মানুষের জন্য আমাদের প্রাণ কাঁদে। তাই তো বারবার ছুটে আসি দুই দেশের বাঙালি বাংলাভাষী মানুষের পাশে। ভাষা দিবস মিলিয়ে দিল ‘এপার-ওপার’।
ভাষার টানে শহিদদের প্রতি সম্মিলিত শ্রদ্ধা জানায় ভারত-বাংলাদেশ। ফুলে ফুলে ভরে যায় সীমান্তের নোম্যান্সল্যান্ডে নির্মিত অস্থায়ী শহিদ বেদী।
বেনাপোল চেকপোস্ট নোম্যান্সল্যান্ডে মঙ্গলবার সকাল ১০টায় স্থাপিত অস্থায়ী শহিদ মিনারে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের মধ্য দিয়ে প্রতিবছরের মতো এবারো ভাষা শহিদদের স্মৃতির প্রতি সম্মান জানানো হয়। মিষ্টি বিতরণ, আলোচনা আর গানে গানে মাতোয়ারা হয় দুই বাংলার আকাশ-বাতাস। উভয় দেশের জনপ্রতিনিধিরা বলেন সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির কথা।
এ অনুষ্ঠানকে ঘিরে জড়ো হয়েছিল হাজার হাজার ভাষাপ্রেমী মানুষ। উভয় দেশের বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেয় এ অনুষ্ঠানে।
দুই দেশের জাতীয় পতাকা, নানা রংয়ের ফেস্টুন, ব্যানার, প্ল্যাকার্ড, আর ফুল দিয়ে বর্ণিল সাজে সাজানো হয় নোম্যান্সল্যান্ড এলাকা। দুই বাংলার মানুষের এ মিলনমেলায় উভয় দেশের সীমান্তবর্তী বাসিন্দাদের মধ্যে উৎসাহের আমেজ সৃষ্টি হয়।
প্রতিবছরই দুই বাংলার সীমান্তবর্তী এ অংশের বাসিন্দারা এক সঙ্গে মিলিত হয়ে দিবসটি পালন করেন। তখন দুই দেশের সীমান্তের মধ্যবর্তী ওই স্থানে এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। একে অপরকে আলিঙ্গন করে সব ভেদাভেদ যেন ভুলে যায় কিছু সময়ের জন্য।
ফুলের মালা, মিষ্টি ও ফুল বিনিময় করে উভয় দেশের আবেগপ্রবণ অনেক মানুষ একজন অপরজনকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেলেন।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস, বিধায়ক শ্রীমতি বীনা মণ্ডল, বিধায়ক শ্রী বিশ্বজিত দাস, বনগাঁও পৌর চেয়ারম্যান শ্রী গোপাল শেড, সাবেক এমপি মমতা ঠাকুরের নেতৃত্বে ভারত থেকে আসা হাজার হাজার বাংলাভাষী মানুষ বাংলাদেশিদের ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে ও মিষ্টি দিয়ে বরণ করে নেয় একে অপরকে। নোমান্সল্যান্ডে অস্থায়ী শহিদ বেদীতে প্রথম ফুল দিয়ে শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান উভয় দেশের জনপ্রতিনিধিসহ সরকারি কর্মকর্তারা।
বাংলাদেশের স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের খাদ্য ও সরবরাহমন্ত্রী শ্রী জ্যোতি প্রিয় মল্লিকসহ বিশেষ অতিথি যশোর-১ আসনের সংসদ সদস্য শেখ আফিল উদ্দিন, ৪৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের কমান্ডিং অফিসার লে. কর্নেল আহমেদ হাসান জামিল, ২১ উদযাপন কমিটির সভাপতি উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল হক মঞ্জু ও সচিব শার্শা উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ ইব্রাহিম খলিল এ মিলনমেলায় উপস্থিত ছিলেন। ভারতের পক্ষে বিশেষ অতিথি বনগাঁও পৌর সভার মেয়র শ্রী শংকর, উত্তর ২৪ পরগনা জেলার মেন্টর গোপাল শেডসহ অনুষ্ঠানে উভয় দেশের বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো এতে অংশ নেয়। এছাড়া ভারতীয় আমদানি রপ্তানিকারক সমিতির নেতারাও এ মিলনমেলায় উপস্থিত ছিলেন।
