শহিদ মিনারে শ্রদ্ধা জানানো নিয়ে ওসির অসৌজন্য আচরণের অভিযোগ
জয়পুরহাট ও ক্ষেতলাল প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১০:৪৮ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
শহিদ মিনারে আগে পিছে ফুল দেওয়া নিয়ে নাখোশ জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজিবুল ইসলামের বিরুদ্ধে শহিদ দিবসের অনুষ্ঠানে অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগ উঠেছে। তার অসহযোগিতায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন একুশের প্রথম প্রহরে ভাষা শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে শহিদ মিনারে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করতে আসা উপজেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন মহলের নেতারা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সোমবার রাত ১২টা ১মিনিটে একুশের প্রথম প্রহরে জেলার ক্ষেতলাল উপজেলা প্রশাসনের শহিদ মিনারে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের মাধ্যমে (ফুল দিয়ে) শ্রদ্ধা নিবেদন করতে আসেন উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ (ইউএনও) বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা।
সেখানে শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনে প্রস্তুতিমূলক সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শহিদ মিনারে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের (ফুল দেওয়ার জন্য) শুরুতেই উপজেলা প্রশাসনের নাম ঘোষণা করা হয়। এরপর উপজেলা পরিষদ, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, উপজেলা আওয়ামী লীগ এবং ক্ষেতলাল থানার নাম ঘোষণা করা হয়।
কিন্তু পাঁচ নম্বর সিরিয়ালে থানা প্রশাসনের নাম ঘোষণা হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন ওসি রাজিবুল ইসলাম। তিনি দ্বিতীয় সিরিয়ালে নাম ঘোষণার দাবি জানান। কিন্তু তার দাবি পূরণ না হওয়ায় সবার শেষে শহিদ মিনারে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে তিনি অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার আগেই শহিদ মিনার প্রাঙ্গণ ত্যাগ করেন।
ওসির এমন অসৌজন্যমূলক আচরণে ক্ষেতলাল উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ ওই উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ, মুক্তিযোদ্ধাসহ উপস্থিত সবাই ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
ক্ষেতলাল উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোফাজ্জল হোসেন বলেন, মহান শহিদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের অনুষ্ঠানে আমরা সবাই উপস্থিত ছিলাম। সেখানে শহিদ মিনারে ফুল দেওয়ার সিরিয়াল নিয়ে ওসির এমন আচরণ খুবই দুঃখজনক।
ক্ষেতলাল উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ারুজ্জামান তালুকদার নাদিম বলেন, মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সভাপতিত্বে ১৬ ফেব্রুয়ারি এক প্রস্তুতিমূলক সভা হয়। সেখানে সবার মতামতের ভিত্তিতে নেওয়া সিদ্ধান্তে শহিদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণে বিভিন্ন দপ্তরের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু ওসি সাহেব সেটা মানেন না। তিনি দুই নম্বর সিরিয়ালে ফুল দেওয়ার দাবি জানান। তার দাবি উপেক্ষিত হওয়ায় শহিদ মিনারে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ শেষ হওয়ার আগেই তিনি অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করে ধৃষ্টতা দেখিয়েছেন। জাতীয় একটি অনুষ্ঠানে দায়িত্বশীল একজন সরকারি কর্মকর্তার এমন আচরণ কখনো কাম্য নয়।
এ বিষয়ে ক্ষেতলাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজিবুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, জেলা এবং অন্যান্য উপজেলায় শহিদ মিনারে প্রশাসনের পর থানা প্রশাসন পুষ্পস্তবক অর্পণ করে। কিন্তু এখানে ভিন্ন। এটা ঠিক নয়। যাই হোক, আমি তো শহিদ মিনারে ফুল দিয়েছি। ব্যস্ততার কারণে অনুষ্ঠানের শেষে শুধু মোনাজাতে অংশ নিইনি।
