সহপাঠীদের সঙ্গে ঘুরতে গিয়ে সেতু থেকে নদীতে পড়ে ছাত্রীর মৃত্যু
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০২ মার্চ ২০২৩, ০৯:১৭ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
সুনামগঞ্জ শহরের অদূরে সেতু থেকে সুরমা নদীতে পড়ে এক স্কুলছাত্রীর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে মডেল টেস্ট পরীক্ষা দিয়ে সহপাঠীদের সঙ্গে আব্দুজ জহুর সেতু এলাকায় ঘুরতে গেলে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত স্কুলছাত্রী জেসমিন আক্তার তানজিম (১৬) শহরের ষোলঘর এলাকার রুহানুর রহমান রোহানের মেয়ে। সে সরকারি সতীশ চন্দ্র বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী। ওই বিদ্যালয় থেকে এ বছর সে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার কথা ছিল।
তবে কী কারণে এ ঘটনা ঘটেছে তা নিয়ে নানা কথা শোনা যাচ্ছে। এ নিয়ে এক ধরনের রহস্য দানা বেঁধেছে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা ঘটনাটিকে আত্মহত্যা বলে দাবি করলেও মেয়েটির স্বজনরা বলছেন অসাবধানতায় নদীতে পড়ে মেয়েটির মৃত্যু হয়েছে। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে টিকটক ভিডিও ও সেলফি তুলতে গিয়ে তার মৃত্যু হয়েছে বলে খবর রটলেও এর কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি।
জানা যায়, জেসমিন আক্তার তানজিম শহরের সরকারি সতীশ চন্দ্র বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ২০২৩ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিল। বৃহস্পতিবার সকালে সাড়ে ১০টার দিকে বিদ্যালয়ে থেকে মডেল টেস্ট পরীক্ষা দিয়ে সহপাঠীদের সঙ্গে শহরের অদূরে আব্দুজ জহুর সেতু এলাকায় ঘুরতে যায়। এক সময় সে সেতুর স্টিলের রেলিংয়ে উঠতে গেলে সেখান থেকে নিচে সুরমা নদীতে পড়ে তলিয়ে যায়। নিখোঁজ তানজিমকে উদ্ধারে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল ও স্থানীয়রা দুই ঘণ্টা অভিযান চালিয়ে একপর্যায়ে তার মৃতদেহ উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।
তানজিমের সহপাঠী ইমা আক্তার বলেন, আমি আর তানজিম খুব ভালো বন্ধু। আমি আর সে পরীক্ষা দিয়ে আব্দুজ জহুর সেতুতে বেড়াতে যাই। সেতু থেকে ফেরার পথে সে আমার থেকে কিছুটা পেছনে পড়ে যায়। এ সময় সে সেতুর রেলিংয়ে উঠার চেষ্টা করে। আমি একটু এগোতেই আচমকা সে রেলিং থেকে নিচে সুরমা নদীতে পড়ে যায়। এ সময় আমি চোখে ঝাপসা দেখছিলাম। এর বাইরে আর কিছুই বলতে পারি না।
প্রত্যক্ষদর্শী একাধিক ব্যক্তি জানান, মেয়েটি নদীতে ঝাঁপ দিয়েছে। সে কোনো ভিডিও করেনি বা ছবি তোলারও চেষ্টা করেনি। এটি আত্মহত্যা হতে পারে বলে জানান তারা।
এদিকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান মেয়েটির দ্বিতীয় পক্ষের পিতা মতি মিয়া। তিনি বলেন, সে আমার মেয়ে। তার মায়ের সন্তানসহ আমার সঙ্গে দ্বিতীয় বিয়ে হয়। সে আমার সঙ্গে শহরের তেঘরিয়ার বাসায় বসবাস করছিল। সে এবার সরকারি সতীশ চন্দ্র বালিকা বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিল।
তিনি বলেন, এমন একটি মেয়ে আত্মহত্যা করার কথা না। অসাবধানতায় পড়ে এমন ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করছেন তিনি।
এদিকে প্রাথমিকভাবে ঘটনাটিকে আত্মহত্যা হিসেবে দেখছে পুলিশ। সুরতহাল রিপোর্ট শেষে ময়নাতদন্তের জন্য স্কুলছাত্রীর মরদেহ সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে সদর থানা পুলিশ।
সদর থানার ওসি ইখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী যুগান্তরকে বলেন, সহপাঠী ও এলাকাবাসীর কথা থেকে প্রাথমিকভাবে এটিকে আত্মহত্যা বলেই মনে হচ্ছে। পারিবারিক অশান্তির কারণে এটি হয়ে থাকতে পারে। তবে তদন্ত না করে এ ব্যাপারে কিছু বলা যাচ্ছে না। বিষয়টা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
